ফাইল চিত্র।
সরকারি হাসপাতালের কোভিড ওয়ার্ডে ঢুকে রোগিনীর সোনার গয়না লুঠের অভিযোগ উঠল। কলকাতা শহরের প্রথম সারির কোভিড হাসপাতাল, মেডিক্যাল কলেজের সুপার স্পেশ্যালিটি ব্লকে বৃহস্পতিবার এই ঘটনা ঘটেছে বলে অভিযোগ।
পুলিশ সূত্রে জানা গিয়েছে, বসিরহাটের বাসিন্দা এক মহিলা মেডিক্যাল কলেজের এসএসবি ব্লকের আট তলায় ভর্তি ছিলেন। ওই ওয়ার্ডটি মহিলা কোভিড রোগীদের জন্য নির্দিষ্ট। জানা গিয়েছে, ৭৭২ নম্বর বেডের রোগিনীর কাছে পিপিই কিট পরে এ দিন দুপুরে এক যুবক হাজির হন। তিনি নিজেকে হাসপাতালের কর্মী বলে পরিচয় দেন। রোগিনীর অভিযোগ, ওই ব্যক্তি তাঁকে বলেন, হাসপাতালের নিয়ম অনুযায়ী সোনার গয়না-সহ মূল্যবান জিনিসপত্র কাছে রাখা যাবে না। এর পরেই তিনি বলেন, তাঁকে দিয়ে দিলে নীচে রোগীর আত্মীয়দের কাছে ওই সব জিনিসপত্র পৌঁছে দেবেন। তিনি ওই ব্যক্তির কথা শুনে তাঁকে অবিশ্বাস করতে পারেননি বলে হাসপাতাল কর্তৃপক্ষের কাছে দাবি করেছেন রোগিনী। তিনি সরল বিশ্বাসে হাসপাতাল কর্মী ভেবেই নিজের গলার সোনার হার ও আংটি খুলে দেন পিপিই পরা ওই ব্যক্তিকে।
হাসপাতাল সূত্রে খবর, ওয়ার্ড থেকে বেরনোর সময় ওই ব্যক্তি এক নার্সের মুখোমুখি হন। নার্সের সন্দেহ হয়। তিনি ওই ব্যক্তিকে দাঁড় করিয়ে প্রশ্ন করেন, কেন তিনি মহিলাদের কোভিড ওয়ার্ডে ঢুকেছেন? জবাবে তিনি নার্সকে জানান, রোগীর পরিবারের তরফেই তাঁকে গয়না নিতে উপরে পাঠানো হয়েছে। কিন্তু বিষয়টি ওই নার্সের বিশ্বাসযোগ্য মনে হয়নি। পালিয়ে যাওয়ার আগে তিনি ওই ব্যক্তিকে ধরার চেষ্টা করেন। পিছনে তাড়াও করেন। কিন্তু লাভ হয়নি।
আরও পড়ুুন: কংগ্রেস রাজনীতিতে এক অধ্যায়ের অবসান, প্রয়াত সোমেন মিত্র
আরও পড়ুুন: সোমেনের মৃত্যুতে শোকবার্তা মমতা-অধীরের, কঠিন সময়ে পাশে পেয়েছি বললেন রাহুল
এর পরই হাসপাতালের তরফে যোগাযোগ করা হয় রোগীর পরিবারের সঙ্গে। তাঁদের সঙ্গে কথা বলে হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ বুঝতে পারেন যে ওয়ার্ডের মধ্যে পৌঁছে গিয়েছে প্রতারকরা। হাসপাতাল কর্তৃপক্ষই খবর দেন মেডিক্যাল কলেজ চত্বরে থাকা পুলিশ আউট পোস্টে। সূত্রের খবর, হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ পুলিশকে জানিয়েছেন, পিপিই পরা ব্যক্তি হাসপাতালেরই কর্মী। তদন্তকারীদেরও ধারণা, বাইরে থেকে কেউ পিপিই পরে হাসপাতালে ঢুকে কেপমারি করবে না। হাসপাতাল কর্তৃপক্ষের প্রাথমিক সন্দেহ গিয়ে পড়েছে চুক্তিভিত্তিক কয়েক জন সাফাইকর্মীর উপর। এর আগেও ওই সাফাইকর্মীদের বিরুদ্ধে অভিযোগ উঠেছিল, রোগীর আত্মীয়দের কাছ থেকে জল এবং খাবার পৌঁছে দেওয়ার নাম করে মোটা টাকা প্রতারণা করার। কলকাতা পুলিশের এক শীর্ষ কর্তা বলেন, ‘‘বৌবাজার থানায় অভিযোগ দায়ের করা হয়েছে। তিন জনকে আটক করে জেরা করা হচ্ছে।” তাঁর দাবি, ‘‘একটা চক্র গজিয়ে উঠেছে। আমরা তার পান্ডাদের পাকড়াও করার চেষ্টা করছি।” হাসপাতালের সুপার ইন্দ্রনীল বিশ্বাসের সঙ্গে যোগাযোগ করা হলে তিনি বলেন, ‘‘আমরা এখনও এ বিষয়ে কোনও লিখিত অভিযোগ পাইনি।”
(জরুরি ঘোষণা: কোভিড-১৯ আক্রান্ত রোগীদের জন্য কয়েকটি বিশেষ হেল্পলাইন চালু করেছে পশ্চিমবঙ্গ সরকার। এই হেল্পলাইন নম্বরগুলিতে ফোন করলে অ্যাম্বুল্যান্স বা টেলিমেডিসিন সংক্রান্ত পরিষেবা নিয়ে সহায়তা মিলবে। পাশাপাশি থাকছে একটি সার্বিক হেল্পলাইন নম্বরও।
• সার্বিক হেল্পলাইন নম্বর: ১৮০০ ৩১৩ ৪৪৪ ২২২
• টেলিমেডিসিন সংক্রান্ত হেল্পলাইন নম্বর: ০৩৩-২৩৫৭৬০০১
• কোভিড-১৯ আক্রান্তদের অ্যাম্বুল্যান্স পরিষেবা সংক্রান্ত হেল্পলাইন নম্বর: ০৩৩-৪০৯০২৯২৯)