Coronavirus

Coronavirus: গণ্ডিবদ্ধ এলাকায় বজ্র আঁটুনির বদলে ফস্কা গেরো

এ শহরে কন্টেনমেন্ট জ়োন বা গণ্ডিবদ্ধ এলাকার সংখ্যা এক লাফে ২৯ থেকে বেড়ে হয়েছে ৪৪।

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা 

কলকাতা শেষ আপডেট: ১৬ জানুয়ারি ২০২২ ০৮:৫১
Share:

অসতর্ক:বেলেঘাটার রামকৃষ্ণ নস্কর লেনের একটি বাড়ি কন্টেনমেন্ট জ়োন হলেও নেই চিহ্নিত করার কোনও ব্যবস্থা। সেখানেই মাস্ক ছাড়া খেলছে শিশুরা।  ছবি: স্বাতী চক্রবর্তী

শনিবার বিকেল ৩টে। ফুলবাগান এলাকার এক গণ্ডিবদ্ধ আবাসনের বাইরে দাঁড়িয়ে নিজস্ব দুই নিরাপত্তারক্ষী। বাইরে চোখে পড়ল না কোনও পুলিশি পাহারা বা গার্ডরেল। কার্যত বিনা বাধায় ভিতরে লোক ঢুকছেন, বেরিয়ে আসছেন। একই চিত্র দেখা গিয়েছে দক্ষিণ কলকাতার একাধিক গণ্ডিবদ্ধ এলাকাতেও।

Advertisement

এ শহরে কন্টেনমেন্ট জ়োন বা গণ্ডিবদ্ধ এলাকার সংখ্যা এক লাফে ২৯ থেকে বেড়ে হয়েছে ৪৪। আক্রান্তের সংখ্যাও ঘোরাফেরা করছে সাত হাজারের আশপাশে। কার্যত প্রতিদিনই বাড়ছে এই সংখ্যা। কিন্তু তার পরেও শহরের রাস্তায় সচেতনতা তো বাড়েইনি, উল্টে তার সঙ্গে সমানে পাল্লা দিচ্ছে গণ্ডিবদ্ধ এলাকায় অসচেতনতার দৃশ্যও। চিকিৎসক থেকে প্রশাসন— কার্যত সবার নির্দেশ উড়িয়েই গণ্ডিবদ্ধ এলাকাতেও চলছে দাঁড়িয়ে জটলা, মাস্ক ছাড়া ঘোরাঘুরি থেকে শুরু করে অবাধ যাতায়াত। যে সব এলাকায় রাস্তা গার্ডরেল দিয়ে আটকানো হয়েছে, এমনকি পুলিশি নজরদারিও রয়েছে, সেখানেও লুকিয়ে-চুরিয়ে চলছে বিধিভঙ্গ। গণ্ডিবদ্ধ এলাকার ভিতরে তো বটেই, নজর এড়িয়ে বাইরে বেরিয়েও মাস্ক ছাড়া ঘোরাঘুরি করতে পিছপা হচ্ছেন না অনেকে। ফলে সংক্রমণের আশঙ্কা বাড়ছে। আর তা দেখেই শহরের সচেতন নাগরিকদের একাংশের মন্তব্য, ‘‘এখন তো দেখছি আক্রান্তেরাই বাইরে ঘোরাঘুরি করবেন, আর ঘরে থাকতে হবে সুস্থদের। তাতে যদি রক্ষা পাওয়া যায়।’’

কলকাতায় শুক্রবারই নতুন করে গণ্ডিবদ্ধ এলাকার নাম ঘোষণা করেছে কলকাতা পুরসভা। সেখানে দেখা গিয়েছে, এমন এলাকার সংখ্যা ২৯ থেকে বেড়ে হয়েছে ৪৪। সব থেকে বেশি গণ্ডিবদ্ধ এলাকা রয়েছে বরো ১০-এ।

Advertisement

শনিবার সকালে ট্যাংরার এক গণ্ডিবদ্ধ এলাকার বাইরে গিয়ে দেখা গেল, রাস্তা গার্ডরেল দিয়ে আটকে রাখা হয়েছে। সামনেই রয়েছেন দুই পুলিশকর্মী। কিন্তু এলাকার ভিতরে চলছে অবাধ ঘোরাফেরা। এমনকি, কয়েকটি জায়গায় কয়েক জন মিলে দাঁড়িয়ে জটলা করতেও দেখা গেল। একই ছবি যাদবপুরের এক কন্টেনমেন্ট জ়োনেও। সেখানেও মাস্ক ছাড়া কয়েক জনকে যাতায়াত করতে দেখা গেল। গণ্ডিবদ্ধ আবাসনগুলির ক্ষেত্রে কয়েকটিতে তুলনায় সচেতনতা বেশি দেখা গেলেও বেশির ভাগ ক্ষেত্রেই বিধি মানা হচ্ছে না। হরিদেবপুরে এমনই এক আবাসনের বাইরের নিরাপত্তারক্ষীকে এ নিয়ে প্রশ্ন করতেই তিনি বললেন, ‘‘আগে এখানে কয়েক জন আক্রান্ত ছিলেন। সবাই ঠিক হয়ে গিয়েছেন বলে শুনেছি। দু’-এক জন সংক্রমিত আছেন মনে হয়। ভয় পেয়ে আর কী হবে, এই বার তো তেমন কিছু অসুবিধা হচ্ছে না!’’

শহরবাসীর একাংশের এই অসচেতনতা ভাবাচ্ছে সচেতন নাগরিক থেকে চিকিৎসকদের। লেক থানার গণ্ডিবদ্ধ এলাকার নজরদারিতে থাকা এক পুলিশকর্মী বললেন, ‘‘ধমকে-চমকে আর কত করব! আমাদেরও তো প্রাণের ভয় আছে নাকি। যতটা পারছি আটকানোর চেষ্টা করছি, কিন্তু এখানে কে শুনবে কার কথা।’’

কলকাতা মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালের মেডিসিনের চিকিৎসক অরুণাংশু তালুকদার বলেন, ‘‘এ বার তো মনে হচ্ছে পাখি পড়ানোর মতো করে বোঝাতে হবে। তার পরে যদি হুঁশ ফেরে। এই ভাবে চললে গণ্ডিবদ্ধ এলাকার সংখ্যার পাশাপাশি সংক্রমণ আরও বাড়তে সময় লাগবে না।’’ তবে লালবাজারের এক পুলিশকর্তা বলছেন, ‘‘শহরের পাশাপাশি গণ্ডিবদ্ধ এলাকাতেও নজরদারি রয়েছে। সচেতনতার প্রচার, জীবাণুমুক্ত করার দিকেও জোর দেওয়া হচ্ছে।’’

4

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
আরও পড়ুন
Advertisement