ধাপা মৌজা পূর্ব কলকাতা জলাভূমি এলাকার অংশ। ফাইল ছবি
ফাঁকা জমি জবরদখলের ঘটনা হামেশাই ঘটে থাকে। এ বার জবরদখলের হাত থেকে বাদ পড়ল না ধাপাও। দখলদারির প্রসঙ্গ উঠে এল খোদ মেয়র ফিরহাদ হাকিমের বক্তব্যে। সোমবার ধাপায় বায়ো সিএনজি প্লান্টের উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে ফিরহাদ বলেন, ‘‘ধাপার মাঠ তৈরি করা হচ্ছে দখল করার জন্য নয়। অনেকেই ধাপায় এসে বসে যাচ্ছেন। এ ভাবে ধাপা দখল করা যাবে না।’’
এমনিতে ধাপা মৌজা পূর্ব কলকাতা জলাভূমি এলাকার অংশ। পূর্ব কলকাতা জলাভূমি জবরদখল করা ও সেখানে বেআইনি নির্মাণ হওয়া নিয়ে দীর্ঘদিন ধরেই সরব পরিবেশকর্মীদের একাংশ। এ বার সেই কথাই শোনা গেল মেয়র তথা রাজ্যের পুর ও নগরোন্নয়নমন্ত্রীর মুখে।
ধাপার বায়ো সিএনজি প্লান্ট তৈরিতে ২.৭ কোটি টাকা খরচ হয়েছে বলে ফিরহাদ জানিয়েছেন। তাঁর বক্তব্য, এ রকম আরও প্লান্ট তৈরির পরিকল্পনা রয়েছে। প্লান্টে তৈরি জৈব গ্যাস পুরসভার গাড়ির তেলের খরচ বাঁচাবে। কারণ, ওই গ্যাস গাড়ির জ্বালানি হিসাবে ব্যবহার করা যাবে। মেয়রের কথায়, ‘‘এক-একটি ডিজ়েল গাড়ি সিএনজি-তে পরিবর্তিত করা খুব খরচসাপেক্ষ নয়। গাড়িপিছু পাঁচ-সাড়ে পাঁচ লক্ষ টাকা খরচ হয়। ফলে, বর্জ্য থেকে উৎপন্ন গ্যাস গাড়ির জ্বালানি হিসাবে ব্যবহারের পাশাপাশি বর্জ্য থেকে উৎপন্ন সারও কাজে লাগানো যাবে।’’ একই ভাবে নির্মাণ-বর্জ্য থেকে বালি তৈরির পরিকল্পনা রয়েছে। অর্থাৎ, আবর্জনা থেকে ব্যবহারযোগ্য সম্পদ তৈরির ক্ষেত্রে পুরসভা জোর দিচ্ছে বলে মেয়র জানিয়েছেন।
এ দিন স্তূপীকৃত বর্জ্যের (লিগ্যাসি ওয়েস্ট) কথাও মেয়রের বক্তব্যে উঠে আসে। এমনিতে স্তূপীকৃত বর্জ্য নিয়ে যথেষ্ট অস্বস্তিতে কলকাতা পুর প্রশাসন তথা রাজ্য সরকার। কারণ, জাতীয় পরিবেশ আদালত রাজ্যের স্তূপীকৃত বর্জ্যের প্রক্রিয়াকরণ নিয়ে অসন্তোষ প্রকাশ করেছে। কিছু দিন আগে কঠিন ও তরল বর্জ্য প্রক্রিয়াকরণে ব্যর্থতার জন্য তারা রাজ্যের ক্ষেত্রে সাড়ে তিন হাজার কোটি টাকা পরিবেশগত ক্ষতিপূরণও ধার্য করেছিল। তবে এ দিন মেয়র দাবি করেন, ‘‘২০২৪ সালের পরে রাজ্যে কোথাও লিগ্যাসি ওয়েস্ট থাকবে না।’’
পুরসভার জঞ্জাল অপসারণ দফতরের দায়িত্বপ্রাপ্ত মেয়র পারিষদ দেবব্রত মজুমদারও দাবি করেন, আগামী বছর ধাপায় জঞ্জালের একটা স্তূপও দেখা যাবে না। কারণ, স্তূপীকৃত জঞ্জালের প্রক্রিয়াকরণ শুরু করেছে পুরসভা। ভবিষ্যতের পরিকল্পনা সম্পর্কে দেবব্রত বলেছেন, ‘‘আমাদের লক্ষ্য, ৫০০ মেট্রিক টনের বায়ো সিএনজি প্লান্ট তৈরি করা।’’