—প্রতীকী চিত্র।
নিউ টাউনের বালিগড়ি অঞ্চলে এক শিশুকন্যাকে খুনের অভিযোগ উঠল। এই ঘটনায় চাঞ্চল্য ছড়িয়েছে এলাকায়। মঙ্গলবার সকালের দিকে একটি জলা থেকে ওই শিশুটির দেহ উদ্ধার করে টেকনো সিটি থানার পুলিশ। একটি খুনের মামলা রুজু করে তদন্ত শুরু করা হয়েছে। ঘটনার পিছনে স্থানীয় কেউ জড়িত বলেই প্রাথমিক ভাবে মনে করছেন তদন্তকারীরা। এক ব্যক্তিকে আটক করে জিজ্ঞাসাবাদ শুরু করেছে পুলিশ।
পুলিশ সূত্রের খবর, সোমবার রাতে বছর দুয়েকের শিশুটি তার বাবা-মায়ের সঙ্গে ঘুমিয়েছিল। ভোরবেলায় তাকে বিছানায় দেখতে না পেয়ে আতঙ্কিত হয়ে পড়েন বাবা শামসুর মণ্ডল। মেয়ের খোঁজ শুরু করেন তিনি। সকাল ৯টা-সাড়ে ৯টা নাগাদ গ্রামের একটি জলাশয়ের মধ্যে কচুরিপানা সরিয়ে শিশুটির খোঁজ মেলে। দেহ উদ্ধার করে স্থানীয় হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হলে শিশুটিকে মৃত বলে ঘোষণা করেন চিকিৎসকেরা।
পুলিশ সূত্রের খবর, শিশুটির বাবা একটি হোটেলে চাকরি করেন। তিনি পুলিশকে জানিয়েছেন, রাতে খাওয়াদাওয়া সেরে তাঁরা মেয়েকে সঙ্গে নিয়েই ঘুমিয়েছিলেন। কিন্তু ঘুম ভেঙে তিনি ও তাঁর স্ত্রী দেখেন, মেয়ে বিছানায় নেই। খোঁজাখুঁজির পরে তাঁরা জানতে পারেন, স্থানীয় একটি জলাশয়ের কচুরিপানার মধ্যে মেয়ের দেহ পড়ে রয়েছে। ওই পরিবারটি আদতে বিহারের বাসিন্দা। সম্প্রতি তারা ওই জায়গায় বাড়ি ভাড়া নিয়ে থাকতে শুরু করেছে।
স্থানীয় বাসিন্দারা জানান, প্রথমে তাঁরা ভেবেছিলেন, হয়তো কোনও ভাবে ঘর থেকে শিশুটি বেরিয়ে এসে ওই জলাশয়ে পড়ে গিয়েছিল। কিন্তু পরে ঘটনাটি নিয়ে একাধিক প্রশ্ন ওঠে। রাতে ঘরের দরজা বন্ধ থাকার কথা। তা হলে শিশুটি কী ভাবে ঘর থেকে বেরোল? কেউ কি তাকে ঘর থেকে বার করে নিয়ে গিয়েছিল? তার বাবা-মা কিছু টের পেলেন না কেন? পুলিশ সূত্রের খবর, তদন্তে সব দিক খতিয়ে দেখা হচ্ছে।
ঘটনার পিছনে বাড়িভাড়া সংক্রান্ত একটি গোলমালের বিষয়ও উঠে আসছে বলে জানা গিয়েছে। স্থানীয় মানুষের দাবি, শামসুর যে ঘরটি ভাড়া নিয়েছেন, সেখানে আগে অন্য এক ব্যক্তি থাকতেন। অভিযোগ, ওই ব্যক্তি নেশা করে প্রতিবেশীদের সঙ্গে ঝামেলা করতেন। যে কারণে বাড়ির মালিক তাঁকে উঠিয়ে দেন। পরে সেই ঘরটি শামসুর ভাড়া নেন। ওই ব্যক্তির বিরুদ্ধে পুলিশের কাছে অভিযোগ করেছে শিশুটির পরিবার। তাঁদের দু’টি মোবাইল ফোনও উধাও, এমনও অভিযোগ শামসুরের। নেহাতই খেলার ছলে ঘর থেকে বেরিয়ে শিশুটি জলে পড়ে গিয়েছে বলে প্রাথমিক ভাবে মনে করা হলেও পরে গ্রামবাসীরা অভিযোগ করেন, শিশুটিকে খুন করা হয়েছে। পুলিশ ঘটনার তদন্ত করছে। কী কারণে শিশুটিকে খুন করা হতে পারে, তা-ও খতিয়ে দেখা হচ্ছে।