ভগ্নস্তূপ: মাঝেরহাট সেতু ভেঙে পড়ার পর। মঙ্গলবার। ছবি: বিশ্বনাথ বণিক।
অনেক সময়েই ভিতর থেকে রোগ না-সারিয়ে চাপাচুপি দিয়ে রাখা হয়। মাঝেরহাট সেতুতেও তেমনটাই হয়েছে বলে জানাচ্ছে ফরেন্সিক বিভাগ। কম্পিউটার প্রযুক্তির সাহায্যে ওই সেতুর ভাঙা অংশ পরীক্ষা করে তারা জেনেছে, ফাটল ছিল। কিন্তু তা মেরামত করা হয়নি। তার উপরেই বারবার দেওয়া হয় পিচের আস্তরণ।
ফরেন্সিকের একটি সূত্র জানাচ্ছে, এ বিষয়ে আরও অনুসন্ধান চলছে। বৃহস্পতিবার সেতুর লোহার পাত, কংক্রিটের চাঙড়-সহ ফের কিছু নমুনা সংগ্রহ করেছে তারা। সেগুলির গুণমান পরীক্ষা করা হবে। মঙ্গলবার বিকেলে ওই সেতু ভেঙে প়ড়ায় মেট্রো রেলের দুই শ্রমিক এবং বেহালার এক যুবকের মৃত্যু হয়। আহত ২৫ জন।
ওই সেতু যে বেহাল হয়ে পড়েছিল, মানছে পূর্ত দফতরের একাংশও। তারা বলছে, পূর্ত দফতরের পরিকল্পনা শাখা নবান্নে রিপোর্ট দিয়ে জানিয়েছিল, মাঝেরহাট সেতুর অবস্থা খারাপ। তাই ওই সেতুতে যান নিয়ন্ত্রণ করা দরকার। কিন্তু সেই রিপোর্ট দেখেও
কোনও কাজ করা হয়নি বলে অভিযোগ। পুলিশ জানায়, সেতুর রক্ষণাবেক্ষণের দায়িত্বপ্রাপ্ত সরকারি অফিসার এবং মেট্রো প্রকল্পে যুক্ত ঠিকাদার সংস্থার কর্তাদের জিজ্ঞাসাবাদ করা হবে।
পোস্তার উড়ালপুলের ঘটনায় নির্দিষ্ট অভিযুক্তকে চিহ্নিত করে মামলা রুজু করা হলেও মাঝেরহাট কাণ্ডে বুধবার অজ্ঞাতপরিচয়ের বিরুদ্ধে মামলা রুজু করেছে লালবাজার। এ দিন এই ঘটনায় বিশেষ তদন্তকারী দল (সিট) গঠন করল লালবাজার। পুলিশ জানিয়েছে, ডিসি ডিডি (স্পেশ্যাল) বদনা বরুণ চন্দ্রশেখরের নেতৃত্বে ১৯ সদস্যের ওই দল তৈরি করা হয়েছে।
তাতে থানার আধিকারিকদের সঙ্গে রয়েছেন গোয়েন্দা বিভাগের গুন্ডাদমন শাখা, হোমিসাইড শাখার পাশাপাশি ব্যাঙ্ক জালিয়াতি দমন শাখার গোয়েন্দারা। গুন্ডা দমন শাখার এক ইনস্পেক্টরকে তদন্তকারী অফিসার হিসেবে নিয়োগ করা হয়েছে। পুলিশি সূত্রের খবর, নির্মীয়মাণ মেট্রো প্রকল্পের শ্রমিক-সহ প্রায় ৬০ জনের বক্তব্য ভিডিয়োয় রেকর্ড করা
হয়েছে। তাঁরা পুলিশকে জানান, মেট্রোর স্তম্ভের পাইলিংয়ের কাজ বছরখানেক আগে শেষ হয়েছিল। দুর্ঘটনাগ্রস্ত গাড়িগুলির ফরেন্সিক পরীক্ষাও করানো হবে বলে পুলিশি সূত্রের খবর।