প্রতিমা থেকে আনাজ, চড়া দাম লক্ষ্মীপুজোর বাজারে

কাপড়, রং থেকে নকল চুল— বিভিন্ন উপকরণের দাম বেড়ে যাওয়ায় বড় মাপের লক্ষ্মী প্রতিমার দাম গত কয়েক বছর ধরেই কিছুটা করে বেড়ে যাচ্ছে। এমনটাই জানিয়েছেন প্রতিমা শিল্পীদের একাংশ। তবে গৃহস্থের ঘরে এখন ছাঁচের প্রতিমাতেই বেশি পুজো হয়।

Advertisement

পিনাকী বন্দ্যোপাধ্যায়

শেষ আপডেট: ২৪ অক্টোবর ২০১৮ ০০:০০
Share:

বাছাই: পুজোর জন্য পছন্দের জিনিস কেনা। মঙ্গলবার, কুমোরটুলিতে। ছবি:স্বাতী চক্রবর্তী

কাপড়, রং থেকে নকল চুল— বিভিন্ন উপকরণের দাম বেড়ে যাওয়ায় বড় মাপের লক্ষ্মী প্রতিমার দাম গত কয়েক বছর ধরেই কিছুটা করে বেড়ে যাচ্ছে। এমনটাই জানিয়েছেন প্রতিমা শিল্পীদের একাংশ। তবে গৃহস্থের ঘরে এখন ছাঁচের প্রতিমাতেই বেশি পুজো হয়। কারুকাজ বেশি থাকলে ওই ধরনের এক-একটি প্রতিমার দাম এ বছর ৫০-১০০ টাকা বেশি পড়ছে বলেই জানিয়েছেন দোকানিরা। প্রতিমার দামের পাশাপাশি গৃহস্থের চিন্তা অবশ্য আনাজ ও ফলের বাজার নিয়েও। কারণ আজ, বুধবার লক্ষ্মীপুজোর জন্য সবেরই দাম ঊর্ধ্বমুখী বলে জানিয়েছেন শিয়ালদহের কোলে মার্কেট ও মেছুয়ার পাইকারি ব্যবসায়ীদের একাংশ। ফলে গত বছরের তুলনায় এ বারের লক্ষ্মীপুজোয় আমবাঙালির পকেট আরও একটু বেশি হাল্কা হয়ে যাবে।

Advertisement

কোলে মার্কেটের চিফ সুপারভাইজার উত্তম মুখোপাধ্যায় জানিয়েছেন, মঙ্গলবার পাইকারি বাজারে এক-একটি ফুলকপি বিক্রি হয়েছে ২০-২৫ টাকায়। আর সেই ফুলকপি কলকাতার খুচরো বাজারগুলিতে মিলেছে ৩০-৪০ টাকায়। বাঁধাকপির পাইকারি দর গিয়েছে ১০০ টাকা প্রতি পাল্লা (২০ টাকা প্রতি কেজি)। খুচরো বাজারে একটু বড় মাপের একটি বাঁধাকপিই ৩০-৩৫ টাকায় বিক্রি হয়েছে বলে জানান তিনি। খুচরো বাজারগুলিতে বেগুন ৫০ টাকা, সাদা পটল ৪০-৫০ টাকা, ভাল কুমড়ো ৩০-৩৫ টাকায় বিক্রি হয়েছে।

মেছুয়ায় ফলের পাইকারি বাজার সূত্রে জানা গিয়েছে, সেখান থেকে কেনার পরে খুচরো বাজারে আপেল ১২০-১৪০ টাকা, নাশপাতি ১০০ টাকা, দেশি পাকা পেঁপে ১০০ টাকা, পেয়ারা ৮০-১০০ টাকা, শসা ৫০-৬০ টাকায় বিক্রি হয়েছে। বহু বাজারে পানিফলের দাম এখন ৬০-৮০ টাকা কেজি। কাঁঠালি কলা মিলেছে ৫০-৬০ টাকা প্রতি ডজন। একটু বড় ঝুনো নারকেলের দাম বেড়ে হয়েছে ৪০ টাকা। বিভিন্ন বাজার ঘুরে দেখা গিয়েছে, আনাজ ও ফলের দাম গড়ে ১০-১৫ শতাংশ বেড়েছে।

Advertisement

আজ, বুধবারও বাজারে আনাজ ও ফলের দাম কিছুটা চড়া থাকবে বলে দুই পাইকারি বাজারের বিক্রেতারা জানিয়েছেন। দমদম গোরাবাজারের আনাজ বিক্রেতা মৃত্যুঞ্জয় ঘোষ জানান, চাহিদা মেটাতেই যে কোনও পুজো বা উৎসবের সময়ে পাইকারি বাজারে আনাজ ও ফলের দাম খানিকটা বেড়ে যায়। ফলে তাঁদেরও খুচরো বাজারে একটু বেশি দামেই বিক্রি করতে হয়।

শুধু আনাজ বা ফলই নয়, বাজারগুলি ঘুরে দেখা গিয়েছে, পুজোর ঘটের শীষযুক্ত ডাব থেকে নাড়ু বানানোর ঝুনো নারকেল—

এ সবেরও দাম উপরের দিকে। বিশেষ করে, পুজোর নৈবেদ্যর জন্য কাঁঠালি কলা বা সবুজ কচি শসা থেকে অন্ন ভোগের আবশ্যিক আনাজ ফুলকপি, বাঁধাকপি, বেগুন, সাদা পটলের দামও অন্য সময়ের তুলনায় কেজি প্রতি ১০-২০ টাকা বেশি। দাম দু’-চার টাকা উপরের দিকে রয়েছে শোলার কদম ফুল বা প্রতিমার মালারও। তবে লক্ষ্মীপুজোর চাহিদা মেটাতে বাজারে কোনও জিনিসেরই জোগানের কোনও অভাব নেই।

তবে দাম নিয়ে ক্রেতা ও বিক্রেতাদের মধ্যে দ্বিমতও আছে। মঙ্গলবার যাঁরা পুজোর বাজার করেছেন, এমন অনেক ক্রেতা জানিয়েছেন, প্রতি বছরই লক্ষ্মীপুজোর সময়ে ফল ও আনাজের দাম বাড়ে। এ বারও সেই নিয়মের অন্যথা হয়নি। দমদম ও শিয়ালদহের কিছু বিক্রেতার বক্তব্য, আবহাওয়ার কারণে এ বার আনাজের ফলন কম, তাই কিছু জিনিসের দাম স্বাভাবিক ভাবেই বেড়ে গিয়েছে। ক্রেতাদের অনেকেরই আবার অভিযোগ, এক শ্রেণির বিক্রেতা পাইকারি বাজার থেকে কম দামে জিনিস কিনলেও খুচরো বাজারে ইচ্ছা করে দাম অনেকটা বাড়িয়ে বিক্রি করছেন। সেই অভিযোগ খানিকটা হলেও মেনে নিয়েছেন কোলে মার্কেটের উত্তমবাবু।

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
আরও পড়ুন
Advertisement