বন্দিদশার বেশির ভাগ সময়েই তাঁর কাটছে জেল হাসপাতালে। চিকিৎসকেরা জানিয়েছেন, নানা সংক্রমণে ভুগছেন মাতঙ্গ সিংহ।
কংগ্রেসের প্রাক্তন এই সাংসদের শারীরিক অবস্থা নিয়ে তাঁর আইনজীবী উদ্বেগের কথা জানাতেই আলাদা করে মেডিক্যাল বোর্ড গঠন করে তাঁর চিকিৎসার ব্যবস্থার নির্দেশ দিল আদালত। জানা গিয়েছে, এসএসকেএম হাসপাতালে সেই বোর্ড গঠনও করা হয়েছে।
সিবিআইয়ের হাতে বছরখানেক আগে ধরা পড়েন মাতঙ্গ। তার পর থেকে বেশির ভাগ সময়েই তিনি জেল হাসপাতালে চিকিৎসাধীন। কখনও এসএসকেএমেও তাঁর চিকিৎসা চলছে। সূত্রের খবর, ২০০৪ সালে লন্ডনের কিং কলেজ হাসপাতালে মাতঙ্গের লিভার প্রতিস্থাপিত হয়েছিল। তার পর থেকেই শারীরিক ভাবে কিছুটা কাহিল হয়ে পড়েন তিনি। চিকিৎসকদের মতে, সাধারণত লিভার প্রতিস্থাপনের পর কঠোর নিয়মের মধ্যেই থাকাটা জরুরি। যে কোনও জায়গার জল খাওয়া যায় না। জেল হেফাজতেও তাই বোতল-বন্দি জল দেওয়া হয় তাঁকে। লিভার চিকিৎসকদের মতে, প্রতিস্থাপনের পরে সংক্রমণ হওয়ার প্রবণতা থাকে। নিয়মিত পরীক্ষা ও চিকিৎসকের নির্দেশ অনুযায়ী খাদ্যাভ্যাসের মধ্যে থাকলে তা রোধ করা যায়।
মাতঙ্গের আইনজীবী সেলিম রহমানের অভিযোগ, লিভার প্রতিস্থাপনের পরে বিদেশি চিকিৎসকেরা বলেছিলেন, নিয়মিত লিভার পরীক্ষা করতে হবে। অথচ, প্রেসিডেন্সি জেলে থাকায় নিয়মিত সেই পরীক্ষা হচ্ছে না। এ কারণে, মেডিক্যাল বোর্ড গঠন করে মাতঙ্গের চিকিৎসা করার জন্য আলিপুর আদালতের বিচারক সৌগত রায়চৌধুরীর কাছে আবেদন করেছিলেন সেলিম। সেই আবেদন মঞ্জুর করা হয়েছে। মাসখানেক আগে সুপ্রিম কোর্টে সারদা রিয়েলটি মামলায় মাতঙ্গের জামিনের আবেদন খারিজ হয়ে যায়। জেল সূত্রের খবর, শরীর তো খারাপ ছিলই, তারপর থেকে মানসিক ভাবেও ভেঙে পড়েন মাতঙ্গ। ইদানীং জেলে মাঝেমধ্যেই রক্তে শর্করার মাত্রা এবং কিডনি ও ফুসফুসের সংক্রমণে ভুগছেন তিনি। সংক্রমণ এড়াতে সব সময়েই তাঁর মুখ কাপড় দিয়ে ঢেকে রাখা হয়।
সিবিআই সূত্রে জানা গিয়েছে, অসমে একটি রেডিও চ্যানেল চালানো বাবদ ২০০৯ সালে সারদা কর্তা সুদীপ্ত সেনের সঙ্গে মাতঙ্গের প্রায় চার কোটি টাকার চুক্তি হয়। পরে ২০১২ সালে একটি বৈদ্যুতিন সংবাদ চ্যানেল চালানোর জন্য আবার দু’দফায় প্রায় ২৬ কোটি টাকার চুক্তি হয়েছিল দু’জনের মধ্যে। জানা গিয়েছে, সারদা চুক্তি অনুযায়ী টাকা দিয়েছিল। এমনকী, চুক্তির বাইরে আরও কয়েক কোটি টাকা মাতঙ্গ নিয়েছিলেন বলে সিবিআইয়ের জেরায় জানিয়েছেন সুদীপ্ত।