ফাইল চিত্র।
কলকাতা পুরসভার স্বাস্থ্য কেন্দ্রগুলি থেকে বিভিন্ন ওষুধ নিয়মিত মিলছে না। বাইরে থেকে ওষুধ কিনে হয়রান হতে হচ্ছে নাগরিকদের। সম্প্রতি এমনই অভিযোগ নিয়ে বরো কমিটির বৈঠকগুলিতে একাধিক বার আলোচনা হয়েছে। কিন্তু সমাধানসূত্র এখনও বেরোয়নি বলেই খবর।
পুরসভা জানিয়েছে, ২১ জুন ১৪ নম্বর বরো কমিটির বৈঠকে ১২১ নম্বর ওয়ার্ডের কাউন্সিলর রূপক গঙ্গোপাধ্যায় অভিযোগ করেন, তাঁর ওয়ার্ডের স্বাস্থ্য কেন্দ্রে রক্তচাপ, সুগার, থাইরয়েড, ইউরিক অ্যাসিডের মতো একাধিক রোগের ওষুধ না মেলায় সমস্যায় পড়ছেন বাসিন্দারা। সংশ্লিষ্ট বরো কমিটির চেয়ারপার্সন সংহিতা দাস বলেন, ‘‘ওই কাউন্সিলরের অভিযোগ বরো এগ্জিকিউটিভ হেল্থ অফিসারকে জানানো হয়েছে।’’
১৫ নম্বর বরোর চেয়ারম্যান রণজিৎ শীলও মানছেন, সম্প্রতি বরো কমিটির বৈঠকে বিভিন্ন ওয়ার্ডের স্বাস্থ্য কেন্দ্রে ওষুধ সরবরাহের সমস্যা নিয়ে আলোচনা হয়েছে। তাঁর দাবি, ‘‘ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষকে সব জানিয়েছি। তবে আগের তুলনায় এই সমস্যা একটু কমেছে।’’ মেটিয়াবুরুজ এলাকার এক তৃণমূল কাউন্সিলরেরও অভিযোগ, ‘‘ওয়ার্ডের স্বাস্থ্য কেন্দ্রে বেশির ভাগ সময়েই ওষুধ পাওয়া যায় না। এ নিয়ে মানুষ অভিযোগ জানাচ্ছেন। পুর স্বাস্থ্য দফতর বলছে, রাজ্য স্বাস্থ্য দফতর থেকে ওষুধ আসছে না।’’
শুধু ওই দুই বরো এলাকাই নয়, শহরের বেশির ভাগ ওয়ার্ডের স্বাস্থ্য কেন্দ্রেই যে নিয়মিত ওষুধ সরবরাহ হচ্ছে না, তা মানছে খোদ পুর স্বাস্থ্য দফতর। ওষুধের অপ্রতুলতার প্রসঙ্গটি পুর অধিবেশনে তুলেছিলেন ৯২ নম্বর ওয়ার্ডের সিপিআই কাউন্সিলর মধুছন্দা দেবও। তাঁর কথায়, ‘‘আমার ওয়ার্ডের স্বাস্থ্য কেন্দ্রে সমস্যা আরও বেশি।’’ ৪৫ নম্বর ওয়ার্ডের কংগ্রেস কাউন্সিলর সন্তোষ পাঠকের অভিযোগ, ‘‘অবস্থা এমন যে, সুগার, প্রেশার, জ্বরের মতো সাধারণ অসুখের ওষুধই অমিল।’’ ৫০ নম্বর ওয়ার্ডের বিজেপিকাউন্সিলর সজল ঘোষের অভিযোগ, ‘‘আমার ওয়ার্ডের স্বাস্থ্য কেন্দ্রে মাথা ঘোরা, অম্বল, ডায়রিয়া,সুগার, চুলকানি, হাঁপানির মতো সাধারণ রোগের ওষুধ আগে পাওয়া যেত। এখন এগুলোর কিছুই মিলছে না।’’
মধ্য কলকাতার একটি পুর স্বাস্থ্য কেন্দ্রের এক চিকিৎসকের কথায়, ‘‘সুগার, প্রেশারের মতো কিছু রোগের ওষুধের সরবরাহ বন্ধ হয়ে গিয়েছে।ইনসুলিন, জ্বরের ওষুধও আগের মতো আসছে না। এটা শহরের সব স্বাস্থ্যকেন্দ্রেরই সমস্যা।’’ পুরসভার মুখ্য স্বাস্থ্য আধিকারিক সুব্রত রায়চৌধুরী বৃহস্পতিবার বলেন, ‘‘যে সব ওষুধ রাজ্য সরকারের সিস্টেমে পাওয়া যাচ্ছে, সেগুলিইদেওয়া হচ্ছে।’’
রাজ্যের স্বাস্থ্য অধিকর্তা সিদ্ধার্থ নিয়োগী বলেন, ‘‘কিছু দামি ওষুধ পুরসভার স্বাস্থ্য কেন্দ্র থেকে বিনামূল্যে আরদেওয়া হবে না। সরকারের সীমিত অর্থে যাতে বেশি সংখ্যক মানুষের কাছে পরিষেবা পৌঁছয়, তাই এই সিদ্ধান্ত। স্বাস্থ্য কেন্দ্রগুলির জন্য ওষুধের নতুন তালিকাতৈরি হচ্ছে। তার পরে দরপত্র ডেকে ওষুধের জোগান স্বাভাবিক হতে মাস দেড়েক মতো সময় লাগবে।’’
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, Twitter এবং Instagram পেজ।