কর্মকাণ্ড: মাঝেরহাট সেতু তৈরির কাজ চলছে। সোমবার। ছবি: সুমন বল্লভ
মাঝেরহাট সেতু নির্মাণের পথে এ বার কাঁটা মেট্রো রেলের স্তম্ভ! সেই স্তম্ভ আবার বাধা হয়ে উঠছে গার্ডেনরিচ উড়ালপুলের রাস্তাতেও। প্রশাসন সূত্রের খবর, মাঝেরহাট সেতুর উত্তর দিকের ঢাল যেখানে ডায়মন্ড হারবার রোডে এসে মিশছে, তার পাশেই জোকা-বি বা দী বাগ মেট্রোর চারটি স্তম্ভ তৈরি হওয়ার কথা। সেই স্তম্ভের ভিত তৈরি বা ‘পাইলিং’ হওয়ার আগে যদি মাঝেরহাট সেতু তৈরি হয়ে যায় তা হলে বিপত্তি। কারণ, পাইলিং করার সময়ে ফের ভাঙতে হবে সেতুর একাংশ।
প্রশাসনের খবর, মেট্রো রেল যে তড়িঘড়ি স্তম্ভ তৈরি করবে সেই উপায়ও নেই। কারণ নকশা অনুযায়ী নির্দিষ্ট জায়গায় স্তম্ভ তৈরি হলে গার্ডেনরিচ উড়ালপুলে ওঠার রাস্তা বন্ধ হয়ে যাবে। তা হলে উপায়?
সূত্রের খবর, সেই উপায় খুঁজতে দিন কয়েক আগে ওই এলাকা পরিদর্শন করেন পূর্ত দফতর, কলকাতা পুলিশ, মেট্রো রেল নির্মাণের দায়িত্বে থাকা রেলওয়ে বিকাশ নিগম লিমিটেড (আরভিএনএল) এবং কলকাতা বন্দরের আধিকারিকেরা। তাতে দেখা যায়, রিমাউন্ট রোড থেকে কাঁটাপুকুরের পিছন দিকে একটি ৮০০ মিটার রাস্তা তৈরি করলে গার্ডেনরিচ উড়ালপুলে ওঠার বিকল্প পথ করা সম্ভব। তা হলে স্তম্ভ তৈরি হলেও অসুবিধা হবে না। পুলিশ সূত্রের দাবি, বন্দর ওই রাস্তা তৈরির জন্য জমি দিতে রাজি হয়েছে। সেখানে আরভিএনএল রাস্তা তৈরি করে দেবে।
২০১৮ সালের ৪ সেপ্টেম্বর ভেঙে পড়েছিল মাঝেরহাট সেতু। ওই সেতু পুরোপুরি ভেঙে নতুন সেতু (কেব্ল ব্রিজ) তৈরি হবে। প্রশাসনের খবর, বিদ্যাসাগর সেতুর ধাঁচে প্রায় ৮০০ মিটার লম্বা ওই সেতু তৈরি করতে প্রায় ২০০ কোটি টাকা খরচ হবে। সেই কাজ শুরু হয়েছে। তবে কাজের গতি কিছুটা ধীর। সূত্রের খবর, মাঝেরহাটে রেললাইনের উপরে সেতুর প্রায় ১০০ মিটার অংশ থাকবে। ওই নির্মাণের জন্য কমিশনার অব রেলওয়ে সেফটির ছাড়পত্র প্রয়োজন। তা এখনও
আসেনি। সম্প্রতি ওই নির্মাণের বিষয়ে রেল এবং পূর্ত দফতরের কাছে কয়েক দফা প্রশ্ন পাঠিয়েছে কমিশনার অব রেলওয়ে সেফটির দফতর। কেন ‘কেব্ল ব্রিজ’ তৈরি করা হচ্ছে, কেন রেলের উপরের অংশ রেলকে তৈরি করতে না-দিয়ে পূর্ত দফতর তা নিজের হাতে রেখেছে— সেই সব প্রশ্ন তাতে তোলা হয়েছে।
এর কারণ কী? প্রশাসনের কর্তারা বলছেন, এটা কোনও জটিলতা নয়। নিয়মমাফিক কারণ দর্শাতে বলা হয়েছে। কারণ, ওই অংশের নির্মাণ নিয়ে রেল ও পূর্ত দফতর আগেই সহমত হয়েছে। আগামী ১০ ফেব্রুয়ারির মধ্যে তারা জবাব পাঠিয়ে দিলে শীঘ্রই ছাড়পত্র মিলবে বলে মনে করছেন পূর্ত দফতরের আধিকারিকদের একাংশ।