মাদক ব্যবসার অভিযোগে গ্রেফতার যুবক

এনসিবি সূত্রের খবর, নিলয়ের কাছ থেকেই রিদমের হদিস পান অফিসারেরা। জানা যায়, শহরের এক নৈশ ক্লাবে রিদমের সঙ্গে আলাপ হয়েছিল নিলয়ের। জেরার মুখে নিলয় জানিয়েছিলেন, তিনি ‘এমডিএমএ’ কিনতেন রিদমের কাছ থেকে।

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা

শেষ আপডেট: ১৪ ফেব্রুয়ারি ২০১৮ ০২:১২
Share:

প্রতীকী ছবি।

মাদক সরবরাহের দায়ে নার্কোটিক্স কন্ট্রোল ব্যুরো-র (এনসিবি) হাতে ধরা পড়লেন কলকাতার আরও এক যুবক।

Advertisement

মঙ্গলবার এনসিবি-র আঞ্চলিক অধিকর্তা দিলীপ শ্রীবাস্তব জানিয়েছেন, ধৃত ২৬ বছরের ওই যুবকের নাম রিদম দাস রায়। তিনি আর্কিটেকচার পাশ করে বেঙ্গালুরুতে চাকরি করছিলেন। পাশাপাশি চলছিল মাদক বেচাকেনাও। মঙ্গলবার কলকাতার নিউ টাউনে এনসিবি-র অফিসে তাঁকে ডেকে পাঠিয়ে গ্রেফতার করা হয়। সূত্রের খবর, রিদমের বাড়ি সার্কাস অ্যাভিনিউয়ে। তিনি মাদক কেনার জন্য বিটকয়েনের মতো বায়বীয় বা ভার্চুয়াল টাকা ব্যবহার করতেন। এনসিবি সূত্রের খবর, অভিযোগ প্রমাণ হলে রিদমের ন্যুনতম দশ বছর কারাদণ্ড হওয়ার কথা।

গত বছর ১২ ডিসেম্বর সল্টলেক থেকে মাদক কেনাবেচার অভিযোগে গ্রেফতার করা হয়েছিল ২২ বছরের নিলয় ঘোষকে। তিনি সল্টলেকের উচ্চবিত্ত পরিবারের সন্তান। নিজে ম্যানেজমেন্ট পড়েছেন। তাঁর সঙ্গে ধরা পড়েছিলেন জেরম ওয়াটসন (২২)। পার্ক স্ট্রিটের বাসিন্দা জেরম ইভেন্ট ম্যানেজার হিসাবে বিভিন্ন পার্টির আয়োজন করতেন। সেই সব পার্টির জন্য মাদক আসত নিলয়ের কাছ থেকে। জেরম ছাড়াও কলকাতার বিভিন্ন কলেজের ছাত্রছাত্রীদেরও মাদক সরবরাহ করতেন নিলয়।

Advertisement

এনসিবি সূত্রের খবর, নিলয়ের কাছ থেকেই রিদমের হদিস পান অফিসারেরা। জানা যায়, শহরের এক নৈশ ক্লাবে রিদমের সঙ্গে আলাপ হয়েছিল নিলয়ের। জেরার মুখে নিলয় জানিয়েছিলেন, তিনি ‘এমডিএমএ’ কিনতেন রিদমের কাছ থেকে। এমডিএমএ তিন ভাবে পাওয়া যায়— ক্রিস্টাল, পাউডার ও ক্যান্ডি। তিন রকমই পাওয়া গিয়েছিল নিলয়ের কাছ থেকে।

রিদম থাকতেন বেঙ্গালুরুতে। অ্যাকাউন্ট ট্রান্সফার করলে ধরা পড়ে যাওয়ার সম্ভাবনা থাকে বলে নিলয় এটিএম মারফত রিদমের অ্যাকাউন্টে টাকা জমা করতেন। এনসিবি সূত্রের খবর, শেষ ৬ মাস ধরে এ ভাবে ৮ থেকে ১০ বার রিদমের অ্যাকাউন্টে গড়ে প্রায় ৪০ থেকে ৫০ হাজার টাকা করে পাঠিয়েছিলেন নিলয়। কিন্তু, রিদমের নম্বর বা ঠিকানা দিতে পারেননি নিলয়। ব্যাঙ্কের মাধ্যমে রিদমের তথ্য পান গোয়েন্দারা। যোগাযোগ করা হয় তাঁর সঙ্গে।

প্রাথমিক তদন্তের পরে গোয়েন্দাদের ধারণা, শুধু নিলয় নন, আরও অনেককে এমডিএমএ বিক্রি করতেন রিদম। তিনি ‘ডার্ক নেট’ নামে একটি ওয়েব পোর্টাল থেকে বিট কয়েনের মাধ্যমে ওই মাদক কিনতেন। নাসিকের এক ব্যক্তি মাদক কেনাবেচায় রিদমকে সাহায্য করতেন বলে জানা গিয়েছে। নাসিকের ওই ব্যক্তির মাধ্যমেই ক্যুরিয়র করে মাদক আসত নিলয় এবং অন্যদের কাছে।

সোমবার রিদমকে ডেকে এনে জেরা করে এনসিবি অফিসারেরা জেনেছেন, মণিপাল বিশ্ববিদ্যালয়ে ইঞ্জিনিয়ারিং পড়ার সময়ে মাদকের নেশার কবলে পড়েন তিনি। অফিসারদের রিদম জানিয়েছেন, মণিপালের ছাত্রাবাসে সিংহভাগ ছাত্রই মাদকের নেশা করেন। তার মধ্যে এলএসডি, এমডিএমএ ছাড়াও রয়েছে এক্সট্যাসি নামে এক ধরণের ট্যাবলেট। রিদম জানিয়েছেন, মণিপালের ছাত্ররা গোয়ায় গিয়ে খুব ভাল মানের এলএসডি কিনে আনতেন। এনসিবি কর্তা দিলীপ শ্রীবাস্তব জানিয়েছেন, উত্তর

গোয়ায় আনজুনা এবং বাগা নামে দু’টি সমুদ্র সৈকত রয়েছে যেখানে রাশিয়া এবং ইজরায়েল থেকে আসা পর্যটকেরা ওই উচ্চমানের এলএসডি বিক্রি করেন বলে রিদম তাঁদের জানিয়েছেন।

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
আরও পড়ুন
Advertisement