শ্যামাপ্রসাদ মুখার্জি রোডের উপরে রয়ে গিয়েছে মণ্ডপের কাঠামো। সোমবার। ছবি: বিশ্বনাথ বণিক।
দুর্গাপুজোর পরে কেটে গিয়েছে প্রায় এক মাস। অথচ শহর কলকাতার উদ্যান, রাস্তায় এখনও ইতিউতি পড়ে রয়েছে পুজোমণ্ডপের বাঁশ, কাঠামো। ওইসব বাঁশ ও কাঠামোর গর্তে জমা জলে ডেঙ্গির মশার লার্ভা জন্মাতে পারে, সেই আশঙ্কা থেকেই ওই সব বাঁশ ও কাঠামো সরানোর নির্দেশ দিয়েছিলেন পুর কর্তৃপক্ষ। তবে উদ্যোক্তাদের বার বার সে কথা জানালেও যে তাতে কাজের কাজ হয়নি, তা সম্প্রতি শহরের উত্তর থেকে দক্ষিণের বিভিন্ন প্রান্তে ঘুরেই নজরে এল।
শহরের বিভিন্ন উদ্যান থেকে রাস্তার দু’ধারে পড়ে থাকা বাঁশের কাঠামো সরিয়ে ফেলতে নির্দিষ্ট সময়সীমা বেঁধে দিয়েছিলেন কলকাতার মেয়র ফিরহাদ হাকিম। জানিয়েছিলেন, ২১ নভেম্বরের মধ্যে সমস্ত উদ্যান থেকে পুজো মণ্ডপ পুরোপুরি সরিয়ে ফেলতে হবে। না হলে পুরসভা কঠোর ব্যবস্থা নেবে। তাই প্রশ্ন উঠেছে, নির্দিষ্ট সময়সীমা পেরিয়ে যাওয়ার পরেও পুজোর বাঁশ না সরায় এ বার কী পদক্ষেপ করবে পুরসভা? পুর উদ্যান বিভাগের এক আধিকারিক এ দিন বলেন, ‘‘আমরা প্রতিটি বরো এগজিকিউটিভ ইঞ্জিনিয়ারদের সঙ্গে যোগাযোগ করছি। যে সমস্ত উদ্যানে এখনও বাঁশ পড়ে রয়েছে, সেগুলি যাতে শীঘ্রই সরানো যায়, সে বিষয়ে বরো এগজিকিউটিভ ইঞ্জিনিয়ারদের নির্দেশ দেওয়া হয়েছে।’’
সম্প্রতি উত্তর কলকাতার শ্যামপুকুরের একটি পার্কে গিয়ে দেখা গেল, উদ্যানে ডাঁই হয়ে পড়ে বাঁশ, মণ্ডপের সামগ্রী। উদ্যান সংলগ্ন এক বাসিন্দার অভিযোগ, ‘‘প্রতিদিন বয়স্কদের অনেকেই ওই উদ্যানে প্রাতর্ভ্রমণ করতে যান। ছোটরা খেলতে যায়। সেখানে দীর্ঘদিন ধরে পুজোর বাঁশ, কাঠামো পড়ে থাকায় খুব সমস্যা হচ্ছে। আমরা চাই, ওগুলি অবিলম্বে সরিয়ে ফেলা হোক।’’ কাছে শ্যামপুকুর স্ট্রিটে ঢুকতেই রাস্তা জুড়ে এখনও রয়ে গিয়েছে কালীপুজোর বাঁশের কাঠামো। স্থানীয় বাসিন্দারা জানাচ্ছেন, কালীপুজোর এত দিন পরেও রাস্তা জুড়ে মণ্ডপের কাঠামো রয়ে যাওয়ায় ওই পথে গাড়ি ঢুকতে পারছে না, সাধারণ মানুষের হাঁটাচলাতেও অসুবিধা হচ্ছে। গিরিশ পার্ক মোড়ের কাছে, মন্ত্রী শশী পাঁজার বাড়ির উল্টো দিকে চিত্তরঞ্জন অ্যাভিনিউয়ের ধার বরাবর বাঁশের কাঠামো বানিয়ে পুজোর বিজ্ঞাপনী হোর্ডিং টাঙানো হয়েছিল। দুর্গাপুজোর পরে এক মাস কাটলেও এখনও বহাল তবিয়তে রয়ে গিয়েছে সেই বাঁশের কাঠামো ও বিজ্ঞাপনের হোর্ডিং। একই ছবি দক্ষিণ কলকাতারও। এসএসকেএম হাসপাতালের উল্টো দিকে বিজ্ঞাপনের বাঁশের কাঠামো রয়ে গিয়েছে। একই অবস্থা হরিশ মুখার্জি রোড, দেশপ্রিয় পার্কেও। ফলে দেশপ্রিয় পার্কে প্রাতর্ভ্রমণ ও খেলাধূলা করতে সমস্যা হচ্ছে বলে অভিযোগ স্থানীয়দের। কলকাতা পুরসভার মেয়র পারিষদ (উদ্যান) দেবাশিস কুমার বলেন, ‘‘পুজোর অনুমতি বিভিন্ন বরো থেকে দেওয়া হয়েছে। বরোর ইঞ্জিনিয়ারদের সঙ্গে কথা বলছি, যাতে দ্রুত বাঁশ, কাঠামো সরানো হয়।’’