চিকিৎসা-বর্জ্য নিয়ে দূষণ-দোষে এনআরএস, আরজিকর

একের পর এক বেসরকারি হাসপাতাল আর নার্সিংহোমের নানা গাফিলতি নিয়ে চারপাশে যখন প্রবল আলোড়ন, তখন রাজ্য সরকারের দুই মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালকে ‘কাঠগড়ায়’ দাঁড় করাল জাতীয় পরিবেশ আদালত।

Advertisement

কুন্তক চট্টোপাধ্যায়

শেষ আপডেট: ১০ মার্চ ২০১৭ ০০:২৯
Share:

বিপজ্জনক: এ ভাবেই ফেলা হয় চিকিৎসা বর্জ্য। —ফাইল চিত্র।

একের পর এক বেসরকারি হাসপাতাল আর নার্সিংহোমের নানা গাফিলতি নিয়ে চারপাশে যখন প্রবল আলোড়ন, তখন রাজ্য সরকারের দুই মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালকে ‘কাঠগড়ায়’ দাঁড় করাল জাতীয় পরিবেশ আদালত। চিকিৎসায় গাফিলতি নয়, দুই সরকারি মেডিক্যাল কলেজের বিরুদ্ধে অভিযোগ উঠেছে চিকিৎসা-বর্জ্য নিয়ে দূষণ-বিধি না মানার। পরিবেশকর্মীদের অভিযোগ, চিকিৎসা-বর্জ্য নষ্ট না করলে শুধু হাসপাতাল নয়, আশপাশেও দূষণ ও রোগ-জীবাণু ছড়ায়।

Advertisement

সুব্রত মুখোপাধ্যায় নামে এক আইনজীবীর দায়ের করা চিকিৎসা-বর্জ্যের দূষণ সংক্রান্ত একটি মামলায় বৃহস্পতিবার জানা গিয়েছে, আর জি কর এবং এন আর এসের কাছে রাজ্য দূষণ নিয়ন্ত্রণ পর্ষদের কোনও ছাড়পত্রই নেই! প্রয়োজনীয় অনুমোদন ছাড়াই দু’টি সরকারি মেডিক্যাল কলেজ কী ভাবে চলছে, সেই প্রশ্ন তুলেছে আদালত। বৃহস্পতিবার এ ব্যাপারে রাজ্য দূষণ নিয়ন্ত্রণ পর্ষদকে ব্যবস্থা নিতেও নির্দেশ দিয়েছে বিচারপতি এস পি ওয়াংদি এবং বিশেষজ্ঞ-সদস্য পি সি মিশ্রের ডিভিশন বেঞ্চ।

রাজ্য দূষণ নিয়ন্ত্রণ পর্ষদের প্রাক্তন মুখ্য আইন অফিসার বিশ্বজিৎ মুখোপাধ্যায় বলছেন, ছাড়পত্র না থাকলে হাসপাতাল বন্ধ করে দেওয়ার ক্ষমতা পর্ষদের রয়েছে। এর আগে আলিপুরের একটি বেসরকারি হাসপাতালকে এই অপরাধে বন্ধ করা হয়েছিল। ‘‘সরকারি হাসপাতাল বন্ধ করে দেওয়া হয়তো সম্ভব নয়। কিন্তু হাসপাতালের কর্তাদের
শাস্তি হওয়া উচিত,’’ বলছেন শহরের এক পরিবেশকর্মী।

Advertisement

আরও পড়ুন

বিচারের আশায় আজও দোরে দোরে ঘুরছেন মৃতার বাবা

পরিবেশবিদেরাও জানান, রক্তমাখা তুলো, গজ, সিরিঞ্জের মতো চিকিৎসা-বর্জ্য পরিবেশ এবং জনস্বাস্থ্যের পক্ষে যথেষ্ট ক্ষতিকারক। তাই আর পাঁচটা বর্জ্যের মতো এগুলিও নির্দিষ্ট উপায়ে নষ্ট করে ফেলা উচিত। চিকিৎসা-বর্জ্য নষ্ট করার নির্দিষ্ট পদ্ধতি ও নিয়ম রয়েছে। কিন্তু এ শহরে চিকিৎসা-বর্জ্য নিয়ে যে এখনও সেই সচেতনতা এবং পরিকাঠামো গড়ে ওঠেনি, তা মেনে নিয়েছেন দূষণ নিয়ন্ত্রণ পর্ষদের একাধিক কর্তা। ফলে শুধু সরকারি নয়, অনেক বেসরকারি হাসপাতালও যে একই দোষে দুষ্ট, তা মেনে নিয়েছেন তাঁরা।

ছাড়পত্র না থাকা নিয়ে কী বলছেন ওই দুই মেডিক্যাল কলেজের কর্তারা? আর জি কর হাসপাতালের সুপার মানস বন্দ্যোপাধ্যায়ের বক্তব্য, ‘‘এ নিয়ে খবর নিয়ে দেখতে হবে।’’ এনআরএস-এর সুপার হাসি দাশগুপ্ত বলেন, ‘‘এখনই কিছু বলতে পারছি না। আমি দেখছি কী হয়েছে।’’ সুব্রতবাবুর অভিযোগ, সরকারি এবং বেসরকারি হাসপাতালের এই গাফিলতিতে পর্ষদের একাংশের সায় রয়েছে। যদিও পর্ষদ সূত্রের দাবি, নিয়ম না মানায় তাঁরা কয়েকটি হাসপাতালের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নিয়েছেন।

মামলায় হাজির না হওয়া এবং হলফনামা জমা না দেওয়ায় এ দিন আদালতের কোপে পড়েছে দু’টি বেসরকারি চক্ষু হাসপাতালও। তাদের ডিরেক্টরদের বিরুদ্ধে গ্রেফতারি পরোয়ানা জারি করা হয়েছে। পরবর্তী শুনানির দিন পুলিশকে ওই ডিরেক্টরদের আদালতে হাজির করাতে বলা হয়েছে।

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
আরও পড়ুন
Advertisement