এটিএম জালিয়াতি। —ফাইল চিত্র।
বিহার-নেপাল সীমান্তে ধরা পড়ল ‘রোমানীয় গ্যাং’-এর মাথা ‘নানা’। কলকাতা পুলিশের একটি দল ইতিমধ্যেই সীমান্ত এলাকা সোনৌলির উদ্দেশে রওনা দিয়েছে। মঙ্গলবার নেপাল পালাতে গিয়ে শুল্ক দফতরের অফিসারেরা তাকে আটক করে। পুলিশ সূত্রে খবর, দিল্লিতে বসেই ‘নানা’ রোমানীয় গ্যাং নিয়ন্ত্রণ করত। তার নির্দেশেই ধৃত দুই রোমানীয় কলকাতায় এটিএমে স্কিমার বসিয়ে গ্রাহকদের তথ্য সংগ্রহ করে। এই দলেই ছিল এলগিন রোডে এটিএম-কাণ্ডে ধৃত মুম্বইয়ের তিন যুবকও।
কলকাতা পুলিশের গোয়েন্দা প্রধান প্রবীণ ত্রিপাঠী বলেন, “রোমানীয় দলের মূল মাথা এই নানা। দু’জন ধরা পড়ার পর নেপালে পালানোর চেষ্টা করছিল। এই দলে আরও অনেকে রয়েছে। তাদের খোঁজে তল্লাশি চলেছে।”
এ দিন তিহাড় জেলে রোমানীয় নাগরিক করনেলকে জেরা করেন গোয়েন্দারা। বেশ কিছু তথ্যও পাওয়া গিয়েছে। মে মাস দিল্লি থেকে এটিএম জালিয়াতির ঘটনাতেই তাকে গ্রেফতার করা হয়। বিদেশিদের সাহায্য করত কর্নেল। তার কাছ থেকে পাওয়া তথ্যের ভিত্তিতেই আরও কয়েকটি জায়গায় তল্লাশি চালাচ্ছেন গোয়েন্দারা। ‘নানা’ ছাড়াও আরও দু’জনের বিরুদ্ধে লুক-আউট নোটিস জারি করেছে কলকাতা পুলিশ। এই দলে রয়েছে এক নাইজেরীয়। তার খোঁজেও তল্লাশি চলেছে।
আরও পড়ুন: এটিএমে কী করছে এত ক্ষণ? ভিতরে ঢুকতেই জানা গেল…
আরও পড়ুন:রাজ্যের এটিএমে জালিয়াতির কথা জানেই না কেন্দ্র!
মুম্বইয়ের মীরা রোডের বাসিন্দা সালিল খানের ‘ব্রড ব্রান্ডের’ ব্যবসা করত। ব্যবসায় মন্দা হওয়ায় সে রোমানীয়দের সঙ্গে এই এটিএম জালিয়াতির কাজে নেমে পড়ে। তার সঙ্গে আগেই পরিচয় ছিল উত্তরপ্রদেশের বাসিন্দা সুধীর রাজনের সঙ্গে। মীরা রোডের বাসিন্দা রোহিত কুমারের। ইঞ্জিনিয়ারিং পড়ার সময়ে এই তিন জন মিলে একটি দল তৈরি করে। পরে ওই গ্যাং-এর থেকে প্রশিক্ষণ নিয়ে তারা কলকাতা, পুণে, মুম্বইয়ের বিভিন্ন জায়গায় ঘুরে স্কিমার বসিয়ে গ্রাহকদের তথ্য সংগ্রহ করে। কলকাতার কসবা, নিউ মার্কেট, এলগিন রোডের এটিএম-এ স্কিমার বসানোর চেষ্টা করেছিল। পুণে এবং মুম্বইয়ে এটিএম জালিয়াতির ঘটনাতেও জড়িত রোহিতরা। সোমবার রাতে রোহিত ধরা পড়তেই, সাহিল ভুয়ো নামে মুম্বইয়ের প্লেনের টিকিট কাটে। সুধীর হাওড়া হোটেল ছেড়ে সিআইটি রোডের এক আত্মীয়ের বাড়িতে ওঠে। সেখান থেকে পালানোর ছক ছিল এই দু’জনের। শেষ রক্ষা হল না, শেষ পর্যন্ত দু’জনেই পুলিশের জালে ধরা পড়ল। এই দলে আর কারা রয়েছে, তা খতিয়ে দেখা হচ্ছে বলে জানিয়েছেন গোয়েন্দারা।