সল্টলেকের সেই পেট্রোল পাম্প। বুধবার। — নিজস্ব চিত্র
পাম্পে তখন চলছিল দু’টি পেট্রোল ভরার যন্ত্রের (পাম্পবক্স) রক্ষণাবেক্ষণ। সে দু’টি থেকে পেট্রোল বার করে আলাদা ড্রামে রাখা হয়েছিল। ইতিমধ্যেই সেখানে তেল নিতে হাজির হন এক মোটরবাইক চালক। কিন্তু কাজ চলায় ওই পাম্পেই পাশের একটি যন্ত্র থেকে তাঁকে তেল নিতে বলেন কর্মীরা। সেই মতো চালক অন্য পাম্পবক্সটির দিকে এগোতে যান। কিন্তু বাইক চালু করতেই হয় বিপত্তি। বাইক থেকে বেরনো আগুনের ফুলকির সঙ্গে খোলা দু’টি পাম্পবক্সের আশপাশে থাকা পেট্রোলের সংস্পর্শ হয়। মুহূর্তে আগুন ধরে যায় তেল ভরার যন্ত্র দু’টিতে এবং দ্রুত তা ছড়িয়ে পড়তে শুরু করে।
বুধবার ঘটনাটি ঘটে সল্টলেকের একটি শপিং মল লাগোয়া ডি ডি ব্লকের পেট্রোল পাম্পে। ঘটনাস্থলে যায় দমকলের চারটি ইঞ্জিন। তার আগেই আগুন অনেকটা আয়ত্তে আনেন পাম্পের কর্মীরা। পাশের শপিং মলের কর্মী, স্থানীয় দোকানদার ও হকারেরাও সাহায্য করেন। বাকিটা নিয়ন্ত্রণে আনে দমকল। পুড়ে গিয়েছে তেল ভরার যন্ত্র দু’টি। আগুনের তাপে ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে পাম্পের ছাউনিও। এক কর্মীর সামান্য আঘাত লেগেছে বলেও জানা গিয়েছে। আধঘণ্টার মধ্যে আগুন নিয়ন্ত্রণে এলেও আতঙ্ক ছড়ায় এলাকায়।
ওই পেট্রোল পাম্পের পাশে এক দিকে শপিং মল, গোর্খা ভবন, অন্য দিকে রেস্তোরাঁ। আগুন লাগতেই এলাকায় হুড়োহুড়ি পড়ে যায়। আতঙ্ক ছড়িয়ে পড়ে শপিং মলে আসা লোকজনের মধ্যেও। মানিকতলার বাসিন্দা পুষ্পেন্দু রায় বলেন, ‘‘শপিং মল থেকে বেরিয়ে ট্যাক্সি ধরব বলে সামনে রাস্তায় গিয়ে দেখি পেট্রোল পাম্পের দু’টি পাম্পবক্সে আগুন। বড় দুর্ঘটনা ঘটে যেতে পারত।’’
পাম্পের মালিক ভবানীপ্রসাদ নাগের দাবি, রক্ষণাবেক্ষণের কাজ চলছিল। একটি বাইক তেল ভরতে এসেছিল। সেটি চালু করার সময়ে তার ফুলকি থেকে আগুন ধরে যায়। যদিও দমকল জানায়, তদন্তের পরেই আগুনের কারণ সম্পর্কে নিশ্চিত হওয়া যাবে।
ঘটনাস্থলে যান বিধাননগর পুর নিগমের ডেপুটি মেয়র তাপস চট্টোপাধ্যায়, স্থানীয় ৪০ নম্বর ওয়ার্ডের কাউন্সিলর তুলসী সিংহ রায়, গোয়েন্দা প্রধান সন্তোষ পাণ্ডে-সহ পুলিশ কর্তারা। কাউন্সিলর বলেন, ‘‘বড় দুর্ঘটনা থেকে রক্ষা পাওয়া গেল। তবে এর থেকে শিক্ষা নিতে হবে। রক্ষণাবেক্ষণের কাজ চলাকালীন ব্যারিকেড করার প্রয়োজন রয়েছে। আরও সতর্কতা অবলম্বন করতে হবে পাম্প-কর্তৃপক্ষকে।’’
এ দিনই সকালে আগুনে পুড়ে যায় মহাত্মা গাঁধী রোডে একটি পরিত্যক্ত সিনেমা হলের দোতলায় কাগজের স্টিকার তৈরির দোকান। দমকলের তিনটি ইঞ্জিন আধ ঘণ্টায় আগুন নেভায়।
প্রত্যক্ষদর্শীরা জানান, ওই সিনেমা হলের নীচে ও উপরে কয়েকটি দোকান আছে। এ দিন দোতলায় একটি দোকানে আগুন লাগে। ব্যবসায়ীদের একাংশের আশঙ্কা, এই ঘটনায় প্রোমোটিং চক্র জড়িত। জায়গাটি দখলের জন্যই আগুন লাগানো হতে পারে বলে অভিযোগ তাঁদের। পুলিশ সূত্রে খবর, নির্দিষ্ট কারও বিরুদ্ধে অভিযোগ দায়ের হয়নি। তবে বাড়িটির মালিকানা নিয়ে আইনগত জটিলতা আছে। তা নিয়ে মামলা চলছে।