কলকাতা বিমানবন্দর। —ফাইল চিত্র।
তথ্যপ্রযুক্তি সংস্থা মাইক্রোসফটের সার্ভার বিপর্যয়ে শুক্রবার নজিরবিহীন হয়রানির মুখে পড়লেন কলকাতা বিমানবন্দরের প্রায় ৫০ হাজার যাত্রী। বিপত্তির ফলে সারা দিনে প্রায় ৯০টি উড়ানের পরিষেবা ব্যাহত হয়। ৭০ শতাংশেরও বেশি বিমানের সূচি কার্যত লন্ডভন্ড হয়ে যায় বলে একাধিক উড়ান সংস্থা সূত্রের খবর।
এ দিন সকাল ১০টা নাগাদ আচমকা সার্ভার বিপত্তিতে বিভিন্ন উড়ান সংস্থার চেক-ইন কাউন্টারের একের পর এক কম্পিউটার বিকল হতে শুরু করে। আচমকা সেগুলি সিস্টেম আপডেট নিতে শুরু করলে দেখা যায়, কম্পিউটারের পর্দা নীল হয়ে গিয়েছে। কোনও তথ্য বা নির্দেশ দেওয়া যাচ্ছে না। এই সমস্যার পোশাকি নাম ব্লু স্ক্রিন অব ডেথ বা বিএসওডি।আকস্মিক এই বিপত্তিতে বিমানযাত্রীদের চেক-ইন করার, মালপত্র বুক করার এবং বোর্ডিং পাস দেওয়ার ব্যবস্থা সম্পূর্ণ থমকে যায়। বিমানবন্দর কর্তৃপক্ষ, উড়ান সংস্থা এবং নিরাপত্তারক্ষীদের পারস্পরিক সমন্বয় রক্ষার কাজও জটিল হয়ে দাঁড়ায়। বিভিন্ন বিভাগকে কার্যত ম্যানুয়াল পদ্ধতিতে কাজ সামলাতে হয়।
শুধু তা-ই নয়, যাত্রীদের মধ্যে কারা চেক-ইন করলেন, সেই তথ্য টার্মিনালে থাকা উড়ানের কর্মীদের কাছে পৌঁছে দেওয়ার ক্ষেত্রেও দেখা দেয় সমস্যা। এক যাত্রী জানান, তিনি মালপত্র বুক করার পরে সেটি বিমানে পৌঁছে গেলেও বোর্ডিং পাস সময় মতো না পাওয়ায় তাঁর উড়ান ছেড়ে যায়। বিমান সংস্থার সাহায্যে তাঁকে আবার পরের উড়ানে টিকিট কাটতে হয়। যাত্রীরা নিজেরাও মোবাইলে বোর্ডিং পাস ডাউনলোড করতে পারেননি।
এ দিন হায়দরাবাদ থেকে কলকাতাগামী উড়ানের এক যাত্রী তাঁর বোর্ডিং পাস এক্স হ্যান্ডলে পোস্ট করে বলেন, ‘‘জীবনে প্রথম হাতে লেখা বোর্ডিং পাস পেলাম।’’ কলকাতা থেকে ইন্ডিগোর অন্তর্দেশীয় উড়ানের সংখ্যা বেশি হওয়ায় বহু যাত্রীকে এ দিন সমস্যায় পড়তে হয়।
বিমানবন্দর সূত্রের খবর, প্রযুক্তিগত সমস্যার কারণে এ দিন সকাল ১০টা থেকে বিকেল ৪টের মধ্যে কলকাতা থেকে দেশের বিভিন্ন গন্তব্যে ছেড়ে যাওয়ার ১৪টি উড়ান বাতিল করতে হয়। অন্যান্য শহর থেকে কলকাতা অভিমুখে আসা ১১টি উড়ান বাতিল হয়।
এ ছাড়াও, অন্য শহর থেকে আসা ২৯টি উড়ান তাদের নির্ধারিত সময়ের চেয়ে দেরিতে এসে পৌঁছয়। কলকাতা থেকে ছেড়ে যাওয়া ৩৮টি উড়ান বিলম্বিত হয়। তবে আন্তর্জাতিক উড়ান বাতিলের খবর মেলেনি। যদিও তাদের বহু উড়ান নির্ধারিত সময়ের চেয়ে কয়েক ঘণ্টা দেরিতে ছাড়ে।