তড়িঘড়ি এসএসকেএম-এর অধিকর্তা হিসেবে কাজে যোগ দিলেন মঞ্জু বন্দ্যোপাধ্যায়। বুধবার সাত সকালেই তিনি রাজ্যের একমাত্র সরকারি সুপার স্পেশ্যালিটি হাসপাতালের দায়িত্ব নেন। শুধু তাই নয়, কাজে যোগ দিয়েই হাসপাতালের চিকিত্সকদের সঙ্গে বৈঠকও সেরে ফেলেন নতুন অধিকর্তা। যাঁর স্থলাভিসিক্ত হয়ে তিনি এই পদে এলেন, সেই প্রাক্তন এসএসকেএম অধিকর্তা প্রদীপ মিত্র যদিও এ দিন তাঁর নতুন কর্মস্থল অর্থাত্ সাগর দত্ত মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালের অধ্যক্ষ পদে যোগ দেননি। বরং তিনি সকালেই স্বাস্থ্যভবনে গিয়েছেন। স্বেচ্ছাবসরের আবেদন জমা দিয়েছেন স্বাস্থ্যকর্তাদের কাছে।
মঙ্গলবার প্রদীপবাবুকে সাগর দত্ত মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে বদলি করা হয়। তাঁর জায়গায় নিয়ে আসা হয় নীলরতন সরকার মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালের অধ্যক্ষ মঞ্জুদেবীকে। অন্য দিকে, সাগর দত্ত মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালের অধ্যক্ষ দেবাশিস ভট্টাচার্যকে বদলি করা হয় নীলরতন সরকার মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে। মঞ্জুদেবী এবং দেবাশিসবাবু— দু’জনেই এ দিন তাঁদের নতুন কর্মস্থলে যোগ দিয়েছেন। নতুন অধ্যক্ষ সাগর দত্ত মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালের দায়িত্ব না নেওয়ায় সেখানে অব্যবস্থার আশঙ্কা দেখা দিয়েছে।
প্রদীপবাবু কেন সাগর দত্ত মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালের দায়িত্ব নিলেন না?
ওই দিন তিনি বলেছিলেন, ‘‘এই সিদ্ধান্তে আমি অপমানিত বোধ করেছি। মনে করছি আমার পদাবনতি করা হয়েছে। নতুন দায়িত্বে আমি যোগ দেব না। স্বাস্থ্য শিক্ষা অধিকর্তাকে তা জানিয়েও দিয়েছি।’’ সেই মতো তিনি এ দিন স্বাস্থ্য ভবনে যান। তবে সরকারি গাড়ি নয়, এ দিন তিনি নিজের গাড়িতেই সেখানে গিয়েছিলেন। তাঁর মতে, যে হেতু তিনি সরকারি কোনও কর্মসূচিতে নেই সে কারণেই সরকারি গাড়ি তিনি ব্যবহার করছেন না। স্বাস্থ্য ভবনে তিনি যে স্বেচ্ছাবসরের আবেদন নিয়েই গিয়েছেন সে কথাও মেনে নেন প্রদীপবাবু। এ দিন স্বাস্থ্য ভবন থেকে বেরোনোর সময় তিনি বিষয়টি নিয়ে আদালতেও যেতে পারেন বলে জানিয়েছেন তিনি।
স্বাস্থ্যভবন এই বদলিকে রুটিন বললেও প্রদীপবাবু তা মানতে নারাজ। তবে কি কুকুর-কাণ্ডের জেরেই তাঁকে সরিয়ে দিয়েছে সরকার? তিনি এ ব্যাপারে কিছু জানেন না বলে জানিয়েছেন প্রদীপবাবু। তিনি টানা সাত বছর এসএসকেএমের অধিকর্তা ছিলেন। সম্প্রতি তৃণমূলের চিকিৎসক নেতা ততা বিধায়ক নির্মল মাজির ঘনিষ্ঠ এক আত্মীয়ার কুকুরের ডায়ালিসিসের জন্য এসএসকেএম-এর নেফ্রোলজি বিভাগে সব ব্যবস্থা পাকা করে ফেলেছিলেন বিভাগীয় প্রধান রাজেন পাণ্ডে। তাঁর এই উদ্যোগে অনুমোদন দিয়েছিলেন প্রদীপবাবুও। তৃণমূলের চিকিৎসক নেতাদের একাংশ বলছেন, ‘‘কুকুর-কাণ্ডে রাজ্য সরকারের যে ভাবে মুখ পুড়েছে, তাতে প্রদীপবাবুকেই বলির পাঁঠা করল স্বাস্থ্য ভবন।’’ প্রদীপবাবু অবশ্য বলেন, ‘‘আমি এই বিষয়ে কিছুই জানতাম না।’’