—প্রতিনিধিত্বমূলক ছবি।
উৎসবের মরসুমে শহরতলির লোকাল ট্রেনে বাড়তি যাত্রীর সফর নতুন কোনও বিষয় নয়। তবে সদ্য শেষ হওয়া দুর্গাপুজোর দিনগুলিতে শিয়ালদহ ও হাওড়া ডিভিশন মিলিয়ে লোকাল ট্রেনে চড়া লোকের সংখ্যা যে কোটি ছাড়িয়ে যাবে, তা সম্ভবত রেলের আধিকারিকেরাও আঁচ করতে পারেননি। এ বার ঠিক সেটাই হয়েছে। পঞ্চমী থেকে দশমী পর্যন্ত সময়ের মধ্যে দুই ডিভিশন মিলিয়ে শহরতলির ট্রেনে প্রায় দেড় কোটি যাত্রী সফর করেছেন। এর মধ্যে শিয়ালদহ ডিভিশনে একক ভাবে ওই যাত্রী সংখ্যা ছিল এক কোটির বেশি। গত বছরে ওই সংখ্যা ছিল ৯৫.৩৬ লক্ষ। চলতি বছরে তা ৫.১৬ শতাংশ বৃদ্ধি পেয়ে এক কোটির গণ্ডি অতিক্রম করেছে।
পুজোকে কেন্দ্র করে শিয়ালদহ ডিভিশনের রেলওয়ে ম্যানেজার দীপক নিগমের নির্দেশে অনেক আগেই এ নিয়ে পরিকল্পনা করা হয়েছিল। বিভিন্ন স্টেশনে ভিড় সামলাতে গ্যালপিং ট্রেন বন্ধ করে দেওয়া ছাড়াও রাত ১২টা থেকে রাত তিনটের মধ্যে শিয়ালদহ থেকে একাধিক গুরুত্বপূর্ণ শাখায় ন’জোড়া ট্রেন চালানো হয়েছে। ওই ট্রেনগুলি ধরে পুজোর দিনগুলিতে দিন-রাত লোকাল ট্রেনের পরিষেবা চালু ছিল।
হাওড়া ডিভিশনের ক্ষেত্রেও সপ্তমী থেকে দশমী পর্যন্ত সময়ের মধ্যে প্রায় ৬০ লক্ষ যাত্রী সফর করেছেন বলে রেল সূত্রের খবর। পুজোর চার দিনে সারা দিনের পরিষেবা ছাড়াও হাওড়া-বর্ধমান কর্ড এবং মেন শাখার পাশাপাশি ব্যান্ডেল শাখাতেও বেশি রাতে লোকাল ট্রেন চালিয়েছিল রেল। গত বছরের ৫২.৬১ লক্ষ যাত্রীর তুলনায় চলতি বছর ওই ডিভিশনে ১৩.২১ শতাংশ যাত্রী বেড়েছে।
দূরপাল্লার ট্রেনগুলির ক্ষেত্রে কলকাতা-আগরতলা গরিব রথ এবং কাঞ্চনজঙ্ঘা এক্সপ্রেসে সংরক্ষিত আসনের তুলনায় ৮০ থেকে ৮৫ শতাংশ বেশি যাত্রী সফর করেছেন। বিভিন্ন সংরক্ষিত আসনে এবং বিভিন্ন দূরত্বে একাধিক যাত্রী সফর করার কারণেই ওই হার ঊর্ধ্বমুখী বলে জানিয়েছে রেল। কলকাতা-জম্মু তাওয়াই এবং কামরূপ এক্সপ্রেসের ক্ষেত্রে আসন ব্যবহারের হার (অকুপেন্সি রেট) ১৬৫ শতাংশের আশপাশে ছিল বলে জানিয়েছেন পূর্ব রেলের মুখ্য জনসংযোগ আধিকারিক কৌশিক মিত্র। মুম্বই মেল, হাওড়া-অমৃতসর মেলে ওই হার ছিল ১৫০ শতাংশের কাছাকাছি। উত্তরবঙ্গগামী তিস্তা-তোর্সা এবং দার্জিলিং মেলে আসন ব্যবহারের হার ছিল যথাক্রমে ১২৫ এবং ১১৪ শতাংশ। হাওড়া-নিউ জলপাইগুড়ি বন্দে ভারত এক্সপ্রেস ছুটেছে আসন সংখ্যার তুলনায় পাঁচ শতাংশ বেশি যাত্রী নিয়ে।
রাজধানী এবং শিয়ালদহ-নয়াদিল্লি দুরন্ত এক্সপ্রেসে ওই হার ছিল যথাক্রমে ১১৪ এবং ১১০ শতাংশ। সেই সঙ্গে দিঘা এবং পুরীগামী ট্রেনেও টিকিটের চাহিদা তুঙ্গে ছিল বলে জানিয়েছে রেল।
(এই প্রতিবেদনটি আনন্দবাজার পত্রিকার মুদ্রিত সংস্করণ থেকে নেওয়া হয়েছে)