সল্টলেকের শান্তিনগরের এই ফ্ল্যাট থেকেই উদ্ধার হয়েছে দম্পতির দেহ। —নিজস্ব চিত্র।
স্বামী-স্ত্রীর দেহ উদ্ধার হল সল্টলেকেরএকটি ফ্ল্যাট থেকে। সোমবার দুপুরে, সল্টলেকের শান্তিনগরের একটি পাঁচতলা আবাসনের চারতলা থেকে উদ্ধার হয় রঞ্জিত দাস এবং মমতা দাসের দেহ।
এ দিন স্থানীয় বাসিন্দাদের কাছ থেকে খবর পেয়ে বিধাননগর দক্ষিণ থানার পুলিশ দরজা ভেঙে উদ্ধার করেন মধ্যবয়সী ওই দম্পতিকে।
প্রাথমিক ভাবে পুলিশের অনুমান স্ত্রীকে মেরে নিজে আত্মহত্যা করেছেন প্রৌঢ় রঞ্জিত।প্রত্যক্ষদর্শীরা জানিয়েছেন, মমতার দেহ বিছানার উপর শোয়ানো ছিল। তাঁর পায়ে টাটকা আলতা পরানো। কপালে সিঁদুর। পোশাক সুবিন্যস্ত। রঞ্জিতকে পাওয়া যায় গলায় ফাঁস দিয়ে ঝুলন্ত অবস্থায়।দেহ ওই অবস্থায় দেখে তদন্তকারীদের সন্দেহ, স্ত্রীকে খুন করে তাঁকে সাজিয়ে নিজে আত্মহত্যা করেছেন রঞ্জিত।
আরও পড়ুন: দেশকে নেতৃত্ব দেওয়ার সব গুণ রয়েছে মমতার মধ্যে, ফের বললেন কংগ্রেস-সঙ্গী কুমারস্বামী
প্রাথমিক তদন্তে পুলিশ জানতে পেরেছে, ওই দম্পতির এক ছেলে দুই মেয়ে। রঞ্জিতের একটি সোনার দোকান ছিল। মেয়েদের বিয়ে দেওয়ার পর সেই দোকান দেখাশোনার দায়িত্ব দেন ছেলে অভিজিৎকে। কিন্তু ছেলে সেই দোকান চালাতে ব্যর্থ হয়। মানসিক অবসাদে ভুগতে থাকে। এর পর দোকান বিক্রি করে শান্তিনগরের ওই ফ্ল্যাট কিনে কয়েক বছর ধরে বসবাস করছে ওই পরিবার।
ছেলে অভিজিৎ এ দিন বাবা-মায়ের ঘরে বার বার ধাক্কা দেওয়ার পরও কেউ দরজা না খুললে প্রতিবেশীদের খবর দেন তিনি। তাঁরা এসে বার বার ডেকে কোনও উত্তর না পেলে পুলিশে খবর দেন। দীপেন বিশ্বাস ওই আবাসনেই থাকেন। তিনি রঞ্জিতবাবুর প্রতিবেশী। তিনি বলেন,“ এ দিন অভিজিৎ তাঁর কাছে এসে বলে বাবা ফাঁস দিয়ে ঝুলছে। ছেলেটি মানসিক ভারসাম্যহীন। প্রথমে তাই ওর কথা বিশ্বাস করিনি। পরে গিয়ে দেখি রঞ্জিতবাবুর গলায় ফাঁস। বিছানায় শুয়ে স্ত্রী মমতা।”
পুলিশ সূত্রে খবর, বেলেঘাটাতে রঞ্জিত বাবুর সোনার দোকান ছিল। সাড়ে চার বছর ধরে শান্তি নগরের ওই ফ্ল্যাটে বাস করছেন।
আরও পড়ুন: এত দ্রুত আয়োজন সম্ভব নয়, মোদীর ৮ ফেব্রুয়ারির ব্রিগেড সভা বাতিল করল বিজেপি
তবে পুলিশ সূত্রে খবর, একটি সুইসাইড নোট পাওয়া গিয়েছে। সেখানে মেয়েদেরকে উদ্দ্যশ্য করে লেখা ফ্ল্যাটটা বিক্রি করে টাকা ভাগ করে নিস। ভাইকে রাস্তায় ছেড়ে দিস। দীপেন বাবুর দাবি, “ ছেলের চিকিৎসার বিপুল টাকা দিতে দিতে প্রচুর দেনা হয়ে গিয়েছিল দম্পতির। অবসাদে ভুগছিলেন তাঁরা।” বিধাননগরের ডিসি সদক অমিত জাভালগিও জানিয়েছেন, ‘দেনা এবং আর্থিক কষ্টের কারণেই ওই ঘটনা ঘটেছে।” তবে মমতার মৃত্যু ঠিক কী ভাবে তা এখনও স্পষ্ট নয়। এক তদন্তকারী বলেন, ময়না তদন্ত হলে বোঝা যাবে কি ভাবে মারা গিয়েছেন মমতা।