প্রতীকী ছবি।
ভিড়ে ঠাসা মেট্রোর বাতানুকূল যন্ত্র বিকল থাকে হামেশাই। তা নিয়ে যাত্রীদের ক্ষোভ প্রকাশও নতুন নয়। কিন্তু বুধবার সেই বিক্ষোভই বড় আকার নিল। শ্যামবাজার স্টেশনে মেট্রোর কর্মীদের সঙ্গে উত্তপ্ত বচসায় জড়ালেন যাত্রীরা। গন্তব্যে ট্রেন পৌঁছল ছ’মিনিট দেরিতে। দেরি করল পরের বেশ ক’টি ট্রেনও।
যাত্রীদের অভিযোগ, দুপুর ১২টা ৩৫-এর ট্রেনটি দমদম ছাড়তেই শুরু হয় এসি-র সমস্যা। মোটরম্যানের কেবিনের বন্ধ দরজায় ধাক্কা মেরে সাহায্য চান যাত্রীরা। সঙ্গে অনুনয়, ‘দমবন্ধ হয়ে আসছে। দয়া করে এসি চালু করুন!’ কিন্তু কোনও সাড়া মেলেনি বলে অভিযোগ।
সে ভাবেই দু’টো স্টেশন পার করে ট্রেন পৌঁছয় শ্যামবাজারে। অভিযোগ, ততক্ষণে এসি ট্রেনের সওয়ার যাত্রীরা ঘেমে-নেয়ে একশা। এমনকী, বয়স্ক কয়েক জনের শ্বাসকষ্টও শুরু হয়ে গিয়েছিল। এর পরেই শ্যামবাজার স্টেশনে ঢোকার মুখে কয়েক জন যাত্রী মোটরম্যানের কেবিনের দরজা ভেঙে ফেলতে উদ্যত হন।
যাত্রীদের বক্তব্য, তা দেখে নড়ে বসে মেট্রো। শ্যামবাজার স্টেশনে ট্রেনটি দাঁড়াতেই হাজির হন রেল রক্ষী বাহিনীর এক জওয়ান। কেন তাঁরা মোটরম্যানের কেবিনের দরজায় ধাক্কা দিচ্ছিলেন, লাঠি উঁচিয়ে কড়া ভাষায় জানতে চান তিনি। লাঠি দিয়ে মারার ভয়ও দেখান। এক প্রবীণ যাত্রীর মন্তব্য, ‘‘এর পরেই আমাদের সকলের ধৈর্যের বাঁধ ভেঙে যায়। আমরা সকলে মিলে একসঙ্গে প্রতিরোধ তৈরি করি।’’
যাত্রীরা ঠিক করে নেন, এসি চালু না হলে ট্রেনই ছাড়তে দেবেন না তাঁরা। ট্রেনের দরজা যাতে বন্ধ না হয়, সে জন্য কয়েক জন চেপে ধরে রেখেছিলেন দরজা। মিনিট তিন-চার ওই ভাবেই আরপিএফের সঙ্গে বচসা চলে। তার মধ্যেই চালু হয়ে যায় এসি। যাত্রীরা ট্রেনের দরজা থেকে সরে আসেন।
ওই ট্রেনের এক যাত্রীর মন্তব্য, ‘‘আমরা দম নিতে পারছিলাম না। প্রতি মুহূর্তেই মনে হচ্ছিল পড়ে যাব।’’ সেই ট্রেনে করেই কলেজে যাচ্ছিলেন দমদমের এক তরুণী। তিনি বলেন, ‘‘বেলগাছিয়া স্টেশনে ট্রেন ঢোকার সময়ে আমরা চালকের কেবিনে ধাক্কা মেরেছিলাম। কাজ হয়নি। তাই শ্যামবাজার স্টেশনে ট্রেন ঢোকার মুখে একসঙ্গে অনেকে মিলে ঝাঁপিয়ে পড়লাম চালকের কেবিনের উপরে। তাতেই কাজ হল।’’ বাকি যাত্রাপথে অবশ্য আর ভোগান্তি হয়নি। কেন এমন হল, সে ব্যাপারে মুখ খুলতে না চাইলেও এক মেট্রো কর্তা আরপিএফ জওয়ানের আচরণের নিন্দা করেছেন।