—ফাইল চিত্র
হাট ব্যবসায়ীদের দাবি শেষ পর্যন্ত মেনে নিয়ে সোম এবং মঙ্গলবার হাওড়ার মঙ্গলাহাট বসতে দিতে রাজি হল প্রশাসন। আগামী ৪ জানুয়ারি থেকে আগের নিয়মে, অর্থাৎ সোম এবং মঙ্গলবার পূর্ণাঙ্গ হাট বসবে। রবিবার শরৎ সদনে হাওড়া হাট ব্যবসায়ী এবং প্রশাসনিক আধিকারিকদের একটি বৈঠকে এই সিদ্ধান্ত হয়েছে। যদিও অতিমারি পরিস্থিতিতে এখনই সপ্তাহে দু’দিন কী করে এই অনুমতি দেওয়া হল, সেই প্রশ্ন উঠছে।
যদিও হাট ব্যবসায়ীদের দাবি, রবিবার থেকেই যাতে হাট বসতে পারে, সেই চেষ্টা চলছে। প্রশাসনের বক্তব্য, কোভিড-বিধি মেনে দু’দিন হাট বসার অনুমতি দেওয়া হলেও হাওড়া আদালত, হাওড়া জেলা হাসপাতাল ও সরকারি অফিস চত্বরে হাট বসতে দেওয়া হবে না।
গত এপ্রিল থেকে বন্ধ ছিল মঙ্গলাহাট। হাট ব্যবসায়ীদের লাগাতার আন্দোলনের জেরে মাসখানেক আগে শনিবার বিকেল থেকে রবিবার পর্যন্ত হাট বসা শুরু হয়। সোম ও মঙ্গলবার হাট বসতে না-দেওয়া নিয়ে জেলা প্রশাসন ও স্বাস্থ্য দফতরের যুক্তি ছিল, ওই দু’দিন পূর্ণাঙ্গ হাট বসলে কোভিড আক্রান্তের সংখ্যা আরও বাড়তে পারে।
তবে হাট ব্যবসায়ীদের পাল্টা যুক্তি ছিল, বর্তমানে হাওড়ায় কোভিড পরিস্থিতি অনেকটাই নিয়ন্ত্রণে। পাশাপাশি রাজ্যের অন্যান্য জেলায় সব হাট যখন খুলে দেওয়া হয়েছে, তখন এশিয়ার অন্যতম বৃহৎ এই মঙ্গলাহাটকে কেন আগের মতো সোম-মঙ্গলবার বসতে দেওয়া হবে না, সেই প্রশ্নও তোলেন তাঁরা। গত কয়েক দিন ধরে এই দাবিতে মিছিলও করেন হাট ব্যবসায়ীরা। এর পরেই এ দিন সমবায়মন্ত্রী তথা মধ্য হাওড়ার বিধায়ক অরূপ রায়ের নেতৃত্বে বৈঠক বসে। ওই বৈঠকে উপস্থিত ছিলেন হাওড়া পুরসভার কমিশনার, মহকুমা শাসক-সহ হাওড়া সিটি পুলিশের পদস্থ আধিকারিকেরা।
যদিও অতিমারি পরিস্থিতিতে এমন সিদ্ধান্ত নিয়ে ইতিমধ্যেই প্রশ্ন উঠতে শুরু করেছে। এখনও হাওড়া জেলায় প্রতিদিন ৭০-৮০ জন করে আক্রান্ত হচ্ছেন। কোভিডে দৈনিক মৃত্যুর হার গড়ে ৬-৭ জন। এ হেন পরিস্থিতিতে লক্ষাধিক মানুষের জমায়েত হতে পারে জেনেও সপ্তাহে দু’দিন করে মঙ্গলাহাট বসার অনুমতি কী করে দিল প্রশাসন, সেই প্রশ্ন উঠছে। এ নিয়ে সমবায়মন্ত্রী বলেন, ‘‘হাট ব্যবসায়ীদের এটা দীর্ঘদিনের দাবি ছিল। তা ছাড়া সোম-মঙ্গলবার হাট বসবে এটাই প্রথা। তাই কোভিড-বিধি মেনেই সকলকে হাটে আসতে বলা হয়েছে।’’
হাওড়ার জেলাশাসক মুক্তা আর্য বলেন, ‘‘সোম-মঙ্গলবার হাট বসার অনুমতি দেওয়া হলেও আগের মতো হাওড়া জেলা হাসপাতাল, আদালত ও সরকারি অফিস চত্বরে হাট বসতে দেওয়া হবে না। বসলে পুলিশ ব্যবস্থা নেবে।’’