বেহালায় গ্রিলের ভিতর দিয়ে ছুরি মেরে খুন যুবককে

ভিতর থেকে তালা দেওয়া গ্রিলে। ঘরে ঘুটঘুটে অন্ধকার। যদিও সবাই জানে ঘরের ভিতরে মানুষ রয়েছে, কিন্তু বারবার ডাকা সত্ত্বেও সাড়া মিলছে না। বাইরে থেকে কয়েক জন তখন গ্রিল ধরে ঝাঁকাচ্ছেন।

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা

শেষ আপডেট: ০৬ নভেম্বর ২০১৫ ০০:৪৬
Share:

ভিতর থেকে তালা দেওয়া গ্রিলে। ঘরে ঘুটঘুটে অন্ধকার। যদিও সবাই জানে ঘরের ভিতরে মানুষ রয়েছে, কিন্তু বারবার ডাকা সত্ত্বেও সাড়া মিলছে না। বাইরে থেকে কয়েক জন তখন গ্রিল ধরে ঝাঁকাচ্ছেন। হঠাৎই ঘরের পর্দা সরিয়ে বারান্দায় বেরিয়ে এল এক যুবক। কেউ কিছু বুঝে ওঠার আগেই সে গ্রিলের ফাঁক দিয়ে হাত গলিয়ে আচমকা ছুরি বসিয়ে দিল বাইরে দাঁড়ানো অন্য এক যুবকের পেটে।

Advertisement

পুলিশ জানিয়েছে বাজি ফাটানো নিয়ে বচসার জেরেই এই ঘটনাটি ঘটেছে বেহালা থানার মজলিশ আরা রোডে। অভিযুক্তের নাম বাপি মণ্ডল। বৃহস্পতিবার সকাল সাড়ে সাতটা নাগাদ ন্যাশনাল মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে মারা যান চন্দন দে (৩৯) নামে ছুরিকাহত ওই যুবক।

পুলিশ জানায়, বুধবার রাত সাড়ে ন’টা নাগাদ এলাকার কয়েক জন রাস্তার উপরে বাজি ফাটাচ্ছিলেন। তখনই একটি তুবড়ি ফেটে আগুনের ফুলকি গিয়ে পড়ে বাপি মণ্ডলের বাড়ির উঠোনে। অভিযোগ, সঙ্গে সঙ্গেই বাড়ি থেকে বেরিয়ে বাপি গালিগালাজ করতে শুরু করে। বাপিকে থামাতে এগিয়ে আসেন প্রহ্লাদ হালদার নামে এক স্থানীয় বাসিন্দা। অভিযোগ, তখনই ঘর থেকে বঁটি নিয়ে এসে প্রহ্লাদের হাতে কোপ মারে বাপি। এর পরেই বাপি নিজের ঘরে ঢুকে বারান্দার গ্রিলে ভিতর থেকে তালা দিয়ে দেয়। নিভিয়ে দেয় ঘরের সমস্ত আলো।

Advertisement

পুলিশ জানিয়েছে, প্রহ্লাদবাবুকে কয়েক জন প্রতিবেশী হাসপাতালে নিয়ে যান। এরই মধ্যে এলাকার আরও কয়েক জন বাপি মণ্ডলের বাড়ির সামনে জমায়েত হন। তাঁদের মধ্যেই ছিলেন চন্দন দে-ও। স্থানীয়দের অভিযোগ, চন্দনবাবু যখন বাপির নাম ধরে ডাকছিলেন তখন হঠাৎ বেরিয়ে এসে তাঁর পেটে ছুরি বসিয়ে দেয় বাপি। ক্ষতস্থান থেকে প্রচুর রক্তপাত হতে শুরু করে। স্থানীয়েরাই চন্দনবাবুকে নিয়ে যান এম আর বাঙুর হাসপাতালে। রাতে তাঁকে ন্যাশনাল মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে স্থানান্তরিত করা হয়। সেখানেই বৃহস্পতিবার সকালে মৃত্যু হয় চন্দনবাবুর। তবে প্রহ্লাদবাবুকে প্রাথমিক চিকিৎসার পরে ছেড়ে দেওয়া হয়। তাঁর হাতে অবশ্য আঠারোটি সেলাই পড়েছে।

স্থানীয় সূত্রে খবর, চন্দনবাবু আহত হওয়ার পরেই এলাকার লোকজন বাপি মণ্ডলের বাড়িতে বাইরে থেকে তালা দিয়ে থানায় খবর দেন। কিছুক্ষণেই পৌঁছয় বেহালা থানার পুলিশ। পুলিশ জানিয়েছে, এলাকায় কারও সঙ্গে সদ্ভাব ছিল না বাপিদের পরিবারের। পুলিশ ও স্থানীয় সূত্রে খবর, বাপির দু’টি বিয়ে। মা, ভাই এবং দুই স্ত্রীকে নিয়েই থাকত বাপি। ইদানীং মুদি দোকান চালালেও এক সময়ে সে নানা ছোটখাটো অপরাধের সঙ্গে যুক্ত ছিল বলেই অভিযোগ। রাতেই পুলিশ বাপি এবং তার ভাই বাবু মণ্ডলকে গ্রেফতার করে। বাপির বাড়ি থেকে বঁটি এবং ছুরিটিও আটক করা হয়। পুলিশ জানিয়েছে, বৃহস্পতিবারই আলিপুর আদালতে তোলা হলে বাপির জেল হেফাজতের নির্দেশ হয়।

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
আরও পড়ুন
Advertisement