ফাইল চিত্র।
মাত্র ৪৮ ঘণ্টার ব্যবধান। তার মধ্যেই সংক্রমিতের সংখ্যা পৌঁছে গিয়েছে দ্বিগুণের কাছাকাছি! এ বারেও তাই প্রশাসনের মাথাব্যথার কারণ হয়ে দাঁড়াচ্ছে পুরসভার ১০ নম্বর বরো।
অতিমারির আগের দু’টি ঢেউয়ে প্রশাসনের চিন্তা বাড়িয়েছিল ১০ নম্বর বরোই। সেই সময়ে এই বরোতেই সংক্রমিতের সংখ্যা ছিল সর্বাধিক। এ বারও ছবিটা আলাদা নয়। পরিসংখ্যান বলছে, গত ৭ জানুয়ারি শুক্রবার সেখানে আক্রান্তের সংখ্যা ছিল ৭৫১। ৯ জানুয়ারি যা বেড়ে দাঁড়ায় ১৩১০-এ, অর্থাৎ প্রায় দ্বিগুণ! দ্বিতীয় ঢেউয়ে এই বরোতেই দৈনিক আক্রান্তের সর্বাধিক সংখ্যা ছিল প্রায় ৯০০।
পুর স্বাস্থ্য দফতরের তথ্যানুযায়ী, ৯ জানুয়ারি ওই বরোর ৯৩ নম্বর ওয়ার্ডে আক্রান্ত হন ২০৬ জন। ৯২ ও ৮১ নম্বর ওয়ার্ডে সেই সংখ্যা ছিল যথাক্রমে ১৩৩ ও ১৬৬। ১০ নম্বর বরো এলাকায় নিউ আলিপুর, কসবা, গরফা, লেক, যোধপুর পার্ক, নেতাজিনগর, গল্ফ গ্রিন, রিজেন্ট এস্টেট, যাদবপুর, টালিগঞ্জের একাংশে সংক্রমিতের সংখ্যা সর্বাধিক। পুর স্বাস্থ্য দফতরের এক আধিকারিক বলেন, ‘‘বেশির ভাগ আবাসনের বাসিন্দারাই আক্রান্ত হচ্ছেন। সব আবাসনকে সতর্ক করেছি। করোনা-বিধি কঠোর ভাবে মানতে যাবতীয় নির্দেশিকা পাঠানো হয়েছে।’’ আর এক পুর আধিকারিক জানাচ্ছেন, ৮১, ৯২ ও ৯৩ নম্বর ওয়ার্ডেই সংক্রমণ বেশি ছড়াচ্ছে।
পাশাপাশি চিন্তা বাড়াচ্ছে সাত ও আট নম্বর বরোও। পরিসংখ্যান বলছে, ৭ জানুয়ারি সাত নম্বর বরোয় আক্রান্তের সংখ্যা ছিল ৫০৯, যা ৯ জানুয়ারিতে বেড়ে হয় ৭৩৬। আট নম্বর বরোয় গত ৭ ও ৯ তারিখ আক্রান্তের সংখ্যা ছিল যথাক্রমে ৭৫১ এবং ৯৩৭। পুরসভা সূত্রের খবর, সাত নম্বর বরোর ট্যাংরা, শেক্সপিয়র সরণি, কড়েয়া, তপসিয়া ও তিলজলার একাংশে হু হু করে বাড়ছে করোনা। এক পুর স্বাস্থ্য আধিকারিকের কথায়, ‘‘এখানে ৬৩ নম্বর ওয়ার্ডের শেক্সপিয়র সরণিতে সংক্রমিতের সংখ্যা সব চেয়ে বেশি।’’ ৮ নম্বর বরোর গড়িয়াহাট, বালিগঞ্জ, ভবানীপুর, কালীঘাট, টালিগঞ্জ, রবীন্দ্র সরোবর, লেকের একাংশেও প্রতিদিনই নতুন করে সংক্রমিত হচ্ছেন বাসিন্দারা। সংক্রমণ ছেয়ে গিয়েছে গড়িয়াহাট ও বালিগঞ্জের বিভিন্ন আবাসনেও।
পুরসভার পরিসংখ্যান অনুযায়ী, এ বারও উত্তরের তুলনায় দক্ষিণে সংক্রমণের হার বেশি। আগের দু’টি ঢেউয়ে সংক্রমিতের সংখ্যার নিরিখে উত্তরকে টেক্কা দিয়েছিল দক্ষিণ। তবে এ বার চিন্তা বাড়ছে উত্তরের তিন নম্বর বরো নিয়েও। সেখানে গত ৯ জানুয়ারি আক্রান্তের সংখ্যা ছিল ৪৬৬। ওই বরো এলাকার উল্টোডাঙা, মানিকতলা, ফুলবাগান, বেলেঘাটায় সংক্রমণ বেশি ছড়াচ্ছে।
তবে সংক্রমণ বাড়লেও এখনও কোভিড-বিধি মানতে অনীহা দেখা যাচ্ছে অনেকের মধ্যেই। এ প্রসঙ্গে মেয়র ফিরহাদ হাকিম সোমবার বলেন, ‘‘দুঃখের সঙ্গে জানাচ্ছি, মানুষ এখনও সচেতন হচ্ছেন না। এখনও জোরকদমে কেনাকাটা চলছে। গড়িয়াহাট, নিউ মার্কেটের ছবি সে কথাই বলছে। আমার পাড়ায় কিছু মানুষকে মাস্ক ছাড়া ভিড় করে তাস খেলতে দেখলাম। ওঁদের সচেতন করতে হবে।’’