—প্রতীকী চিত্র।
বাড়িতে পুরসভার সরবরাহ করা জল কল থেকে পড়ছে সরু ফিতের মতো। অনেক সময়ে সেটুকুও পাচ্ছেন না বাসিন্দারা। কোথাও কোথাও বাসিন্দাদের রাস্তার কল থেকে জল আনতে হচ্ছে অথবা জল কিনে প্রয়োজন মেটাতে হচ্ছে। দক্ষিণ দমদম পুরসভার ১ থেকে ১৭ নম্বর ওয়ার্ডে কয়েক সপ্তাহ ধরে এই সমস্যা চলছে বলে অভিযোগ বাসিন্দাদের।
সমস্যার কথা কার্যত মেনে নিলেও বাসিন্দাদের অভিযোগ পুরোপুরি মানতে নারাজ পুর কর্তৃপক্ষ। কামারহাটি থেকে সরবরাহ করা জলের জোগান কমলেও ঘাটতিটুকু পুরসভা মেটানোর চেষ্টা করছে বলে দাবি। তবে জলসঙ্কট রয়েছে, এ কথা মানতে নারাজ তাঁরা। পুর কর্তৃপক্ষের আরও দাবি, ইতিমধ্যেই কেএমডিএ-র সঙ্গে কথা হয়েছে। সেই মতো কাজ চলছে। তাই পরিস্থিতি পুরো স্বাভাবিক হতে মাসখানেক লাগতে পারে বলে মনে করছে পুরসভা। বাসিন্দাদের সমস্যা যাতে না হয়, তার জন্য প্রয়োজনীয় জলের জোগান দেওয়ার চেষ্টা চলছে বলেও জানিয়েছে পুরসভা। এ ছাড়া, বাঙুর জল প্রকল্প হওয়ায় ১০টি ওয়ার্ডে জলের সমস্যা মিটেছে। সেই জল বাকি ওয়ার্ডগুলিতে সরবরাহ করতে পরিকাঠামো তৈরির কাজ চলছে। পুরসভার দাবি, সেই কাজ শেষ হলে বাকি ওয়ার্ডেও সমস্যা দ্রুত মিটবে।পুরসভা সূত্রের আরও দাবি, প্রমোদনগরে ওভারহেড রিজ়ার্ভার তৈরির কাজ চলছে। সেই কাজ শেষ হলেও জলের জোগান বাড়বে।
যদিও বাসিন্দাদের অভিযোগ, এখনও দাবি অনুযায়ী পুরসভার তৎপরতা চোখে পড়ছে না। ফেব্রুয়ারি মাসেই যদি এই অবস্থা হয়, তা হলে গরমে কী হবে? আশঙ্কায় রয়েছেন তাঁরা। তাঁদের অভিযোগ, স্থানীয় স্তরে কিছুই জানা যায় না। আদতে কী সমস্যা হচ্ছে, কত দিনে সমাধান হবে, সে বিষয়ে বাসিন্দাদের স্পষ্ট জানানো প্রয়োজন বলে দাবি তুলেছেন তাঁরা।
স্থানীয় এক বাসিন্দা শ্যামল বসুর কথায়, ‘‘তিন বারের বদলে কখনও এক বার অথবা দু’বার জল মিলছে। আবার কখনও তা-ও পাওয়া যাচ্ছে না। এক মাস ধরে জল কিনতে হচ্ছে। পকেটে টান পড়ছে জল কিনতে গিয়ে। বছরের শুরুতেই এই অবস্থা! আর কত দিন এই অবস্থা চলবে, অন্তত প্রশাসন সেই বিষয়ে স্পষ্ট জানাক।’’
পুরসভা সূত্রের খবর, জলের জোগান কমে যাওয়ার পাশাপাশি স্থানীয় স্তরে জল সরবরাহের পাইপে ছিদ্র থেকে শুরু করে অন্যান্য সমস্যাও রয়েছে। বর্তমানে চাহিদার তুলনায় কামারহাটি জল প্রকল্প থেকে জলের সরবরাহ অর্ধেক কমেছে। তবে পুরসভার দাবি, জলের সরবরাহ বন্ধ নেই। শুধু পরিমাণ কমেছে।
দক্ষিণ দমদম পুরসভার চেয়ারম্যান পারিষদ (জল) মৃন্ময় দাস জানান, জলস্তর নেমে যাওয়ায় জোগান কমেছে। তবে তাঁর দাবি, জলসঙ্কটের তেমন অভিযোগ আসেনি। জোগান কমে যাওয়ার অভিযোগ যে এলাকা থেকে মিলছে, সেখানে দ্রুত জলের ট্যাঙ্কার পাঠানো হচ্ছে বলেও দাবি করেন তিনি। তবে স্থানীয় বাসিন্দাদের অভিযোগ, ট্যাঙ্কারের দেখা মেলেনি।