রাস্তা ধোয়া জল থেকে মাছ বাঁচাতে নয়া প্রকল্প

গ্রামাঞ্চলে কৃষি জমিতে কীটনাশকের অবাধ ব্যবহারে ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছে জলাশয়, দিঘি ও পুকুরের প্রাকৃতিক ভারসাম্য। তেমনই শহরের রাস্তা ধোয়া জল পুকুরে মেশায় উধাও হয়ে যাচ্ছে কই, শিঙি, মাগুর, শোলের মতো জিওল মাছের উৎপাদন।

Advertisement

মেহবুব কাদের চৌধুরী

শেষ আপডেট: ১৩ জুলাই ২০১৭ ০১:৩১
Share:

প্রতীকী ছবি।

কলকাতা ও শহরতলির রাস্তা-ধোয়া জল পুকুর ও জলাশয়ে পড়ে নষ্ট হচ্ছে প্রাকৃতিক ভারসাম্য। জলজ প্রাণী এবং উদ্ভিদের বংশবৃদ্ধি তাতে যেমন ব্যাহত হচ্ছে, তেমনই নষ্ট হচ্ছে বাস্তুতন্ত্র। মৎস্য দফতরের সমীক্ষায় ধরা পড়েছে, এর জেরে মার খাচ্ছে মাছ উৎপাদনও।

Advertisement

গ্রামাঞ্চলে কৃষি জমিতে কীটনাশকের অবাধ ব্যবহারে ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছে জলাশয়, দিঘি ও পুকুরের প্রাকৃতিক ভারসাম্য। তেমনই শহরের রাস্তা ধোয়া জল পুকুরে মেশায় উধাও হয়ে যাচ্ছে কই, শিঙি, মাগুর, শোলের মতো জিওল মাছের উৎপাদন। এই শহুরে দূষণ ঠেকাতে উদ্যোগী মৎস্য দফতর। এ ব্যাপারে কোথাও কৃষি দফতর, কোথাও হিডকোর সাহায্য নেওয়া হচ্ছে।

মৎস্যবিজ্ঞানীরা জানাচ্ছেন, পিচ ধোয়া নোংরা জলে বিভিন্ন রাসায়নিক মিশে থাকে। রাজ্য মৎস্যবিজ্ঞান বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যাপক গদাধর দাস বলেন, ‘‘নানা ভাবে জলের দূষণ বেড়ে যাওয়ায় মাছের শরীরে ঘা হয়। অনেক সময়ে দেখা যায় মাছ প্লাস্টিক খেয়ে নিচ্ছে। এর প্রভাব পড়ে মাছের শারীরবৃত্তীয় ক্রিয়ায়।’’

Advertisement

রাস্তার জল যাতে পুকুর কিংবা জলাশয়ে সরাসরি গিয়ে না পড়ে, তার জন্য নিউ টাউন-রাজারহাটে নিকাশি নালার জল শোধন করে তার পরে তা বাগজোলা খাল কিংবা জলাশয়গুলিতে ফেলার প্রকল্প হাতে নিয়েছে হিডকো। সংস্থার চেয়ারম্যান দেবাশিস সেন বলেন, ‘‘রাস্তা ধোয়া জল যাতে বাগজোলা খাল কিংবা জলাশয়ে সরাসরি না পড়ে, তার জন্য বিশেষ ব্যবস্থা নিচ্ছি আমরা।’’

মৎস্যমন্ত্রী চন্দ্রনাথ সিংহ জানাচ্ছেন, হিডকোর ওই ব্যবস্থা সর্বত্র এমনকী গ্রামেও যাতে কার্যকর করা যায়, তার জন্য মৎস্য দফতরের তরফে সচেতনতা বাড়ানো হবে। মন্ত্রী বলেন, ‘‘পিচ ধোওয়া জল যাতে জলাশয়ে না পড়়ে, তার জন্য বিকল্প ব্যবস্থা করতে কলকাতা-সহ রাজ্যের সব পুরসভার কাছে আবেদন করব।’’

এর পাশাপাশি পুকুরের পাশে ফাঁকা জমিতে জৈব পদ্ধতিতে চাষ হবে বলেও সিদ্ধান্ত নিয়েছে মৎস্য দফতর। ইতিমধ্যেই মৎস্য উন্নয়ন নিগম পরিচালিত একাধিক জলাশয়ে (নলবন, গোলতলা, ক্যাপ্টেন ভেড়ি) এই প্রকল্প হাতে নেওয়া বলে জানিয়েছেন নিগমের চেয়ারম্যান সৌম্যজিৎ দাস। জৈব পদ্ধতিতে চাষ হলে রাস্তাঘাট ধোয়া জল ওই জমিতে মিশে তার রাসায়নিক পরিবর্তন ঘটবে। এড়ানো যাবে দূষণ। বিধান শিশু উদ্যানে ইতিমধ্যেই প্রায় ৭০ একর জলাশয়ে জৈব পদ্ধতিতে মাছ চাষ শুরু করেছে মৎস্য উন্নয়ন নিগম। সেই পদ্ধতিকেই রাজ্যে মডেল করতে চাইছে মৎস্য দফতর।

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
আরও পড়ুন
Advertisement