২২ এবং ২৩ মে লন্ডনে সভায় যোগ দেওয়ার কথা ছিল ব্রাত্য এবং ফিরহাদের। ফাইল চিত্র।
এসএসসি নিয়োগে দুর্নীতি মামলায় ‘চাপে’ শিক্ষা দফতর তথা রাজ্য সরকার। এই পরিস্থিতিতে তাঁর প্রস্তাবিত এবং পূর্ব পরিকল্পিত লন্ডন সফর বাতিল করলেন শিক্ষামন্ত্রী ব্রাত্য বসু। শনিবারই লন্ডন পাড়ি দেওয়ার কথা ছিল তাঁর। সূত্রের খবর, রাজ্যের শিক্ষা প্রতিমন্ত্রী এবং প্রাক্তন শিক্ষামন্ত্রী যখন সিবিআইয়ের জেরার মুখোমুখি, তখন বিদেশ সফর বাতিল করাই বিধেয় বলে মনে করেছেন ব্রাত্য। তবে প্রশাসনিক সূত্রের খবর, স্বয়ং মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ই ব্রাত্যকে আপাতত বিদেশে না-যাওয়ার নির্দেশ দিয়েছেন।
ব্রাত্যের সঙ্গে লন্ডনে যাওয়ার কথা ছিল রাজ্যের শিক্ষা সচিব মনীশ জৈনেরও। তাঁর সফরও বাতিল। কারণ, সূত্রের দাবি, মণীশকেও এসএসসি তদন্তে ডেকে পাঠাতে পারে সিবিআই।
ঘটনাচক্রে, পরিবহণ মন্ত্রী তথা কলকাতার মেয়র ফিরহাদ হাকিমেরও লন্ডন যাওয়ার কথা ছিল। সূত্রের খবর, তিনিও ওই সফরে যাচ্ছেন না। তবে এর সঙ্গে এসএসসি মামলার যোগ নেই। প্রশাসনিক সূত্রের বক্তব্য, এই ‘সঙ্কট সময়ে’ ফিরহাদকে দেশ ছাড়তে নিষেধ করেছেন মুখ্যমন্ত্রী মমতাই। মুখ্যমন্ত্রীর নির্দেশেই দুই মন্ত্রী তাঁদের বিদেশ সফর বাতিল করেছেন।
রবি এবং সোমবার লন্ডনে শিক্ষা সংক্রান্ত একটি আলোচনা সভায় যোগ দেওয়ার কথা ছিল শিক্ষামন্ত্রী ব্রাত্য এবং রাজ্যের শিক্ষা সচিব মণীশ জৈনের। শনিবারই তাঁদের ইংল্যান্ডে যাওয়ার কথা ছিল। শিক্ষামন্ত্রীর ঘনিষ্ঠ সূত্রের বক্তব্য, লন্ডনের ওই সভার পর ব্রাত্যের সঙ্গে যোগ দেওয়ার কথা ছিল তাঁর স্ত্রী পৌলোমীর। তাঁদের দু’জনের যাওয়ার কথা ছিল স্কটল্যান্ডে। ‘পরিবর্তিত’ পরিস্থিতিতে সেই সফরও বাতিল করেছেন ব্রাত্য।
শনিবার তৃতীয় বারের জন্য সিবিআইয়ের মুখোমুখি হয়েছেন রাজ্যের শিক্ষা প্রতিমন্ত্রী পরেশ। বেলা ১১টা থেকে তাঁকে জেরা শুরু করেছেন কেন্দ্রীয় তদন্তকারী সংস্থার আধিকারিকরা। সিবিআই সূত্রের বক্তব্য, মেয়ে অঙ্কিতা অধিকারীর চাকরির জন্য মন্ত্রী হিসেবে পরেশ প্রভাব খাটিয়েছেন কি না, কাকে ফোন করেছেন, কার কার সঙ্গে যোগাযোগ করেন, সে সব তথ্য জানতে চায় সিবিআই। পরেশ ও প্রাক্তন শিক্ষামন্ত্রী পার্থ চট্টোপাধ্যায়কে মুখোমুখি বসিয়ে জিজ্ঞাসাবাদ করা হতে পারে বলেও খবর সিবিআইয়ের একটি সূত্রের দাবি।
সিবিআইয়ের নজরে রয়েছে এসএসসি উপদেষ্টা কমিটির পাঁচ সদস্যের সম্পত্তিও। সূত্রের খবর, গত পাঁচ বছরে কমিটির চেয়ারম্যান শান্তিপ্রসাদ সিন্হা-সহ ওই কমিটির সদস্যদের আয়কর রিটার্ন, ব্যাঙ্ক অ্যাকাউন্টের নথি দেখতে চেয়েছে সিবিআই। পাশাপাশি, শান্তিপ্রসাদের বিরুদ্ধে নতুন একটি এফআইআর দায়ের করেছে কেন্দ্রীয় তদন্তকারী সংস্থা। প্রত্যাশিত ভাবেই, উদ্ভূত পরিস্থিতিতে রাজ্য সরকারকে আক্রমণের ভাষা আরও ধারালো করেছে প্রধান বিরোধীদল বিজেপি। পথে নেমেছে সিপিএম এবং কংগ্রেসও। শনিবার কাঁথির সভা থেকে রাজ্যের মন্ত্রীদের তুলোধনা করেছেন বিরোধী দলনেতা শুভেন্দু অধিকারী।