Mental Health

Mental health: তৃতীয় ঢেউয়েও সুস্থ হয়ে ঘরে ফিরছেন মানসিক রোগীরা

গত এক মাসে শহরের পাভলভ, লুম্বিনী এবং পুরুলিয়া ও বহরমপুরের মানসিক হাসপাতাল থেকে সুস্থ হয়ে ঘরে ফিরেছেন ১২ জন।

Advertisement

জয়তী রাহা

কলকাতা শেষ আপডেট: ২৩ জানুয়ারি ২০২২ ০৬:৪৫
Share:

প্রতীকী ছবি।

কোভিডেও থমকে নেই ঘরে ফেরা। গত এক মাসে শহরের পাভলভ, লুম্বিনী এবং পুরুলিয়া ও বহরমপুরের মানসিক হাসপাতাল থেকে সুস্থ হয়ে ঘরে ফিরেছেন ১২ জন। তাঁদের ১০ জনই মহিলা।

Advertisement

রাজ্যের বিভিন্ন প্রান্ত, বিহার, ঝাড়খণ্ড, ওড়িশা এবং মধ্যপ্রদেশের ঠিকানা খুঁজে এঁদের পরিবারে ফেরানোর দায়িত্ব নিয়েছিল মানসিক রোগীদের নিয়ে দীর্ঘদিন ধরে কাজ করা এক স্বেচ্ছাসেবী সংস্থা। প্রায় সকলেই আর্থিক দিক থেকে পিছিয়ে থাকা পরিবারের। তা সত্ত্বেও বার বার আলোচনায় আপনজনের সুস্থ হয়ে ওঠাকে সম্মান করেছে পরিবার। কাউকে আবার স্বাবলম্বী হতেও সমর্থন জোগাচ্ছেন পরিজনেরা।

বহরমপুরের যৌনপল্লি থেকে মানসিক রোগী এক তরুণীকে উদ্ধার করে হাসপাতালে ভর্তি করেছিল পুলিশ। নতুন বছরে সেই মেয়েকে ঘরে ফেরানো গিয়েছে। অশান্তি করে দাদার সংসার ছেড়েছিলেন বোন। ভিন্ রাজ্যের সেই তরুণীকে পুরুলিয়ার মানসিক হাসপাতালে ভর্তি করেছিল পুলিশ। সুস্থ ওই তরুণীকে ইন্দোরের বাড়িতে ফেরালেন দাদা-বৌদি। মত্ত স্বামীর সঙ্গে অশান্তির কারণে বেরিয়ে পড়েছিলেন ঝাড়খণ্ডের এক মহিলা। তাঁকে উদ্ধার করে পুরুলিয়ার মানসিক হাসপাতালে পাঠিয়েছিল পুলিশ। সুস্থ হলেও ফেরাতে চাননি মা ও ছেলে। অবশেষে স্বামীই নিয়ে গেলেন।

Advertisement

বিহারের দানাপুর জেলার সিকন্দরপুর গ্রামের বাড়ি থেকে বেরিয়ে আসা যুবকও ফিরলেন। ভ্রাতৃবধূর আপত্তি থাকলেও ভাইয়ের আন্তরিক চেষ্টায় ফিরলেন তিনি। ওড়িশার তরুণীকে পরিবারে ফেরাতে পাশে ছিল সম্বলপুর থানা। তরুণী শুধু স্থানীয় থানা সম্বলপুর বলতে পেরেছিলেন। সেই থানাই খুঁজে বার করে তাঁর বাড়ি। উত্তর ২৪ পরগনার অশোকনগর থেকে নিখোঁজ হওয়া মেয়েকে দেড় বছর ধরে খুঁজছিলেন বাবা-মা-ভাই। লুম্বিনী থেকে সুস্থ হয়ে ওঠা সেই মেয়েকে পেয়ে উচ্ছ্বসিত পরিবার। বিহারের বাসিন্দা এক যুবক সুস্থ হয়ে বাবার সঙ্গে শহরের ফুটপাতে ব্যবসা করছেন।

নেশাগ্রস্ত একগুঁয়ে বাবা যে মাকে ফিরিয়ে নিতে রাজি নন, বুঝেছিল সপ্তদশী মেয়ে। তাই মামার বাড়িতে ফোন করে, বাবার উপরে চাপ তৈরি করিয়ে পাভলভ থেকে মাকে ফিরিয়ে আনে বিহারের প্রত্যন্ত গ্রামের মেয়েটি। পাভলভের আরও এক তরুণী পাশে পেয়েছেন তাঁর ভাইকে। মা-বাবাকে বুঝিয়ে দিদিকে নিয়ে গিয়েছেন তিনি। এই মেয়ে বা ভাই ওঁদের ফেরার লড়াই সহজ করেছেন, বলছিলেন সংস্থার কেস সাপোর্ট ম্যানেজার অনিন্দিতা চক্রবর্তী।

সব কাহিনিকে ছাপিয়ে গিয়েছেন অন্ডালের বি-টেক পাশ তরুণী। মানসিক ভাবে অসুস্থ ওই তরুণীকে পিজি-তে ভর্তি করেছিল পুলিশ, পরে পাঠানো হয় পাভলভে। সুস্থ তরুণী মেসে থেকে চাকরির খোঁজ করছেন। স্বেচ্ছাসেবী সংস্থার সিনিয়র প্রজেক্ট ম্যানেজার শুক্লা দাস বড়ুয়া বলেন, “পারিবারিক সম্পত্তির ভাগ পাওয়ার স্বীকৃতি পেয়েছেন তরুণী। যা মানসিক রোগীদের স্বীকৃতির লড়াইয়ে গুরুত্বপূর্ণ। পরিবার পাশে থেকে তাঁকে স্বাবলম্বী হতে দিচ্ছে, এটাও বড় জয়।”

ওই সংস্থার কর্ণধার রত্নাবলী রায় বলছেন, “বিকল্প এবং তুলনায় ছোট ছোট জোট ও যোগাযোগের মাধ্যমকে কী ভাবে কাজে লাগাতে হয়, তা কোভিড শিখিয়েছে। সেই জোটকে সঙ্গী করে চলায় মূল স্রোতে ওঁদের ফেরানোর এই উদ্যোগ সফল হয়েছে।”

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
আরও পড়ুন
Advertisement