শহরে ফিরেও বাড়ি যাওয়া হল না পাঁচ বন্ধুর

বৃহস্পতিবার ভোরে রিজেন্ট পার্ক থানার পুলিশ বিহারের বখতিয়ারপুর থেকে ওই পাঁচ জনকে নিয়ে কলকাতায় ফেরে। থানায় বসিয়ে চা, রুটি, মিষ্টি খেতে দেওয়া হয় ওই পড়ুয়াদের।

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা

শেষ আপডেট: ১৬ ফেব্রুয়ারি ২০১৮ ০১:৩৭
Share:

উদ্ধার: বিহার থেকে ফেরার পরে ওই পড়ুয়ারা। নিজস্ব চিত্র

বাড়ি থেকে ওরা পালিয়েছিল ভিন্ রাজ্যে। চার দিন পরে পুলিশের হাত ধরে নিজ মুলুকে ফিরল ঠিকই। কিন্তু তা-ও ওদের বাড়ি ফেরা হল না। আইনি গেরোয় পূর্ব পুটিয়ারির নতুনপল্লির পাঁচ পড়ুয়ার আপাতত ঠাঁই হয়েছে হোমে। আগামী সোমবার রাজ্যের শিশু কল্যাণ সমিতির কাছে তাদের পেশ করা হবে। ওই পাঁচ জন কবে বাড়ি ফিরবে, তা নির্ভর করছে সমিতির নির্দেশের উপরেই। পুলিশ জেনেছে, পড়াশোনার জন্য মা-বাবার বকুনি খেয়ে অভিমানেই বাড়ি থেকে পালানোর ছক কষেছিল তারা।

Advertisement

বৃহস্পতিবার ভোরে রিজেন্ট পার্ক থানার পুলিশ বিহারের বখতিয়ারপুর থেকে ওই পাঁচ জনকে নিয়ে কলকাতায় ফেরে। থানায় বসিয়ে চা, রুটি, মিষ্টি খেতে দেওয়া হয় ওই পড়ুয়াদের। পুলিশ জানায়, বুধবার রাতেই ওই পড়ুয়াদের অভিভাবকদের বলা হয়েছিল এ দিন সকাল ১০টা নাগাদ থানায় চলে আসতে। সেই মতো নির্দিষ্ট সময়ের কিছু ক্ষণ আগেই চলে আসেন পাঁচ পড়ুয়ার পরিজনেরা। কিন্তু ছেলে, মেয়ের সঙ্গে কাউকেই তেমন ভাবে কথা বলতে দেননি পুলিশকর্মীরা।

তবে কিছুটা দূর থেকে হলেও সন্তানদের দেখে চোখের জল বাঁধ মানেনি বাবা-মায়ের। আবার, কয়েক জন পড়ুয়াও কেঁদে ফেলেছে পরিজনেদের দেখে। পুলিশ জানায়, দুই নাবালিকা অর্পিতা সরকার ও প্রিয়া কর্মকারকে ইলিয়ট রোডের একটি হোমে পাঠানো হয়েছে। অন্য দিকে অভিজিৎ সরকার, প্রিন্স সাউ, দেবরাজ ঘোষকে পাঠানো হয়েছে এন্টালির পটারি রোডের একটি হোমে। অভিজিৎ ও অর্পিতার বাবা মিন্টু সরকার বলেন, ‘‘এই ক’দিন দু’চোখের পাতা এক করতে পারিনি। খালি ভেবেছি কখন ওদের দেখতে পাব।’’ প্রিন্সের বাবা প্রদীপ সাউ বলেন, ‘‘পুলিশের উপরে ভরসা রয়েছে। হয়তো সমিতি থেকেই ওদের বাড়ি নিয়ে যেতে পারব।’’ সোমবার ইলিয়ট রোডে শিশু কল্যাণ সমিতিতে পাঁচ জনের বাবা-মাকেও উপস্থিত হতে বলা হয়েছে।

Advertisement

প্রাথমিক ভাবে তদন্তকারীরা জেনেছেন, এক মাস আগেই তারা বাড়ি থেকে পালানোর পরিকল্পনা করেছিল। সেই মতো রবিবার বিকেলে বেরোয় ওই পাঁচ জন-সহ রাজদীপ জানা নামে আর এক বালক। প্রথমে কুঁদঘাট থেকে মেট্রো ধরে ধর্মতলা নেমে বাসে তারা যায় হাওড়া স্টেশন। সেখান থেকে লোকাল ট্রেন ধরে বর্ধমান। তবে মাঝপথে শৌচাগারে যাওয়ার জন্য ব্যান্ডে‌লে নেমে পড়ে রাজদীপ। এর পরে সে বাড়ি ফিরে আসলেও তদন্তকারীদের বারবার বিভ্রান্ত করছিল বলে পুলিশ জানিয়েছে। তবে বাকি পাঁচ জন বর্ধমান থেকে মোকামা ফাস্ট প্যাসেঞ্জার ধরে চলে যায় বখতিয়ারপুরে। সেখানে প্রিন্সের মামার বাড়িতে মঙ্গলবার সকালে সবাই পৌঁছয়। সেখান থেকে খবর পেয়ে বুধবার বখতিয়ারপুর রওনা দেয় পুলিশ।

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
আরও পড়ুন
Advertisement