(বাঁ দিকে) ফিরহাদ হাকিম ও অনন্যা বন্দ্যোপাধ্যায়। —ফাইল চিত্র।
পুরসভার অধিবেশনে কাউন্সিলর অনন্যা বন্দ্যোপাধ্যায়ের করা ‘যৌনগন্ধী’ মন্তব্যের জন্য জবাবদিহি চাইলেন কলকাতার মেয়র ফিরহাদ হাকিম। সোমবার পুরসভার অধিবেশনে বাজেট নিয়ে আলোচনার সময় ‘যৌনগন্ধী’ গল্প শোনান ১০৯ নম্বর ওয়ার্ডের তৃণমূল কাউন্সিলর অনন্যা। সঙ্গে সঙ্গে তাঁর মন্তব্যের প্রতিবাদ করেন অধিবেশনে উপস্থিত বিজেপির দুই কাউন্সিলর বিজয় ওঝা এবং সজল ঘোষ। খ্রিস্টান ধর্মাবলম্বীদের আবেগে আঘাত করা হয়েছে, এই অভিযোগ তুলে প্রতিবাদ করেন তৃণমূলের ৬৩ নম্বর ওয়ার্ডের কাউন্সিলর সুস্মিতা ভট্টাচার্য। ঘটনার অভিঘাত বুঝে রাতেই অনন্যার বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়ার কথা জানান মেয়র।
সোমবার রাতে নিজের এক্স (সাবেক টুইটার) হ্যান্ডলে এই বিষয়ে ফিরহাদ লেখেন, ‘‘আজ পুরসভায় বাজেট বক্তৃতায় পুর প্রতিনিধি অনন্যা বন্দ্যেপাধ্যায়ের কিছু মন্তব্য সমাজের এক সম্প্রদায়ের মানুষকে আঘাত করেছে। আমি এই বিষয়ে অত্যন্ত দৃঢ় ভাবে জানাচ্ছি যে, ওঁর এই মতের সঙ্গে দল একমত নয় এবং দলের পক্ষ থেকে এর তীব্র নিন্দা করে হচ্ছে। ওঁর কাছে তৃণমূল কংগ্রেস পুর দলের পক্ষ থেকে এই বক্তব্যের জবাবদিহি চাওয়া হয়েছে।’’ উল্লেখ্য, পুর অধিবেশনের কার্যবিবরণী থেকে চেয়ারপার্সন মালা রায় তৃণমূল কাউন্সিলর অনন্যার এই বক্তৃতার ওই অংশ বাদ দিয়ে দেন।
মেয়রের শো কজ় প্রসঙ্গে অনন্যা আনন্দবাজার অনলাইনকে বলেন, ‘‘সমাজমাধ্যমে মেয়র কী লিখেছেন দেখেছি। জবাব দেওয়ার কী আছে, আমি জানি না। আমি যা বলার প্রকাশ্যেই বলেছি। তবুও ভেবে দেখব।’’
দলও অনন্যার পাশে নেই বলে জানিয়েছেন ফিরহাদ। এ প্রসঙ্গে অনন্যা বলেন, ‘‘আমার বাক্ স্বাধীনতা আছে, দলের কোনও মতামত থাকতেই পারে। আমি কোনও অন্যায় করিনি। যে কথা নিয়ে বিতর্ক তা বলার আগে বলেছিলাম, এটা রূপকমাত্র, কাউকে আঘাত করার জন্য নয়।’’
সোমবার কলকাতা পুরসভার বাজেট বিতর্কে অংশ নিয়ে অনন্যা গল্পের ছলে যা বলেছিলেন, তাতে ১০৯ নম্বর ওয়ার্ডের তৃণমূল কাউন্সিলরের মন্তব্য নিয়ে হইচই পড়ে যায়। শুরু হয় বিতর্ক। পশ্চিমী সংস্কৃতিতে ‘ফাদার’ এবং ‘নান’দের (সন্ন্যাসিনী) সম্পর্ক নিয়ে নানা গল্পের কথা উল্লেখ করেন তিনি। এর পরে একটি গল্প শোনান। সেই ‘যৌনগন্ধী’ গল্পে বাইবেলের ১১২ নম্বর অধ্যায়ে ‘গভীরে যাও, আরও গভীরে যাও’ বাণী রয়েছে বলেও জানান। সেই সময়েই প্রতিবাদ ওঠে বিজেপির তরফে। সজল ছাড়াও প্রতিবাদ করেন ২৩ নম্বর ওয়ার্ডের বিজেপি কাউন্সিলর বিজয়। ৬৩ নম্বর ওয়ার্ডের তৃণমূল কাউন্সিলর সুস্মিতার সঙ্গেও অনন্যার বাদানুবাদ হয়। সুস্মিতা বলেন, ‘‘ফাদার-নানের সম্পর্কে ‘সেক্স’ শব্দটি উচ্চারণ করে অত্যন্ত ঘৃণ্য কাজ করেছেন অনন্যা বন্দ্যোপাধ্যায়।’’ প্রসঙ্গত, সুস্মিতা ও ১৪৩ নম্বর ওয়ার্ডের তৃণমূল কাউন্সিলর ক্রিস্টিনা বিশ্বাসও খ্রিস্টান ধর্মাবলম্বী।