মন্দিরের সামনে নুসরত জাহান। —নিজস্ব চিত্র।
মঙ্গলবার সকালে ইডির দফতরে হাজিরা দিয়েছিলেন। সন্ধ্যায় সেখান থেকে বেরিয়েই নুসরত জাহান সোজা গিয়ে হাজির হলেন মন্দিরে। মাথায় ওড়না জড়িয়ে পুজোর থালা নিয়ে পুজো দিলেন তিনি। সদ্য ইডির ছ’ ঘণ্টার প্রশ্নবাণ সামলে এসেছেন। তার পরেই ঈশ্বরের থানে। ফলে প্রশ্ন উঠেছিল, সঙ্কট কি টলল? কার মঙ্গল কামনায় পুজো দিলেন অভিনেত্রী? সিজিও চত্বরে বিশেষ কথা না বললেও মন্দির চত্বরে প্রশ্ন এড়ালেন না সাংসদ অভিনেত্রী। বরং নিজেই সংবাদমাধ্যমের প্রতিনিধিদের বললেন, ‘‘আপনারা আস্তে কথা বলুন। এটা পুজোর জায়গা। আমি যা বলার বলছি।’’
সল্টলেকের সিজিও কমপ্লেক্স থেকে মা ফ্লাইওভার ধরে এলে অভিনেত্রীর পাম অ্যাভিনিউয়ের ফ্ল্যাটে পৌঁছতে সময় লাগে মিনিট চল্লিশেক। সকালে এখান থেকেই ইডির দফতরের উদ্দেশে রওনা হয়েছিলেন নুসরত। সময়ের আগেই পৌঁছে গিয়েছিলেন সিজিওতে। ফেরার সময় অবশ্য তাঁর গাড়ি বাড়ির রাস্তা নিল না। বালিগঞ্জ পার্ক ছাড়িয়ে সোজা বালিগঞ্জ সার্কুলার রোড ধরে পৌঁছলেন দেশপ্রিয় পার্কের এক হনুমান মন্দিরে। নুসরতকে অনুসরণ করে আসছিলেন সাংবাদিকরাও। সাংসদ অভিনেত্রী মন্দির চত্বরে নামতেই তাঁকে ঘিরে ধরে প্রশ্ন করেন তাঁরা। ইডির দফতরের সামনে এক কথায় প্রশ্নের জবাব দিয়েছিলেন নুসরত। মন্দির চত্বরে অবশ্য পরিষ্কার জানালেন, ইডিকে তাঁর যা যা বলার সবটাই বলেছেন। ইডি যা জানতে চেয়েছিল, সেই সব প্রশ্নের জবাবও দিয়েছেন। তাঁকে কি আবার ডেকে পাঠানো হবে? এ প্রশ্নের জবাবে নুসরত বলেন, ‘‘আমার যা যা বলার সবই বলেছি। যা যা দেওয়ার ছিল, দিয়ে এসেছি। এর পরও যদি ওঁদের মনে হয়। যদি আমাকে ডেকে পাঠান, আমি আবার যাব। সহযোগিতা করব।’’ কিন্তু সাংসদ অভিনেত্রী হঠাৎ মন্দিরে কেন? উড়ে আসে সেই প্রশ্নও।
বসিরহাটের তৃণমূল সাংসদের কাছে জানতে চাওয়া হয়? কার জন্য পুজো দিলেন? সম্ভবত স্বস্তির কোনও কারণ ঘটেছে কি না তা-ও জানতে চাওয়া হয় তাঁর কাছে। জবাবে এক গাল হেসে অভিনেত্রী বলেন, ‘‘না না, আজ মঙ্গলবার তো। আজকে বলে আলাদা কোনও ব্যাপার নয়, আমি প্রতি মঙ্গলবার এখানে আসি। পুজো দিই। শনিবারও আসি।’’
উল্লেখ্য, ফ্ল্যাট দেওয়ার নামে লক্ষ লক্ষ টাকা প্রতারণার অভিযোগ রয়েছে নুসরতের বিরুদ্ধে। অভিযোগে বলা হয়েছে, ওই প্রতারণার ঘটনায় যে সংস্থার নাম জড়িত, নুসরত এক সময় তার ডিরেক্টর পদে ছিলেন। ২০১৪-১৫ সালে ৪০০-র বেশি প্রবীণ নাগরিকের থেকে সাড়ে পাঁচ লক্ষ টাকা করে নিয়েছিল এই সংস্থা। বদলে তাঁদের এক হাজার বর্গফুটের ফ্ল্যাট দেওয়ার প্রতিশ্রুতি দেওয়া হয়েছিল। যদিও তাঁরা সেই ফ্ল্যাট পাননি। টাকাও ফেরত পাননি।সাংসদ অভিনেত্রীর বিরুদ্ধে ফ্ল্যাট প্রতারণার অভিযোগ এনেছিলেন বিজেপি নেতা শঙ্কুদেব পণ্ডা। ইডির কাছেই সরাসরি অভিযোগ জানিয়েছিলেন তিনি। তার পরই তাঁকে সল্টলেকে নিজেদের দফতরে তলব করে কেন্দ্রীয় তদন্তকারী সংস্থা ইডি।