প্রতীকী ছবি।
সূচনার পরে ছ’বছর পেরিয়ে গিয়েছে। তবুও অসম্পূর্ণ প্রকল্পের তকমা সেঁটে আছে আর জি কর মেডিক্যাল কলেজের ট্রমা সেন্টারের গায়ে। যার অন্যতম কারণ চিকিৎসকের অভাব। এমনই জানাচ্ছে রাজ্য স্বাস্থ্য দফতর।
আর জি কর সূত্রে খবর, এই সেন্টারে নিউরো মেডিসিন ও নিউরো সার্জারি বিভাগ মিলিয়ে ৫০টি শয্যা রয়েছে। এই সেন্টারে অর্থোপেডিক, জেনারেল সার্জারি, বার্ন, প্লাস্টিক সার্জারি, নেফ্রোলজি-সহ বেশ কিছু গুরুত্বপূর্ণ বিভাগ এবং আরও ৭০টি শয্যা শুরু করার প্রস্তাব ছিল। ২৪ ঘণ্টার ডায়ালিসিস ইউনিট এবং বেশ কিছু পরীক্ষার ব্যবস্থা চালু করারও কথা ছিল।
কিন্তু তা হল না কেন? আর জি কর মেডিক্যাল কলেজ ও হাসপাতালের অধ্যক্ষ শুদ্ধোদন বটব্যাল বলেন, ‘‘ভবন-সহ সব কিছুই প্রায় তৈরি। ডাক্তারের অভাবেই কাজ সম্পূর্ণ করা যাচ্ছে না। আরও নার্স লাগবে। ২৪ ঘণ্টার ডায়ালিসিসের ব্যবস্থাও জরুরি। সব জানিয়ে স্বাস্থ্য ভবনকে চিঠি দেওয়া হলে আশ্বাস পেয়েছি।’’ ট্রমা কেয়ার পুরোদমে চালু করতে কত জন চিকিৎসক প্রয়োজন? উত্তর দিতে নারাজ অধ্যক্ষের দাবি, ‘‘ট্রমা কেয়ারের জন্য নির্দিষ্ট চিকিৎসক তো পাইনি! ট্রমা কেয়ারের নিউরোর বিভাগ দু’টি চলছে হাসপাতালের চিকিৎসকদের দিয়ে। তাঁরা একই সঙ্গে হাসপাতাল এবং সেন্টার সামলাচ্ছেন। ট্রমাতে আসা রোগীদের বাকি চিকিৎসা হাসপাতালে হয়। শয্যা খালি থাকলে তবেই তা সম্ভব হয়।’’
এখানেই ট্রমা কেয়ার তার যৌক্তিকতা হারাচ্ছে বলে মত বিশেষজ্ঞদের। দুর্ঘটনাগ্রস্ত রোগীর প্রয়োজন দ্রুত চিকিৎসার। যদি তাঁকে অন্য রোগীদের ভিড়েই মিশিয়ে দেওয়া হয়, তবে সাধারণ পদ্ধতিতেই চিকিৎসা হল। কোটি কোটি টাকা খরচে তবে ট্রমা সেন্টার তৈরির অর্থ কী তা নিয়ে প্রশ্ন তুলেছেন চিকিৎসকেরা। অধ্যক্ষের সাফাই, ‘‘এ ক্ষেত্রে আমরাই বা কী করতে পারি?’’
২০০৮-এ ট্রমা সেন্টার তৈরির পরিকল্পনা হয়েছিল। তা হলে চিকিৎসকের অভাব মেটাতে দীর্ঘ ন’বছরে কী করেছে সরকার? ২০১১-র মার্চে বিধানসভা ভোটের মুখে ট্রমা সেন্টারটির তড়িঘড়ি উদ্বোধন করে তৎকালীন বাম সরকার। নতুন সরকার এসেও সেই প্রস্তাবে সায় দেয়। এর অন্যতম কারণ, প্রতি দিন শহর এবং জেলা থেকে আসা দুর্ঘটনাগ্রস্ত রোগীর চাপ সামলাতে হয় আর জি করকে।
চিকিৎসক নিয়োগ নিয়ে রাজ্য স্বাস্থ্য দফতরের পরিকল্পনা কী? রাজ্য স্বাস্থ্য শিক্ষা অধিকর্তা দেবাশিস ভট্টাচার্যের সঙ্গে ফোনে ও এসএমএসে যোগাযোগ করা হলে জবাব মেলেনি।