বাড়ির পরিচারিকা, ভাড়াটে বা পেয়িং গেস্টদের নাম ও অন্যান্য তথ্য পুলিশের কাছে জমা দিতে হলে এ বার থেকে আর থানায় যেতে হবে না। বাড়িতে বসেই কমিশনারেটের ওয়েবসাইটে গিয়ে অনলাইনে পরিচারিকা, ভাড়াটে বা পেয়িং গেস্টের সমস্ত তথ্য নথিভুক্ত করা যাবে। বৃহস্পতিবার এই সুবিধা চালু করল বিধানগর কমিশনারেট। এর পাশাপাশি, অনলাইনে পাসপোর্ট ভেরিফিকেশন ও চাকরির ভেরিফিকেশনও দ্রুততার সঙ্গে করা যাবে বলে দাবি কমিশনারেটের কর্তাদের। বিধাননগর কমিশনারেটের দশটি থানায় এই সুবিধা থাকবে। এ ছাড়াও, ওয়েবসাইটে মহিলাদের সাহায্যের জন্য একটি হেল্পলাইন নম্বর চালু করা হচ্ছে।
অনলাইনে এ ভাবে ভাড়াটে বা পেয়িং গেস্টদের সব তথ্য নথিভুক্ত করার সুবিধা কলকাতা পুলিশ কমিশনারেট বা লাগোয়া ব্যারাকপুর কমিশনারেটে নেই। বিধাননগর কমিশনারেট এই সুবিধা চালু করায় তারা কার্যত নজির তৈরি করল বলে অনেকে মনে করছেন।
পুলিশ জানিয়েছে, বিধাননগর কমিশনারেট এলাকায় যেমন সল্টলেক, লেকটাউন, বাগুইআটি, নিউ টাউনে চুরি থেকে শুরু করে খুন বা নানা অপরাধমূলক কাজে বহু
সময়ে অভিযোগ ওঠে বাড়ির পরিচারিকা বা ভাড়াটের বিরুদ্ধে। তদন্তে নেমেও দেখা গিয়েছে, ঘটনার পরেই পরিচারিকা বা ভাড়াটের খোঁজ পাওয়া যাচ্ছে না। বহু ক্ষেত্রে আবার পুলিশ দেখেছে, ওই ভাড়াটে বা পরিচারিকা সম্পর্কে বিস্তারিত তথ্য দিতেই পারেননি বাড়ির মালিক।
বিধাননগর কমিশনারেটের গোয়েন্দা প্রধান কঙ্করপ্রসাদ বারুই বলেন, ‘‘স্থানীয় থানা থেকে বারবার মানুষকে এই নিয়ে সচেতন করা হয়েছে। এমনকী, এই সংক্রান্ত ফর্ম বাড়ি বাড়ি বিলিও করেছি। কিন্তু তেমন সাড়া পাওয়া যায়নি। সাধারণ মানুষ ফর্ম পূরণ করে থানায় জমা দেননি। এ বার আর থানায় গিয়ে এই সব তথ্য দিতে হবে না। কমিশনারেটের ওয়েবসাইটে অনলাইনেই তা জমা দেওয়া যাবে। ফলে এই ধরনের তদন্তও দ্রুত হবে।’’
বিধাননগর কমিশনারেট যা পারল, কলকাতা বা লাগোয়া ব্যারাকপুর কমিশনারেট তা পারল না কেন? এই কমিশনারেটে এখনও পুরনো পদ্ধতিতেই ফর্ম সংশ্লিষ্ট থানায় গিয়ে দিয়ে আসতে হয়। কলকাতা পুলিশের ওয়েবসাইট যিনি দেখেন, সেই যুগ্ম কমিশনার লক্ষ্মীনারায়ণ মিনা এ ব্যাপারে বলেন, ‘‘আমি এখন ভোটের কাজে ব্যস্ত আছি। ভোট মিটলে খোঁজ নিয়ে দেখব আমাদের ওয়েবসাইট কী অবস্থায় আছে।’’ অন্য দিকে ব্যারাকপুর কমিশনারেটের ওয়েবসাইট এখনও চালু হয়নি বলে জানিয়েছেন সেখানকার গোয়েন্দা প্রধান অজয় ঠাকুর। অজয়বাবু বলেন, ‘‘আমাদের ওয়েবসাইট শীঘ্রই চালু করা হবে। সেখানে এই ধরনের সুবিধা নিশ্চয় রাখা হবে।’’
তবে অনলাইনে পরিচারিকা বা ভাড়াটেদের তথ্য নথিভুক্তই শুধু নয়, এর মাধ্যমে পাসপোর্ট ভেরিফিকেশন ও চাকরির ভেরিফিকেশনও ঝঞ্ঝাট ছাড়া দ্রুত হয়ে যাবে জানিয়েছেন বিধাননগরের গোয়েন্দা প্রধান। তিনি বলেন, ‘‘এই ধরনের ভেরিফিকেশনের জন্য আগে প্রায় তিন মাস লাগত। এখন তা ১০ থেকে ১২ দিনের মধ্যে হয়ে যাবে।’’ এ ছাড়া, ট্রাফিক নিয়ম ভাঙার জন্য জরিমানাও অনলাইনেই দেওয়া যাবে বলে জানা গিয়েছে।
কমিশনারেটের কর্তারা আরও জানিয়েছেন, কমিশনারেটের অধীনে থাকা যে কেউ অনলাইনে সরাসরি পুলিশ কমিশনারের কাছে অভিযোগ জানাতে পারবেন। গুরুত্ব বুঝে অভিযোগপত্র সংশ্লিষ্ট থানায় পাঠিয়ে দেওয়া হবে। পাশাপাশি, মহিলাদের সাহায্যের জন্যও চালু করা হচ্ছে হেল্পলাইন নম্বর। নম্বরটি হল ২৩৩৫৭০০০।