থমকে: ব্রিগেডে বিজেপির সমাবেশের কারণে যানজট। রবিবার, হেস্টিংসের কাছে। ছবি: স্বাতী চক্রবর্তী
শুধু ধর্মতলা চত্বরেই সীমাবদ্ধ রইল না রবিবারের ব্রিগেডের কারণে হওয়া যানজট। ছুটির দিন হলেও সকাল থেকে পথে গাড়ির যে চাপ দেখা গিয়েছিল, তা-ই সঙ্গী হল সন্ধ্যার পরেও। এক সময়ে পরিস্থিতি এমনই দাঁড়ায় যে গণ-পরিবহণের নাগাল পেতে নাকাল হতে হয় সাধারণ মানুষকে। বাড়তি ভাড়া হাঁকতে দেখা যায় অটোচালকদের। দেখা যায় রাস্তায় দাঁড়িয়ে থাকলেও যেতে চাইছে না হলুদ ট্যাক্সিও।
ছুটির দিন হওয়ায় রবিবার এমনিতেই বাসের সংখ্যা কম থাকে বলে পরিবহণ দফতরের দাবি। এ দিনও পথে নেমেছিল মাত্র ১০ শতাংশ বাস। সে সবও দুপুরের পর থেকে উধাও হতে শুরু করে বলে অভিযোগ। তার পরেও যে সব বাস রাস্তায় দেখা গিয়েছে, তা ইস্টার্ন বাইপাস কেন্দ্রিক। এর কারণ হিসেবে বাসমালিক সংগঠনগুলির দাবি, মিছিলের জেরে এক সময়ে বন্ধ করে দেওয়া হয়েছিল ধর্মতলা, চিত্তরঞ্জন অ্যাভিনিউ, যতীন্দ্রমোহন অ্যাভিনিউয়ের দু’দিকের রাস্তা। এর জেরে গাড়ির চাপ গিয়ে পড়েছিল এ জে সি বসু রোড এবং এ পি সি রোডে। ব্রিগেডমুখী মিছিলের জেরে অনেকটা সময় যান চলাচল থমকে ছিল শিয়ালদহ এলাকাতেও।
এক ভুক্তভোগীর বক্তব্য, ‘‘কালীঘাট থেকে ডানলপে আত্মীয়ের বাড়িতে যাওয়ার ছিল। ধর্মতলার কাছে বাসে প্রায় এক ঘণ্টা বসে থাকার পরে অন্য দিকে বাস ঘুরিয়ে দেওয়া হয়। ছুটির দিনের ৪৫ মিনিটের রাস্তা এ দিন আড়াই ঘণ্টা লেগেছে।’’ বাস না পেয়ে অ্যাপ-ক্যাবের মুখাপেক্ষী হয়েও ভুগতে হয়েছে অনেককে। বাড়তে থাকা সার্জ প্রাইস সন্ধ্যার পরেও কমেনি বলে অভিযোগ। বিকেলে সভা শেষের পরে চাঁদনি চকে বাসের অপেক্ষায় দাঁড়িয়ে থাকা শবনম বিবি বলেন, ‘‘সরকারি বাস তো চোখেই পড়ছে না। আদৌ সে সব চলছে তো?’’
প্রশাসন সূত্রের খবর, সরকারি বাস নির্বাচনের কারণে তুলে নেওয়া হয়েছে। জ্বালানির সমস্যার জন্য কিছু বাস কম চলেছে। ফলে সন্ধ্যার পরে বাস ধরতে গিয়ে বাস না পেয়ে নাকাল হতে হয়েছে অনেক যাত্রীকে।
নাকাল হওয়ার চিত্র দ্বিতীয় হুগলি সেতুতেও। ব্রিগেডমুখী গাড়ির চাপে বেশ কিছু ক্ষণের জন্য থমকে যায় যান চলাচল। ভিড়ের চাপে বেশ কিছু ক্ষণের জন্য হাওড়া থেকে কলকাতার বাবুঘাটগামী লঞ্চ পরিষেবাও বন্ধ করে দিতে হয়। পরে জেটিতে প্রবেশের দরজার একাংশ বন্ধ রেখে সীমিত যাত্রী নিয়ে আবার ফেরি সার্ভিস চালু করা হয়।
সন্ধ্যায় নিজস্ব গাড়িতে দক্ষিণেশ্বরের দিকে যাওয়া এক মহিলার মন্তব্য, ‘‘যত না গাড়ির ভিড় ছিল, তার চেয়েও বেশি ছিল সভা শেষে ফেরা লরি বোঝাই
জনতার নিয়ম না মানার হিড়িক। সেই হিড়িকেই বেড়েছে পথের ঝক্কি।’’ কলকাতা ট্র্যাফিক পুলিশের এক শীর্ষ কর্তার বক্তব্য, ‘‘বাড়তি পুলিশকর্মী নামিয়ে পরিস্থিতি সামাল দেওয়ার চেষ্টা হয়েছে। তবে কিছু জায়গা থেকে মিছিলে এমন ভাবে গাড়ি এসেছে যে কিছুতেই রাস্তা সাফ রাখা যায়নি। এর জেরেই এক সময়ে বন্ধ করে দিতে হয়, রেড রোড ও সেন্ট্রাল অ্যাভিনিউয়ের দু’দিকের রাস্তাই।’’