রত্না চট্টোপাধ্যায় ও শোভন চট্টোপাধ্যায়।—ফাইল চিত্র।
শোভন-রত্নার বিচ্ছেদ মামলায় যে ভাবে সওয়াল-জবাব চলছে, তাতে অসন্তুষ্ট আলিপুর আদালতের বিচারক। শুনানির সময়ে যে ভাষায় তাঁকে আক্রমণ করেছেন রত্নার আইনজীবী, তা একেবারেই অভিপ্রেত নয় বলে মনে করছেন মামলাটির বিচারক তথা অতিরিক্ত জেলা জজ পার্থসারথি চক্রবর্তী। নিজের পর্যবেক্ষণে তিনি সে কথা লিখেছেন এবং তা জেলা জজের কাছে পাঠিয়ে দিয়েছেন বলে জানা গিয়েছে। ৪ ডিসেম্বরের শুনানিতে বিচারকের সঙ্গে যে ভাবে কথা বলা হয়েছে, তা একেবারেই কাঙ্খিত নয় বলে মনে করছেন শোভন চট্টোপাধ্যায়ের কৌঁসুলিও।
শোভন চট্টোপাধ্যায় এবং রত্না চট্টোপাধ্যায়ের বিবাহ বিচ্ছেদের মামলার নিষ্পত্তি অস্বাভাবিক দ্রুততার সঙ্গে করতে চাইছেন বিচারক— এই রকম অভিযোগ একাধিক বার করা হয়েছে রত্নার আইনজীবীর তরফে। শোভন শিবিরের দাবি, রত্না চাইছেন মামলা বিলম্বিত করে বিচ্ছেদ আটকে রাখতে। তাই বার বার বিচারকের উপরে চাপ সৃষ্টি করা হচ্ছে মামলা ছেড়ে দেওয়ার জন্য।
শোভন-রত্নার বিচ্ছেদ মামলার বিচার প্রথমে করছিলেন অতিরিক্ত জেলা জজ-১৬। তিনি মাঝপথে মামলা ছেড়ে দেন এবং জেলা জজের কাছে ফেরত পাঠিয়ে দেন। তার পরে মামলাটি অতিরিক্ত জেলা জজ-৬ পার্থসারথি চক্রবর্তীর এজলাসে পাঠিয়েছিলেন জেলা জজ। এ বার তাঁর উপরেও মামলা ছেড়ে দেওয়ার জন্য চাপ সৃষ্টি করা হচ্ছে বলে অভিযোগ।
আরও পড়ুন: হিন্দু সহকর্মীর মৃত্যুতে অশৌচ পালন করলেন মুসলিম শিক্ষক
আরও পড়ুন: হেফাজতে মুখে কুলুপ অনিন্দিতার, রজত খুনে এখনও দিশাহারা পুলিশ
৪ ডিসেম্বর অর্থাৎ মঙ্গলবার যে শুনানি হয়েছে, তাতে রত্না চট্টোপাধ্যায়ের আইনজীবী অত্যন্ত আপত্তিকর কথাবার্তা বিচারককে বলেছেন বলে অভিযোগ। এই মামলা তাড়াতাড়ি শেষ করে আপনি কী পাবেন, আপনি কি সুপ্রিম কোর্টের বিচারপতি হবেন?— এই রকম প্রশ্নও বিচারকের উদ্দেশে ছুড়ে দেওয়া হয় বলে খবর। বুধবার জানা গিয়েছে যে, মঙ্গলবারই শুনানির শেষে মামলাটি সম্পর্কে নিজের পর্যবেক্ষণ জেলা জজকে পাঠিয়েছেন অতিরিক্ত জেলা জজ। তাঁকে যে ভাষায় আক্রমণ করা হচ্ছে, তা যে অত্যন্ত আপত্তিকর এবং অনভিপ্রেত, সে কথা জেলা জজকে লিখিত ভাবে পার্থসারথি চক্রবর্তী জানিয়েছেন বলেও জানা গিয়েছে।
শুনানির সময়ে বিচারক সম্পর্কে যে সব মন্তব্য করা হয়েছে, তা যে অভিপ্রেত নয়, সে কথা জানিয়েছেন শোভন চট্টোপাধ্যায়ের কৌঁসুলি সুসন্দীপ পাঠকও। তিনি আনন্দবাজারকে বলেছেন, ‘‘এই মামলাটাকে প্রথম থেকেই বিলম্বিত করতে চাইছে একটি পক্ষ। মামলার নিষ্পত্তি হতে যাতে দেরি হয়, তা নিশ্চিত করতে যা কিছু করা সম্ভব, তা তো করা হচ্ছেই। যা করা অসম্ভব, তা-ও করা হচ্ছে।’’ মঙ্গলবারের শুনানিতে মামলার একটি পক্ষ যে ধরনের মন্তব্য করেছে, তাতে বিচারকের অসন্তোষ একেবারেই অস্বাভাবিক নয় বলেই সুসন্দীপের মত।