এ যেন সেই পুরনো ‘ঠগি’র গল্প! তবে ‘শিকার’-কে ফাঁদে ফেলার কায়দাটা আধুনিক।
সম্প্রতি গড়িয়া স্টেশন সংলগ্ন এলাকা থেকে এক প্রৌঢ়কে আহত অবস্থায় উদ্ধার করে পুলিশ। তদন্তকারীদের কাছে ওই প্রৌঢ় জানান যে, বিজ্ঞাপন দেখে একটি ম্যাসাজ পার্লারের সঙ্গে যোগাযোগ করলে ওই পার্লারের লোকেরাই তাঁর থেকে কয়েক হাজার টাকা লুট করে। এর পরে মারধর করে তাঁকে চলন্ত গাড়ি থেকে রাস্তার পাশে ফেলে দেওয়া হয় বলে অভিযোগ। তদন্তে নেমে পুলিশ গত শনিবার দু’জনকে গ্রেফতার করেছে। বাকিদের খোঁজ চলছে।
পুলিশের বক্তব্য, এ ভাবেই শহরের বিভিন্ন জায়গায় গজিয়েছে প্রতারণা চক্র। ওই প্রৌঢ়ের ঘটনা তার উদাহরণ মাত্র। পুলিশ সূত্রে খবর, বিজ্ঞাপন দেখে রনি নামে এক যুবকের সঙ্গে আলাপ হয়েছিল ওই প্রৌঢ়ের। রনির মাধ্যমে আগে দু’বার একাধিক ম্যাসাজ পার্লারে গিয়েছিলেন ওই প্রৌঢ়। সম্প্রতি আরও এক বার ম্যাসাজ পার্লারে যাওয়ার জন্য তাঁকে নিউ গ়়ড়িয়ায় আসতে বলে রনি। অভিযোগকারীর দাবি, তিনি সেখানে পৌঁছে দেখেন, রনি গা়ড়ি নিয়ে অপেক্ষা করছে। সঙ্গে আরও কয়েক জন রয়েছে। অভিযোগ, ওই প্রৌঢ়কে তুলে গাড়ি চলতে শুরু করার পরেই টাকা দাবি করে রনি। এমনকি, টাকা না দিলে ওই প্রৌঢ়ের কীর্তিকলাপ তাঁর পরিবার-পরিচিতদের কাছে ফাঁস করে দেওয়ার হুমকিও দেয় রনি ও তার দলবল। বাধ্য হয়ে ওই প্রৌঢ় প্রথমে ২ হাজার এবং পরে আরও ৬ হাজার টাকা দেন। এর পরেই তাঁকে মারধর করে চলন্ত গাড়ি থেকে ফেলে দেয় রনি ও তার সঙ্গীরা।
তদন্তে নেমে এলাকায় সিসি ক্যামেরার ফুটেজ দেখে গাড়ির নম্বর জানতে পারে পুলিশ। সেই সূত্র ধরে শনিবার রনি ও রানা নামে তার এক সঙ্গীকে গ্রেফতার করা হয়েছে। চলতি মাসেই ওই প্রৌঢ়কে দিয়ে ধৃতদের শনাক্তকরণ করানো হবে বলে আদালত সূত্রের খবর। এই চক্রের বাকিদের খোঁজে তল্লাশি চলছে।
তদন্তকারীরা জানাচ্ছেন, ওই প্রৌঢ় টালিগঞ্জ এবং রনি গড়িয়ার বাসিন্দা। সে এবং তার শাগরেদরা নিয়মিত নাইটক্লাবে যাতায়াত করে। ‘বার সিঙ্গার’-দের এজেন্ট হিসেবেও কাজ করে। সহজে বেশি টাকা আয়ের জন্য ম্যাসাজ পার্লারের টোপ দিয়ে মূলত বয়স্কদের ‘শিকার’ হিসেবে বেছে নিত রনি ও রানা। শুধু অভিযোগকারীই নন, আরও কয়েক জনকে তারা এ ভাবে লুট করেছে বলে পুলিশের দাবি।