—প্রতীকী ছবি।
বৃষ্টির রাত। সুনসান রাস্তা। মাফলারে মাথা-মুখ ঢাকা এক ব্যক্তি সাইকেলে চেপে এসে দাঁড়াল একটি বৈদ্যুতিক ফিডার বক্সের সামনে। সাইকেলটি এক পাশে রেখে ওই ব্যক্তি পকেট থেকে একটি চাবি বার করে রাস্তার ফিডার বক্স খুলল। তার পরে সেখান থেকে বিদ্যুৎ সংযোগের ফিউজ খুলে পকেটে ঢুকিয়ে ফিডার বক্সের দরজা বন্ধ করে ফের সাইকেল চালিয়ে সে এগিয়ে গেল আর একটি ফিডার বক্সের সামনে। আগের মতো একই কায়দায় তালা খুলে ফিউজ বার করে নিল। তার পরে ফের সাইকেলে চেপে চলে অন্য দিকে চলে গেল। সম্প্রতি শ্যামপুকুর থানা এলাকার সিসি ক্যামেরায় এমন ছবি ধরা পড়েছে।
পুলিশ জানিয়েছে, ওই ব্যক্তির ভাবগতিক বিদ্যুৎকর্মীর মতো হলেও আদতে সে বিদ্যুতের ফিউজ চুরি করত। নকুলদেব সিংহ নামে ওই ব্যক্তিকে মঙ্গলবার রাতেই গ্রেফতার করেছে শ্যামপুকুর থানার পুলিশ। অভিযোগ, ওই থানা এলাকায় বিভিন্ন ফিডার বক্স থেকে ২৭টি টিটিএম ফিউজ চুরি গিয়েছে। মঙ্গলবার দুপুরে বিদ্যুৎ সংস্থা সিইএসসি-র উত্তর কলকাতার সিনিয়র ডেপুটি ম্যানেজার গৌতম বসাক শ্যামপুকুর থানায় এ নিয়ে লিখিত অভিযোগ জানান। পুলিশ জানায়, সোমবার রাতে তাঁদের ভূপেন বসু অ্যাভিনিউ, বিধান সরণি সহ বিভিন্ন জায়গার বিদ্যুৎ সরবরাহের ফিডার বক্স থেকে ওই সব ফিউজ চুরি যায়। অভিযোগ পেয়ে পুলিশ ভূপেন বসু অ্যাভিনিউ, বিধান সরণি-সহ ওই সব এলাকার সিসিটিভি ফুটেজ খতিয়ে দেখে নকুলকে গ্রেফতার করে। সিইএসসি সূত্রের খবর, ফিউজ চুরির কারণে সংশ্লিষ্ট এলাকাগুলিতে অন্ধকার হয়ে যাচ্ছিল।
পুলিশ জানিয়েছে, ধৃত ব্যক্তি একটি বৈদ্যুতিক ঠিকাদার সংস্থার কর্মী। বুধবার নকুলকে আদালতে পেশ করা হলে বিচারক ২১ ডিসেম্বর পর্যন্ত তাকে পুলিশি হেফাজতে রাখার নির্দেশ দিয়েছে। তদন্তকারীদের দাবি, ধৃত ব্যক্তি চুরির কথা স্বীকার করেছে। তবে ফিউজগুলি সে বিক্রি করে দিয়েছে বলে দাবি পুলিশের। তাঁদের অনুমান, নকুল কোনও চক্রের সঙ্গে যুক্ত। কারণ হিসেবে তদন্তকারীদের দাবি, গত কয়েক মাসে উত্তর কলকাতার বিভিন্ন জায়গা থেকে চুরি গেছে ওই ধরনের ফিউজ। শ্যামপুকুর থানা ছাড়াও চিৎপুর, জোড়াবাগান সহ বিভিন্ন থানায় অভিযোগও দায়ের করা হয়েছিল।
তদন্তকারীদের দাবি, বৈদ্যুতিক ঠিকাদার সংস্থার কর্মী হওয়ার সুযোগে নকুল ওই ফিডার বক্সগুলির নকল চাবি তৈরি করে রাতের অন্ধকারে ‘অপারেশন’ চালাত।