প্রতীকী ছবি।
আয়ুর্বেদিক ও ইউনানি চিকিৎসকেরা মৃত্যুর শংসাপত্র (ডেথ সার্টিফিকেট) লিখতে পারেন কি না, তা নিয়ে সংশয় ছিল। যদিও তাঁরা সেটি দিতেন। কিন্তু মাঝেমধ্যেই অভিযোগ উঠত, বহু জায়গায় ওই চিকিৎসকদের দেওয়া শংসাপত্র গ্রাহ্য হচ্ছে না। এ বার গেজেট বিজ্ঞপ্তি জারি করে স্বাস্থ্য দফতর স্পষ্ট জানিয়ে দিল, ওই চিকিৎসকেরা ডেথ সার্টিফিকেট দিতে পারবেন। যদিও বিষয়টি নিয়ে মতভেদ রয়েছে অ্যালোপ্যাথি চিকিৎসকদের বিভিন্ন সংগঠনের মধ্যে।
রাজ্য আয়ুর্বেদ কাউন্সিলের অধিকর্তা দেবাশিস ঘোষ জানাচ্ছেন, ১৯৬১ সালের পশ্চিমবঙ্গ আয়ুর্বেদিক পরিষদের আইনে বলা ছিল, আয়ুর্বেদিক ও ইউনানি চিকিৎসকেরা শারীরিক সক্ষমতার শংসাপত্র (মেডিক্যাল ফিটনেস) এবং ডেথ সার্টিফিকেট দিতে পারবেন। ২০২০ সালে ‘ন্যাশনাল কমিশন ফর ইন্ডিয়ান সিস্টেম অব মেডিসিন’-এর আইনেও বিষয়টির উল্লেখ করা হয়েছিল। দেবাশিস বলেন, “আয়ুর্বেদিক চিকিৎসকেরা আগেও ডেথ সার্টিফিকেট দিতেন। গেজেট নোটিফিকেশন হওয়ায় সব স্তরে সংশয় দূর হল।’’
প্রসঙ্গত, হোমিয়োপ্যাথি চিকিৎসকেরা ডেথ সার্টিফিকেট দিতে পারেন। কিন্তু আয়ুর্বেদিক ও ইউনানি চিকিৎসকদের একাংশের অভিযোগ ছিল, অনেক পুরসভা ও পঞ্চায়েত এলাকায় মৃতদেহ সৎকারের সময়ে তাঁদের দেওয়া শংসাপত্র গ্রাহ্য হচ্ছে না। দেবাশিস জানাচ্ছেন, জন্ম-মৃত্যুর পোর্টাল চালু হওয়ার সময়ে তাঁদের থেকেও বিষয়টি জানতে চায় স্বাস্থ্য ভবন। সেই সময়ে তাঁরা সমস্ত নথি জমা দিয়েছিলেন। এক স্বাস্থ্যকর্তার কথায়, “পোর্টালে তথ্য আপলোড করার সময়েও আর কোনও সংশয় থাকবে না। এর ফলে রাজ্যের কয়েক হাজার আয়ুর্বেদিক এবং কয়েকশো ইউনানি চিকিৎসক উপকৃত হবেন।’’
যদিও ‘সার্ভিস ডক্টর্স ফোরাম’-এর সাধারণ সম্পাদক সজল বিশ্বাস বলেন, “আধুনিক পদ্ধতিতে চিকিৎসা চলাকালীন কেউ মারা গেলে বা চিকিৎসা চলাকালীন কারও মেডিক্যাল শংসাপত্র প্রয়োজন হলে তা আয়ুষ চিকিৎসকদের থেকে পাওয়া কাম্য নয়। তা হবে ক্রসপ্যাথির শামিল। বর্তমান সরকার যে ভাবে ক্রসপ্যাথিকে উৎসাহ দিচ্ছে, তা চিকিৎসা বিজ্ঞানের জন্য ভয়ঙ্কর।’’ বিষয়টি নিয়ে পরে বিতর্ক হতে পারে বলে মত ‘অ্যাসোসিয়েশন অব হেলথ সার্ভিস ডক্টর্স’-এর সাধারণ সম্পাদক মানস গুমটার।