মৌসুমী মিশ্র
ডেঙ্গির পরে এ বার সোয়াইন ফ্লুতে মারা গেলেন এক গৃহবধূ। বৃহস্পতিবার দুপুরে সল্টলেকের এক বেসরকারি হাসপাতালে মৃত্যু হয় মৌসুমী মিশ্র (৪৮) নামে ওই মহিলার।
সম্প্রতি বিধাননগর পুরসভা দাবি করেছিল, গত বছরের তুলনায় এ বছরের অক্টোবর মাস পর্যন্ত ডেঙ্গি এবং জ্বরে আক্রান্তের সংখ্যা অনেক কম। কিন্তু নভেম্বর শুরু হতেই ওই পুর এলাকার দু’টি ওয়ার্ডে জ্বরের প্রকোপ বাড়তে শুরু করে। ইতিমধ্যেই প্রায় ১৫ জন জ্বরে আক্রান্ত। ডেঙ্গিতে মৃত্যুও হয়েছে এক পুলিশকর্মীর। সেই ঘটনার ২৪ ঘণ্টার মধ্যেই মারা গেলেন মৌসুমী। স্বামী সৌগত মিশ্র জানান, দুর্গাপুজোর সময়ে জ্বরে আক্রান্ত হন মৌসুমী। তাঁকে প্রথমে সল্টলেকের একটি বেসরকারি হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হয়। সেই হাসপাতাল সূত্রের খবর, ২২ অক্টোবর মৌসুমীকে সেখানে ভর্তি করা হয়। তার পরে রক্তের নমুনা পাঠানো হয় সল্টলেকেরই আর এক বেসরকারি হাসপাতালে। সেই পরীক্ষায় সোয়াইন ফ্লু ধরা পড়ে। পরে মৌসুমীকে সেই হাসপাতালেই স্থানান্তরিত করা হয়। সেখানেই এ দিন তাঁর মৃত্যু হয়।
এ বারেও অবশ্য বিধাননগর পুরসভা সময়ে খবর পায়নি। যার জন্য অসন্তোষ প্রকাশ করেছেন স্থানীয় ৩৩ নম্বর ওয়ার্ডের কাউন্সিলর নীলাঞ্জনা মান্না। এ দিন সংবাদমাধ্যমের কাছে খবর পেয়ে তিনি এবং বরো চেয়ারম্যান অনিতা মণ্ডল মৌসুমীর পরিবারের সঙ্গে দেখা করতে যান। স্থানীয় কাউন্সিলর জানান, পরিবারের সদস্যেরা জানিয়েছেন, ডেথ সার্টিফিকেটে সোয়াইন ফ্লু-র উল্লেখ রয়েছে। মৌসুমী বহু দিন ভেন্টিলেশনেও ছিলেন।
এফ ই ব্লকে ওই গৃহবধূর মৃত্যুতে আতঙ্ক ছড়িয়েছে। খবর শুনে মেয়র পারিষদ (স্বাস্থ্য) প্রণয় রায় বলেন, ‘‘খোঁজ নিচ্ছি। দ্রুত পদক্ষেপ করা হবে। এর আগে পুর এলাকায় সোয়াইন ফ্লু-তে আক্রান্ত হওয়ার ঘটনা শোনা যায়নি।’’
এ দিকে, ডেঙ্গিতে এক পুলিশকর্মীর মৃত্যুর ২৪ ঘণ্টা পরেও আতঙ্কে রয়েছেন সুকান্তনগরের বাসিন্দারা। কিন্তু সেখানকার নির্দিষ্ট একটি ব্লক এলাকায় আচমকা মশাবাহিত রোগ বৃদ্ধি পাওয়ার কোনও সুস্পষ্ট কারণ খুঁজে পাচ্ছে না বিধাননগর পুরসভা। তবে সম্ভাব্য সমস্ত দিক খতিয়ে দেখা হচ্ছে। প্রয়োজনে ওই এলাকায় মেডিক্যাল ক্যাম্প চালু করার চিন্তাভাবনা করছে পুরসভা।
পুরকর্তাদের একাংশের অভিযোগ, সচেতনতার অভাব রয়েছে বাসিন্দাদের। বাড়িতে জমা জল, আবর্জনা দেখতে পাওয়া গিয়েছে। তা ছাড়া, মশারি ব্যবহারেও অনীহা রয়েছে। বাসিন্দাদের পাল্টা অভিযোগ, পুজোর মরসুমে বাড়ি বাড়ি কালীপুজোর আমন্ত্রণপত্র বিলি করলেও পুরকর্মীদের মশার তেল স্প্রে করতে বা ব্লিচিং ছড়াতে দেখা যায়নি।
এই অভিযোগ প্রসঙ্গে প্রণয়বাবু জানান, পুজোর মরসুমে মশা নিধনের কাজে কোনও খামতি ছিল কি না, তা খতিয়ে দেখা হচ্ছে। তিনি বলেন, ‘‘প্রয়োজনে ওই এলাকায় মেডিক্যাল ক্যাম্প চালু করা হবে।’’