শহরের অভিজাত এলাকার ব্যাঙ্কোয়েট ভাড়া করে চলছে পার্টি। অতিথিদের হাতে বিদেশি মদ ভরা গ্লাস। সেখানে নামী সংস্থার কর্ণধার, ব্যবসা প্রতিষ্ঠানের মালিক, টলিউডের তারকা— কে নেই!
আচমকা রাত দশটা নাগাদ হানা দিলেন রাজ্য আবগারি দফতরের অফিসারেরা। জানা গেল, ব্যাঙ্কোয়েট ভাড়া নিয়ে এ ভাবে মদ্যপানের আসর বসলে তার জন্য আবগারি দফতরের যে ‘সার্ভিস পারমিট’ লাগে, তা নেওয়া হয়নি। সমস্ত মদ বাজেয়াপ্ত করে, ব্যাঙ্কোয়েট ম্যানেজারকে গ্রেফতার করলেন অফিসারেরা। অবাক অতিথিরা জানালেন, এমন নিয়মের কথা তাঁদের জানা নেই। এমনকী, যিনি পার্টির আয়োজন করেছিলেন, তিনিও জানতেন না।
অথচ ওই পারমিট পেতে মাত্র দু’হাজার টাকা জমা দিতে হয়। যত বিদেশি মদ খাওয়া হবে, তার লিটার প্রতি ৩০০ টাকা করে আবগারি দফতরকে দিতে হয়। তা ছাড়া পার্টির আয়োজকের পরিচয়পত্র এবং সংশ্লিষ্ট ব্যাঙ্কোয়েট মালিকের ‘নো অবজেকশন’ দিলেই মেলে পারমিট। এমন পার্টির আয়োজকদের কাছে এই টাকা যৎসামান্যই। শুধু নিয়ম না জানায় এই বিড়ম্বনায় পড়তে হয়।
বৃহস্পতিবার শেক্সপিয়র সরণির এক ব্যাঙ্কোয়েট হলে ঠিক এমনই একটি ঘটনা ঘটেছে। রাজ্য আবগারি দফতরের দক্ষিণ কলকাতার যুগ্ম কমিশনার নীলাঞ্জনা বন্দ্যোপাধ্যায় জানিয়েছেন, একটি নামী সংস্থার ২৫ বছর পূর্তির ওই পার্টি থেকে ব্যাঙ্কোয়েট ম্যানেজার অনিল ছাকরাকে গ্রেফতার করা হয়। বাজেয়াপ্ত হয়েছে ১৪ লিটার বিদেশি মদ, দেড় লিটার ভারতের তৈরি বিদেশি মদ এবং তিন লিটার বিয়ার। নীলা়ঞ্জনাদেবী বলেন, ‘‘এখন ওয়েবসাইটেই সার্ভিস পারমিটের জন্য আবেদন করা যায়। দু’হাজার টাকা যে জমা নেওয়া হয়, তা পরে ফেরতও দেওয়া হয়। শুধু সে দিন পার্টিতে যত মদ খাওয়া হবে, তার উপরে আবগারি শুল্ক দিতে হয়।’’
যুগ্ম কমিশনার জানিয়েছেন, ইদানীং এ রকম প্রচুর পার্টির কথা শোনা যাচ্ছে, যেখানে ওই সার্ভিস পারমিট ছাড়াই মদের আসর বসছে। তাঁর কথায়, ‘‘পার্টির আয়োজকেরা এই পারমিটের কথা না জানলেও ব্যাঙ্কোয়েট কর্তৃপক্ষের তা দায়িত্ব নিয়ে তাঁদের জানানোর কথা।’’ শেক্সপিয়র সরণির ওই পার্টির আয়োজকদের অভিযোগ, মদ পরিবেশনের কথা বলা সত্ত্বেও ব্যাঙ্কোয়েট তাঁদের পারমিটের কথা জানায়নি।
ভ্রম সংশোধন: এই খবরটিতে যে ২ হাজার টাকা জমা দেওয়ার কথা উল্লেখ করা হয়েছে তা আসলে ফেরতযোগ্য নয়।