বেহাল: খাটাল সরলেও রয়েছে খোলা নিকাশি। —নিজস্ব চিত্র।
এক সময়ে খাটাল ছিল। থাকত গরু, মোষ। কলকাতা থেকে খাটাল সরিয়ে নেওয়া হয়েছে ঠিকই, কিন্তু অবস্থা রয়ে গিয়েছে আগের মতোই। খোলা নর্দমায় জমে আছে প্লাস্টিকের কাপ, গ্লাস, আবর্জনা। জমা জলে বাড়ছে ডেঙ্গির মশার আতঙ্কও। কলকাতা পুরসভার ৮১ নম্বর ওয়ার্ডের বড় রাসবাড়ি মাঠ সংলগ্ন এলাকার ছবিটা এখন এমনই।
স্থানীয়দের অভিযোগ, বছরের পর বছর এ ভাবেই থাকে নর্দমাগুলি। এমনকী শহরের বিভিন্ন প্রান্তে অজানা জ্বর কিংবা ডেঙ্গিতে মৃত্যুর ঘটনা সামনে আসার পরেও এই এলাকার ছবিটা বদলায়নি। ভয়ে দিন কাটাচ্ছেন স্থানীয় বাসিন্দারা।
অভিযোগ, দিনের পর দিন নর্দমাগুলির অবস্থা এরকম জেনেও পুরসভা কিংবা স্থানীয় কাউন্সিলর সেগুলি পরিষ্কারের কোনও ব্যবস্থা নেন না। কোথায় কোথায় আবর্জনা বা জল জমে রয়েছে, পুরসভা থেকে ওয়ার্ড ভিত্তিক তা নজরদারি করার কথা। বড় রাসবা়ড়ির মাঠ, ঝালদার মাঠ সংলগ্ন এলাকায় পর পর রয়েছে বস্তি। কিন্তু স্থানীয় মানুষরা জানাচ্ছেন, এত ঘন বসতিপূর্ণ অঞ্চল হওয়া সত্ত্বেও পুরসভা কিংবা ওয়ার্ড থেকে কেউ এই জায়গাগুলি পরিদর্শনে আসেননি। এমনকী ডেঙ্গিতে কলকাতার বিভিন্ন অঞ্চল থেকে পর পর মৃত্যুর ঘটনা ঘটবার পরেও এই জায়গাগুলি আগের মতোই অবহেলিত।
৮১ নম্বর ওয়ার্ডের তৃণমূল কাউন্সিলর জুঁই বিশ্বাস বললেন, ‘‘এলাকায় খোলা নর্দমা রয়েছে জানি। কিন্তু ওখানে দীর্ঘদিন আগে লোকজন যেভাবে ঘর তৈরি করে ফেলেছেন তাতে নর্দমা বোজানো এখনই সম্ভব নয়। টালিনালা সংস্কারের কাজের সময়ে ওই নর্দমা বুজিয়ে ভূ-গর্ভস্থ নিকাশি তৈরির পরিকল্পনা রয়েছে।’’ তবে তাঁর ওয়ার্ডে রোজ যে ভাবে আবর্জনা পরিষ্কার করা হয়, তা পুরসভার অন্য কোনও ওয়ার্ডে হয় না বলেও তাঁর দাবি।
বাসিন্দারা অবশ্য কাউন্সিলরের সঙ্গে একমত নন। তাঁদের অভিযোগ, জমা জল, আবর্জনার জেরে বাড়ছে মশা। দিনের বেলাতেও মশার দাপটে টেকা দায়। সন্ধ্যা হলে তো কথাই নেই।
নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক এলাকার দীর্ঘদিনের এক বাসিন্দার অভিযোগ, মশার দাপট এখানে সারা বছরই থাকে। মশার তেল বা ব্লিচিং কখনওই পুরসভা থেকে ছড়ানো হয় না। তিনি আরও বলেন, ‘‘কলকাতা জুড়ে ডেঙ্গির প্রকোপে এই অবস্থা, তার মধ্যেই আমারও জ্বর হয়। রক্ত পরীক্ষা করেও ভয় কাটেনি। খালি মনে হত এই বুঝি ডেঙ্গি ধরা পড়ল! ’’