প্রতীকী ছবি।
ডাক্তারি পড়ুয়াদের ‘হিপোক্রেটিক ওথ’ বদলে চরক শপথ পাঠের প্রাথমিক সিদ্ধান্তকে কেন্দ্র করে বিতর্ক দানা বেঁধেছিল আগেই। এ বার সেই চরক শপথকেই মান্যতা দিল ন্যাশনাল মেডিক্যাল কমিশন (এনএমসি)। শুক্রবার এনএমসির জারি করা নির্দেশিকা অনুসারে ডাক্তারি পড়ুয়াদের জন্য ‘পরিবর্তিত চরক শপথ’-এর পরামর্শ দেওয়া হয়েছে। এ ছাড়াও যোগ দিবসের আগে ১০ দিন যোগ অনুশীলন করার কথাও বলা হয়েছে ওই নির্দেশিকায়।
ডাক্তারি পড়ুয়াদের জন্য সংশোধিত পাঠ্যক্রমের নির্দেশিকায় রয়েছে চরক শপথের উল্লেখ। পঠনপাঠন শুরুর আগে চরক শপথের পরামর্শ দেওয়া হয়েছে সেখানে। এর আগে ফেব্রুয়ারিতে কলকাতা মেডিক্যাল কলেজে পাঠ করানো হয় চরক শপথ। তা নিয়েও শুরু হয় বিতর্ক। পরে হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ জানান, নির্দেশিকার ভুল বোঝবুঝিতেই চরক শপথ পাঠ করানো হয়েছিল পড়ুয়াদের। চিকিৎসকদের একাংশ চরক শপথ চালু করার এই সিদ্ধান্তকে ‘গৈরিকীকরণ’ বলে আখ্যা দিচ্ছেন। অন্য একটা অংশ মনে করছেন চিকিৎসা ব্যবস্থার মুল বিষয়গুলি ছেড়ে অপ্রয়োজনীয় বিষয় নিয়ে বেশি চিন্তিত হয়ে পড়েছে এনএমসি। অন্য দিকে, বিজেপি-র স্বাস্থ্য সেলের আহ্বায়ক আগেই বলেছিলেন, ‘‘মহর্ষি চরক আমাদের দেশের। তাই ওঁর নামে শপথের মাধ্যমে দেশপ্রেমকে এগিয়ে নিয়ে যাওয়া সম্ভব।’’
চরক শপথের পাশাপাশি এমবিবিএসের ফাউন্ডেশন কোর্সে যোগ ব্যায়ামকে প্রাধান্য দেওয়া হয়েছে। নির্দেশিকা অনুয়ায়ী, যোগ দিবসের আগে ১০ দিন সব মেডিক্যাল কলেজে যোগ অনুশীলন বাধ্যতামূলক। ১২ থেকে ২১ জুন পর্যন্ত প্রতি দিন সকালে এক ঘণ্টা করে পড়ুয়াদের যোগ অনুশীলন করার পরামর্শ দেওয়া হয়েছে।
ওয়েস্ট বেঙ্গল ডক্টরস ফোরামের পক্ষে কৌশিক চাকী বলেন, ‘‘ডাক্তারি পড়ুয়ারা যোগ করবে না কি সুস্থ থাকতে অন্য কোনও পদ্ধতিতে শরীরচর্চা করবে সেটা বাধ্যতামূলক করা উচিত নয়। তার থেকে পাঠ্যক্রমে বেসিক লাইফ সাপোর্ট, জনস্বাস্থ্য উন্নয়ন, রোগীর সঙ্গে ব্যবহারের পাঠে জোর দিলে ভাল হত।’’ তাঁর কথায়, ‘‘মূল সমস্যাগুলিকে চিহ্নিত না করে শপথে শপথে ঝগড়া লাগিয়ে দেওয়া হচ্ছে।’’
মেডিক্যল সার্ভিস সেন্টারের কলকাতা জেলা সম্পাদক বিপ্লব চন্দ্র বলেন, ‘‘এনএমসির নতুন নির্দেশিকার তীব্র প্রতিবাদ জানাচ্ছি। আধুনিক বিজ্ঞানের যুগে চরক শপথ পাঠ করানো ভিত্তিহীন। এর বিরুদ্ধে বিজ্ঞান মনস্কদের এর বিরুদ্ধে প্রতিবাদ করা উচিত।’’