সল্টলেকের সুকান্তনগরে এক মহিলাকে হত্যা করে পালাল দুষ্কৃতীরা। ঘটনায় চাঞ্চল্য ছড়িয়েছে সুকান্তনগরে। মঙ্গলবার দুপুরের ঘটনা। মৃতের নাম, মালতী দাস (৬৫)। প্রাথমিক তদন্তে পুলিশের অনুমান, গলায় গামছার ফাঁস লাগিয়ে হত্যা করা হয়েছে ওই মহিলাকে।
পুলিশ সূত্রে খবর, মঙ্গলবার দুপুর তিনটের ঘটনা বলে প্রাথমিক তদন্তে অনুমান। সুকান্তনগরের এফ ব্লকে একটি চারতলার বাড়ির তিনতলার ফ্ল্যাটে একাই থাকতেন ওই মহিলা।
ওই মহিলা পরিচারিকার কাজের পাশাপাশি স্থানীয় একটি কীর্তনের দলে ছিলেন। বিকেল গড়িয়ে গেলেও মালতী নামছেন না দেখে সেই কীর্তনের দলের এক মহিলা সদস্য তাঁর ফ্ল্যাটে যান। দরজা ভেজানো ছিল। ধাক্কা দিয়ে দরজা খুলতেই তিনি দেখেন, মেঝেতে মালতী পড়ে রয়েছেন। গলায় গামছার ফাঁস লাগানো।
তিনি খবর দেন বাড়ি মালিককে। বাড়ি মালিক স্থানীয় ৩৫ নম্বর ওয়ার্ডের কাউন্সিলর জয়দেব নস্করকে খবর দেন। সন্ধ্যা সাড়ে ছ’টা নাগাদ পুলিশ খবর পায়। ঘটনাস্থলে যান স্থানীয় কাউন্সিলরও।
পুলিশ সূত্রের খবর, পুলিশ ঘটনাস্থলে পৌঁছে দেখে, মহিলার দেহ মেঝেতে পড়ে রয়েছে। পরণে কাপড় এলোমেলো। হাতে আংটি, চুড়ি থাকলেও কানে দুল ছিল না। গলায় গামছার ফাঁস লাগানো।
প্রাথমিক অনুসন্ধানের পরে বিধাননগরের এক পুলিশ কর্তা বলেন, ‘‘ওই মহিলাকে হত্যা করা হয়েছে। কিন্তু কী কারণে এই খুন তা খতিয়ে দেখা হচ্ছে।’’
তবে স্থানীয় বাসিন্দাদের একাংশ জানান, মহিলার ঘর লণ্ডভণ্ড করা হয়েছে। মহিলার কাছে থাকা টাকাপয়সা কিংবা অন্যান্য সামগ্রী মিলছে না বলেও একাংশের দাবি। এমনকী ওই মহিলাকে শারীরিক নির্যাতন করা হয়েছে। তাঁর শরীরে একাধিক জায়গায় আঘাতের চিহ্ন রয়েছে।
পুলিশ অবশ্য ওই বাড়িতে লুঠপাট কিংবা মহিলাকে শারীরিক নির্যাতনের কথা স্বীকার করেনি। তবে এক পুলিশ কর্তা বলেন, ‘‘ময়না তদন্তের পরে কয়েকটি বিষয়ে নিশ্চিত হওয়া যাবে। শারীরিক নির্যাতনের বিষয়টি খতিয়ে দেখা হবে।’’
স্থানীয় সূত্রে খবর, ওই মহিলা নিজের বাড়ি এক প্রোমোটারকে দিয়েছিলেন। সেখানে বাড়ি তৈরি হলে নিজের ফ্ল্যাট বিক্রি করে দিয়ে সুকান্তনগরে এফ ব্লকে আর একটি ফ্ল্যাট কিনে চলে যান। স্থানীয় এক তৃণমূল নেতা জানান, মহিলা একাই থাকতেন। সুকান্তনগরেই তাঁর ছেলে ও পুত্রবধূ থাকেন।
কিন্তু ওই মহিলাকে কীসের জন্য খুন করা হল? পুলিশ জানিয়েছে, প্রাথমিক অনুসন্ধানে কিছু সূত্র মিললেও এখনও খুনের প্রকৃত কারণ মেলেনি। তবে ওই মহিলার সঙ্গে কয়েক জনের যোগাযোগ ছিল, তাঁদের সম্পর্কে খোঁজ চলছে।