হাসপাতালে ভর্তি হয়েছেন আরও কয়েক জন রোগী। ফাইল চিত্র।
কামারহাটিতে আন্ত্রিকে আক্রান্ত হয়ে হাসপাতালে ভর্তি হয়েছেন আরও কয়েক জন রোগী। বুধবার সন্ধ্যা পর্যন্ত দুই হাসপাতাল মিলিয়ে চিকিৎসাধীন রোগীর সংখ্যা বেড়ে হয়েছে ১৩০। যার মধ্যে শিশুও রয়েছে। পানীয় জল বা কোনও খাবার থেকে ওই রোগ ছড়িয়েছে কি না, তা স্পষ্ট হয়নি। এ বিষয়ে জানতে এ দিন রোগীদের নমুনা পাঠানো হয়েছে নাইসেডে।
নাইসেডের অধিকর্তা শান্তা দত্ত বলেন, “স্বাস্থ্য দফতরের তরফে রোগীদের মল ও পানীয় জলের নমুনা পাঠানো হয়েছে। সেগুলি পরীক্ষা করার পরেই বোঝা যাবে, কী থেকে ওই রোগ ছড়িয়েছে।” গত সোমবার রাত থেকে কামারহাটির এক থেকে পাঁচ নম্বর ওয়ার্ডের অসংখ্য মানুষ বমি ও পেটের সমস্যায় আক্রান্ত হয়েছেন। তাঁদের চিকিৎসার জন্য সাগর দত্ত মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে দু’টি আলাদা ওয়ার্ড ও কন্ট্রোল রুম খোলা হয়েছে। সূত্রের খবর, মঙ্গলবার রাতে এবং এ দিনও অসংখ্য মানুষ হাসপাতালে চিকিৎসার জন্য এসেছেন। সেখানে চিকিৎসাধীন রোগীর সংখ্যা ৯০। মহিলা ৪৫ জন, পুরুষ ৩৭ জন ও শিশু আটটি। আবার ইএসআই হাসপাতালে পুরুষ ও মহিলা মিলিয়ে ভর্তি ৪০ জন।
কামারহাটি পুরসভার প্রশাসকমণ্ডলীর চেয়ারম্যান গোপাল সাহা বলেন, “পুরসভার তরফে যেমন জলের নমুনা পরীক্ষায় পাঠানো হয়েছে, তেমনই এ দিন কেএমডিএ এবং পিএইচই-র তরফেও জলের নমুনা পরীক্ষার জন্য নিয়ে যাওয়া হয়েছে। বিষয়টি খুবই উদ্বেগের।”
পুরসভা সূত্রের খবর, এক, তিন ও পাঁচ নম্বর ওয়ার্ডে আক্রান্তের সংখ্যা বেশি। এ দিন জেলার উপ-মুখ্য স্বাস্থ্য আধিকারিক (২)-সহ আট জনের একটি প্রতিনিধিদল ওই সমস্ত এলাকা এবং হাসপাতাল পরিদর্শন করে। এর পাশাপাশি কেএমডিএ, জনস্বাস্থ্য কারিগরি দফতর এবং ‘স্টেট আর্বান ডেভেলপমেন্ট এজেন্সি’ (সুডা)-র আধিকারিকেরাও এলাকা ঘুরে দেখেন। পুর কর্তৃপক্ষের সঙ্গেও বৈঠক করেন তাঁরা। পুর প্রশাসকমণ্ডলীর সদস্য তথা স্বাস্থ্য বিভাগের প্রাক্তন চেয়ারম্যান পারিষদ বিমল সাহা বলেন, “পরিস্থিতি সামাল দিতে স্বাস্থ্য দফতর ও সুডা-র তরফে বেশ কিছু নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। সেই মতো আরও মেডিক্যাল ক্যাম্প চালু হচ্ছে।” সূত্রের খবর, এক নম্বর ওয়ার্ডের উপ স্বাস্থ্যকেন্দ্রে এবং বাকি ওয়ার্ডের ক্লাব বা স্কুলে ওই ক্যাম্প চালু হবে।
রাজ্যের স্বাস্থ্য অধিকর্তা অজয় চক্রবর্তী বলেন, “সুডা-র রিপোর্ট অনুযায়ী, এ দিন দুপুর পর্যন্ত ১৬০ জন আক্রান্ত হয়েছেন। দু’জনের মৃত্যুও হয়েছে। আরও যে দু’টি মৃত্যুর কথা শোনা গিয়েছিল, তাঁদের আন্ত্রিক ছিল না। জেলা স্বাস্থ্য দফতর ও পুর প্রতিনিধিরা প্রতিটি বাড়িতে যাচ্ছেন। হ্যালোজেন ট্যাবলেট, ওআরএস দেওয়া হচ্ছে। সমস্ত জলাধারে ক্লোরিন দেওয়া হয়েছে। সকাল ৬টা থেকে সন্ধ্যা ৬টা পর্যন্ত চিকিৎসা শিবির চালানো হচ্ছে। আপাতত পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে।” তিনি জানান, জলের চারটি এবং মলের ন’টি নমুনা নাইসেডে পাঠানো হয়েছে।