নিউ টাউনের নিজস্ব দমকল এখনও স্বপ্ন

পেরিয়েছে দেড় বছর। কিন্তু শিল্যানাস হয়েই পড়ে রয়েছে নিউ টাউনের দমকল কেন্দ্র। অথচ শিল্যানাসের পরেই দমকলমন্ত্রী জাভেদ খান আশ্বাস দিয়েছিলেন, মাসখানেকের মধ্যেই দমকল কেন্দ্র তৈরির কাজ শুরু হয়ে যাবে। দ্রুত কাজ শেষও হবে। কাজ শেষ হওয়া তো দূর অস্ত্‌, শিল্যানাসের পরে এক পা কাজও এগোয়নি।

Advertisement

আর্যভট্ট খান

শেষ আপডেট: ০৫ সেপ্টেম্বর ২০১৪ ০০:০০
Share:

প্রস্তাবিত দমকলকেন্দ্রের জমি। নিউ টাউনে। ছবি: শৌভিক দে।

পেরিয়েছে দেড় বছর। কিন্তু শিল্যানাস হয়েই পড়ে রয়েছে নিউ টাউনের দমকল কেন্দ্র। অথচ শিল্যানাসের পরেই দমকলমন্ত্রী জাভেদ খান আশ্বাস দিয়েছিলেন, মাসখানেকের মধ্যেই দমকল কেন্দ্র তৈরির কাজ শুরু হয়ে যাবে। দ্রুত কাজ শেষও হবে। কাজ শেষ হওয়া তো দূর অস্ত্‌, শিল্যানাসের পরে এক পা কাজও এগোয়নি।

Advertisement

অথচ নিউ টাউনে যে হারে বহুতল বাড়ছে তাতে এই বিস্তীর্ণ এলাকায় পৃথক দমকল কেন্দ্র তৈরি হওয়া যে জরুরি তা স্বীকার করে নিয়েছিলেন দমকলমন্ত্রী। সম্প্রতি চ্যাটার্জি ইন্টারন্যাশনালে অগ্নিকাণ্ডের পরে নিউ টাউনের বহুতলের বাসিন্দাদের একাংশ প্রশ্ন তুলেছেন, সেখানে বহুতলে কোনও বড় অগ্নিকাণ্ড হলে তো দূর থেকে দমকল সময় মতো পৌঁছতেই পারবে না।

গত কয়েক বছরে নিউ টাউনে অ্যাকশন এরিয়া এক, দুই ও তিনে প্রচুর বহুতল তৈরি হয়েছে। কোনওটি আবাসিকদের জন্য, কোনওটি আবার অফিস। এ ছাড়াও হয়েছে একাধিক বহুতল শপিং কমপ্লেক্স, সিনেমা হল। যদিও এই সব বহুতলগুলির বেশির ভাগেরই নিজস্ব অগ্নি নির্বাপক ব্যবস্থা রয়েছে। কিন্তু প্রশ্ন উঠেছে বড় ধরণের অগ্নিকাণ্ড ঘটলে বহুতলের নিজস্ব অগ্নিনির্বাপক ব্যবস্থা দিয়ে পরিস্থিতি সামাল দেওয়া যাবে কি?

Advertisement

অ্যাকশন এরিয়া দুইয়ের এক শপিং মল সংলগ্ন একটি আবাসনের বাসিন্দারা জানালেন, তাঁদের বহুতলে নিজস্ব অগ্নি নির্বাপক ব্যবস্থা রয়েছে। কিন্তু তা কী ভাবে চালাতে হয় অনেকেই জানেন না। এক আবাসিকের প্রশ্ন, “চ্যাটার্জি ইন্টারন্যাশনালে যে ভাবে ষোলো তলায় ভয়াবহ আগুন লাগল সেরকম হলে বাড়িতে লাগানো অগ্নি নির্বাপক যন্ত্র দিয়ে সামলানো যেত? কী ভাবে বহুতল থেকে মানুষকে উদ্ধার করা হত?”

নিউ টাউন রাজারহাট এলাকার কাছের দমকল কেন্দ্র বলতে সল্টলেক সেক্টর ফাইভের দমকল কেন্দ্রটি। কিন্তু নিউ টাউন আয়তনে ক্রমশ বাড়ছে। রাজারহাটের গ্রামীণ এলাকার ধার ঘেঁষে তৈরি হয়েছে অ্যাকশন এরিয়া তিন। সেখানেও তৈরি হয়েছে অসংখ্য বহুতল ও অফিস। এ সব জায়গা সল্টলেকের দমকল কেন্দ্র থেকে বহু দূরে। এক বাসিন্দার ক্ষোভ: আবাসিকদের জন্য নানা পরিকাঠামো তৈরি হচ্ছে। তা হলে দমকল কেন্দ্রের মতো সাধারণ পরিকাঠামো এখনও তৈরি হল না কেন?

অথচ গত ২ মার্চ অ্যাকশন এরিয়া এক-এর ওই দমকল কেন্দ্রের শিল্যানাস করে দমকলমন্ত্রী জানিয়েছিলেন, এই দমকল কেন্দ্রে থাকবে আধুনিক মানের কন্ট্রোল রুম। সেখানে গ্লোবাল পজিশনিং সিস্টেম (জিপিএস) প্রযুক্তি ব্যবহৃত হবে। ফলে খুব কম সময়ে দমকলের গাড়ি ঘটনাস্থলে পৌঁছে যাবে। মন্ত্রীর দাবি ছিল, ওখানে একটি অ্যাকাডেমিও তৈরি হবে। সেখানে আগুনে উদ্ধারকার্যের প্রশিক্ষণও দেওয়া হবে। এমনকী দমকলকর্মী ছাড়া বিভিন্ন আবাসনের নিরাপত্তাকর্মীদেরও প্রশিক্ষণ দেওয়া হবে। যাতে দমকলকর্মীরা আসার আগেই তাঁরাই আগুন নেভানোর প্রাথমিক কাজ শুরু করতে পারেন।

প্রতিশ্রুতি অনেক। কিন্তু বাস্তবে কী মিলেছে তা শিল্যানাসের জায়গা ঘুরে এলেই বোঝা যায়। যদিও দমকলমন্ত্রী জাভেদ খান আশ্বাস দিয়ে বলেছেন, “কয়েকটি কারণে কাজ শুরু হতে একটু দেরি হয়েছে। তবে কালীপুজোর পরেই পুরোদমে দমকল কেন্দ্র তৈরির কাজ শুরু হবে। ডিটেল প্রজেক্ট রিপোর্ট (ডিপিআর) তৈরি হয়ে গিয়েছে। পিডব্লিউডি থেকে জমি হস্তান্তরের কাজও শেষ। টেন্ডার প্রক্রিয়ার কাজ চলছে।”

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
আরও পড়ুন
Advertisement