মোটা অঙ্কের তোলা চাওয়ার অভিযোগ উঠল কলকাতা পুরসভার এক মেয়র পারিষদের বিরুদ্ধে। গার্ডেনরিচ শিপ বিল্ডার্সের এক ঠিকাদার এই অভিযোগ করেছেন।
অভিযোগকারী ঠিকাদার শুক্রবার বিকেলে পশ্চিম বন্দর থানা-সহ কলকাতা পুলিশের একাধিক বিভাগে ওই মেয়র পারিষদ ও তাঁর এক আত্মীয়ের বিরুদ্ধে লিখিত অভিযোগ দায়ের করেছেন। যার ভিত্তিতে তাঁদের বিরুদ্ধে তদন্ত শুরু হয়েছে। অভিযুক্ত মেয়র পারিষদের ওই আত্মীয় আবার তৃণমূলের শ্রমিক নেতা। প্রসঙ্গত উল্লেখ্য, মাস ছয়েক আগে বিধাননগরে এক ব্যাক্তির কাছে তোলা চেয়ে গ্রেফতার হয়েছিলেন বিধাননগর পুরসভার কাউন্সিলর অনিন্দ্য চট্টোপাধ্যায়।
পুলিশ জানায়, অভিযুক্ত মেয়র পারিষদের নাম শামসুজ্জামান আনসারি। তাঁর আত্মীয়ের নাম শামিম আনসারি। শামসুজ্জামান পুরসভার তথ্য ও জনসংযোগ দফতরের মেয়র পারিষদ। তিনি পুরসভার এন্টালি ওয়ার্কশপ-সহ আরও কয়েকটি দফতরের দায়িত্বে রয়েছেন। শামিম গার্ডেনরিচ শিপ বিল্ডার্সের আইএনটিটিইউসি-র সাধারণ সম্পাদক। পুলিশ সূত্রের খবর, গার্ডেনরিচ শিপ বিল্ডার্সের অন্য ঠিকাদারদের থেকে তোলা আদায়ের অভিযোগে গত নভেম্বরে এক বার গ্রেফতার করা হয়েছিল শামিমকে।
শনিবার শামসুজ্জামান আনসারির সঙ্গে যোগাযোগ করা হলে তিনি দাবি করেন, ‘‘আমার ও আমার ভাইপোর বিরুদ্ধে মিথ্যা অভিযোগ তোলা হয়েছে। পুলিশি তদন্তেই প্রকৃত ঘটনা প্রকাশ হবে।’’
পুলিশ সূত্রের খবর, সম্প্রতি গার্ডেনরিচ শিপ বিল্ডার্সের একটি ইউনিটের ১২টি শৌচাগার দেখভালের জন্য টেন্ডার ডাকা হয়। তাতে অংশ নিয়ে এক বছরের জন্য ওই কাজের বরাত পায় গার্ডেনরিচের নবাব ওয়াজিদ আলি শাহ রোডের ‘রেডিয়ান মেরিন সার্ভিস’। চলতি মাসের ১৭ তারিখ ওই টেন্ডার খোলা হয়েছিল। নিয়ম অনুযায়ী, মার্চের প্রথম দিন থেকে ওই সংস্থার কাজ শুরু করার কথা। এ জন্য কর্মী নিয়োগও শুরু হয়েছিল।
পুলিশের কাছে দায়ের করা অভিযোগে ওই বেসরকারি সংস্থার মালিক সৈয়দ কামাল মেহেদি জানিয়েছেন, বৃহস্পতিবার তিনি গার্ডেনরিচ শিপ বিল্ডার্সে গিয়েছিলেন। সেখানে এক দল যুবক নিজেদের শামসুজ্জামান ও শামিমের লোকজন দাবি করে তাঁর উপরে চড়াও হয়। তাঁকে ঘিরে ধরে দু’লক্ষ টাকা তোলা চায়।
সৈয়দের আরও অভিযোগ, বেশ কয়েক দিন ধরেই তাঁকে শামসুজ্জামানের নাম করে হুমকি দেওয়া হচ্ছিল। দু’লক্ষ টাকা তোলা না দিলে কাজ করতে দেওয়া হবে না বলে লাগাতার শাসানো হচ্ছে।
ওই ঠিকাদারের আরও অভিযোগ, বরাত অনুযায়ী শৌচাগার দেখভালের জন্য কর্মী তাঁরই সরবরাহ করার কথা। কিন্তু মেয়র পারিষদের লোকজন তাদের কাছ থেকে লোক নেওয়ার জন্য চাপ দেয়। এর আগে অন্য কাজ নিয়েও তাঁকে হুমকি দেওয়া হয়েছে বলে তাঁর অভিযোগ।
লালবাজারের খবর, অভিযোগকারী ঠিকাদার কলকাতার পুলিশ কমিশনার-সহ লালবাজারের একাধিক পুলিশকর্তার কাছে অভিযোগ করেছেন। এর পরেই শীর্ষ কর্তাদের তরফে পশ্চিম বন্দর থানাকে তদন্ত করতে নির্দেশ দেওয়া হয়।
এ দিন ওই ঠিকাদার সৈয়দ কামাল মেহেদি দাবি করেন, পুলিশে অভিযোগ জানানো হয়েছে জানার পর অভিযুক্তেরা তাঁকে ফের হুমকি দিচ্ছে।