মাঝেরহাট সেতু। ফাইল চিত্র।
নতুন সেতু তৈরি শেষ করতে হবে এক বছরের মধ্যে, তবে তার স্থায়িত্ব হতে হবে ১০০ বছরের। মাঝেরহাটে নতুন উড়ালপুলের জন্য এই ‘শর্ত’ দিয়েছে রাজ্য সরকার।
পূর্ত দফতরের এক আধিকারিকের কথায়, ‘‘কারিগরি দিক থেকে ১০০ বছরের লক্ষ্যমাত্রা রাখলে তবেই পরিকাঠামো ৬৫-৭০ বছর স্থায়িত্ব পাবে। না হলে লাভ নেই। যানবাহনের বর্তমান যা চাপ, আগামী দিনে তা কোন পর্যায়ে পৌঁছবে, তা অনুমান করেই ১০০ বছরের লক্ষ্যমাত্রা রাখা হয়েছে।’’
তবে এই ‘শর্তে’ নির্মাণ সংস্থা পাওয়া বেশ ‘কঠিন’ বলেই বুঝতে পারছেন প্রশাসনিক কর্তারা। এই পরিস্থিতিতে প্রথম সারির কয়েকটি নির্মাণ এবং পরামর্শদাতা সংস্থার সঙ্গে আলোচনা শুরু করেছেন পূর্ত দফতরের কর্তারা। সূত্রের খবর, নতুন সেতুর প্রাথমিক নকশা তৈরি করেছেন পূর্ত দফতরের ইঞ্জিনিয়ারেরা। সেই নকশা মেনে অথবা তা পরিমার্জন করে নির্ধারিত সময়ে কী ভাবে কাজ করা যায়, সে বিষয়ে কথাবার্তা চলছে। এক কর্তার কথায়, “টাঁকশাল পর্যন্ত নতুন সেতু এগিয়ে দেওয়া সম্ভব নয়। আবার প্রস্থেও তা বাড়ানো মুশকিল। সেতুর উচ্চতাও আর বাড়ানো যাবে না। পাশাপাশি অন্তত ১০০ বছরের স্থায়িত্বের কথা মাথায় রেখে সেতু বানাতে বলা হয়েছে। নির্দিষ্ট সময়ে তা কী ভাবে সম্ভব, তাই বোঝার চেষ্টা চলছে। পূর্ত দফতরের তৈরি নকশার থেকে আরও ভাল কিছু পাওয়া যায় কি না, তা-ও দেখা হচ্ছে।”
সূত্রের দাবি, এই সব ‘শর্তে’ কোন কোন সংস্থা কাজ করতে রাজি হতে পারে, তার ধারণা নেওয়া হচ্ছে। সব পরিকল্পনামাফিক চললে আগামী সপ্তাহের মাঝামাঝি কয়েকটি সংস্থাকে চিহ্নিত করা যেতে পারে। আধিকারিকদের একটি অংশের ধারণা, সরকারের উচ্চ ক্ষমতাসম্পন্ন কমিটির বাছাইয়ের পরে কোনও সংস্থাকে কাজের বরাত দেওয়া হতে পারে। এই মুহূর্তে দুটি পদ্ধতির সম্ভাবনা ঘুরপাক খাচ্ছে। এক, মন্ত্রিসভার অনুমোদন নিয়ে সরাসরি কোনও সংস্থাকে কাজের বরাত দেওয়া, একইসঙ্গে তাদের প্রস্তাবিত খরচ সরকারি স্তরে যাচাই করে নেওয়া। দুই, ‘শর্ত’ নির্দিষ্ট করে দরপত্র আহ্বান করা। এক আধিকারিকের কথায়, “দ্বিতীয়টি কিছুটা সময়সাপেক্ষ। আবার প্রক্রিয়া দ্রুত করার ‘ইঞ্জিনিয়ারিং প্রোকিওরমেন্ট অ্যান্ড কনস্ট্রাকশন’ পদ্ধতিতে কাজের বরাত দেওয়া হলেও প্রকল্পের নকশা কোনও নিরপেক্ষ সংস্থাকে দিয়ে যাচাই করাতে হবে। তবে সময়সীমা মাথায় রেখেই সিদ্ধান্ত নেওয়া হবে।”
আধিকারিক মহলের একাংশের দাবি, এই কাজে টাকার কথা এই মুহূর্তে ভাবছে না সরকার। নির্দিষ্ট লক্ষ্যে প্রকল্প বাস্তবায়িত করতে যা করার তাই করতে প্রস্তুত সরকার।