গ্রাফিক: শৌভিক দেবনাথ।
আরজি করের চিকিৎসককে ধর্ষণ করে খুন করার ঘটনায় তাঁর সহকর্মীরাও জড়িত থাকতে পারেন বলে সন্দেহ মৃতার বাবা-মায়ের। হাসপাতালের বেশ কয়েক জন চিকিৎসক এবং ইন্টার্নের নামও তাঁরা সিবিআইকে জানিয়েছেন। এমনটাই জানাচ্ছে সংবাদ সংস্থা পিটিআই। সিবিআইয়ের এক কর্তা ওই সংবাদ সংস্থাকে এই খবর জানিয়েছেন।
পিটিআইয়ের প্রতিবেদন অনুযায়ী, আরজি করে নিহত চিকিৎসকের বাবা-মা কেন্দ্রীয় তদন্তকারী সংস্থাকে জানিয়েছেন, এক জন মাত্র তাঁদের কন্যার ধর্ষণ এবং খুনের সঙ্গে জড়িত বলে তাঁরা মনে করেন না। বরং তাঁদের অনুমান, এই ঘটনার সঙ্গে একাধিক ব্যক্তি যুক্ত রয়েছেন। গোটা ঘটনায় হাত থাকতে পারে হাসপাতালেরই চিকিৎসক এবং পড়ুয়াদের। মৃত চিকিৎসকের সঙ্গে কাজ করতেন, এমন কয়েক জনের নাম সিবিআইকে জানিয়েছেন তাঁরা। তাঁদের সন্দেহ করার কারণও জানিয়েছেন। সিবিআই তাঁদের জিজ্ঞাসাবাদ করতে পারে।
সিবিআই সূত্রে খবর, মৃত চিকিৎসকের বাবা-মা যাঁদের নাম বলেছেন, তাঁদের জিজ্ঞাসাবাদের বিষয়টিকে অগ্রাধিকার দেওয়া হচ্ছে। এ ছাড়া, কলকাতা পুলিশের কয়েক জন আধিকারিককেও জিজ্ঞাসাবাদ করা হবে, যাঁরা প্রাথমিক ভাবে এই ঘটনার তদন্ত শুরু করেছিলেন। পুলিশ কোন সূত্রে কী কী তথ্য জোগাড় করেছিলেন, তা জানতে চাইবে কেন্দ্রীয় সংস্থা। সিবিআই সূত্রে আরও জানা গিয়েছে, এখনও পর্যন্ত এই ঘটনার সঙ্গে জড়িত অন্তত ৩০ জনকে চিহ্নিত করা হয়েছে। তাঁদের জিজ্ঞাসাবাদের প্রক্রিয়াও শুরু হয়েছে।
মৃত চিকিৎসকের সহকর্মীদের ভূমিকা নিয়ে প্রশ্ন তুলেছেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ও। তিনি বলেন, ‘‘রাত ২টোর পর মেয়েটি ঘুমোতে গিয়েছিল। তার আগে পর্যন্ত সে সহকর্মীদের সঙ্গেই ছিল। পরের দিন সকাল ৯টায় দেহ উদ্ধার হয়। এতটা সময় তাঁর খোঁজ কেউ নিলেন না কেন?’’
শুক্রবারও আরজি করের কয়েক জন চিকিৎসক পড়ুয়াকে তলব করেছিল সিবিআই। তাঁরা সিজিও কমপ্লেক্সে হাজিরাও দিয়েছিলেন। বেশ কিছু ক্ষণ জিজ্ঞাসাবাদ করা হয় তাঁদের। এর আগেও কয়েক জন চিকিৎসককে সিবিআই জিজ্ঞাসাবাদ করেছে। শুক্রবার সিবিআই দফতরে হাজিরা দিয়েছিলেন আরজি করের মৃত চিকিৎসকের বিভাগীয় প্রধান অরুণাভ দত্ত চৌধুরীও।
গত ৯ অগস্ট আরজি করের জরুরি বিভাগের চার তলার সেমিনার হল থেকে উদ্ধার করা হয়েছিল এক মহিলা চিকিৎসকের দেহ। তাঁকে ধর্ষণ করে খুন করা হয়েছে বলে অভিযোগ। এখনও পর্যন্ত এই ঘটনায় এক জনকে গ্রেফতার করা হয়েছে। কলকাতা হাই কোর্টের নির্দেশে ঘটনার তদন্ত করছে সিবিআই। ধৃতকে শুক্রবার আরজি করের ঘটনাস্থলে নিয়ে যাওয়া হয়েছিল। সেখানে ঘটনার পুনর্নির্মাণও করা হয়। শুক্রবার আরজি করের প্রাক্তন অধ্যক্ষ সন্দীপ ঘোষকে দীর্ঘ ক্ষণ সিজিও কমপ্লেক্সে জিজ্ঞাসাবাদ করা হয়। শনিবার আবার তাঁকে তলব করা হয়েছিল। সকালেই তিনি সেখানে পৌঁছে গিয়েছেন।