ক্যানসার হয়নি, অথচ সেই চিকিৎসা করায় মৃত্যু হয়েছে রোগীর, এমন অভিযোগ উঠল বাইপাসের ধারের এক বেসরকারি হাসপাতালের বিরুদ্ধে।
গত জুলাইয়ে আচমকা পড়ে যান নিউ টাউনের বাসিন্দা অশোক দিওয়ান (৬১)। রবিবার বৃদ্ধের ছেলে অশ্বিনী দিওয়ান জানান, ঘটনার দু’দিন পরে চিকিৎসকের পরামর্শে ওই হাসপাতালে তাঁর বাবার এমআরআই হয়। অশ্বিনীর কথায়, ‘‘রিপোর্ট দেখে হাসপাতালের স্নায়ু শল্য চিকিৎসক জানান, মস্তিষ্ক ক্যানসারের শেষ পর্যায়ে রয়েছেন বাবা। অবিলম্বে ‘স্টিরিওট্যাকটিক বায়োপসি’ করাতে হবে।’’ সে দিনই হাসপাতালে ভর্তি হন বৃদ্ধ। অশ্বিনীর অভিযোগ, ‘‘তিন দিন পরেও বায়োপসি না হওয়ার কারণ জিজ্ঞাসা করলে চিকিৎসক জানান, তা করে লাভ নেই।’’ বরং কেমোথেরাপি এবং রেডিয়োথেরাপি শুরু হয়।
পরিবার সূত্রের খবর, এক মাস থেরাপি চলায় অশোকবাবুর অবস্থা খারাপ হতে থাকে। ফুসফুসে সংক্রমণ দেখা দিলে ওই হাসপাতালেই ২৬ অগস্ট তাঁকে ফের ভর্তি করা হয়। চার মাস আইসিইউ-এ ভেন্টিলেশনে ছিলেন। অশ্বিনী জানান, এর ফলে অশোকবাবুর শরীরে সংক্রমণ ছড়াতে থাকে। কিডনিও বিকল হয়। পরিজনদের দাবি, গত অক্টোবরে ফের এমআরআই হলে ভুল চিকিৎসার বিষয়টি ধরা পড়ে। অশ্বিনীর কথায়, ‘‘এর পরে কর্তৃপক্ষ জানান, চিকিৎসার জন্য আর টাকা দিতে হবে না। বাবা যত দিন বাঁচবেন, চিকিৎসার খরচ হাসপাতাল বহন করবে।’’ এতে পরিজনেদের সন্দেহ হয়। অশ্বিনীর দাবি, ‘‘শহর এবং দেশ-বিদেশের কয়েক জন চিকিৎসককে দ্বিতীয় এমআরআই রিপোর্ট দেখানো হয়। তাঁদের প্রশ্ন, ‘বায়োপসি ছাড়া কেন ক্যানসারের চিকিৎসা হল’?’’
গত ২৬ ডিসেম্বর চেন্নাইয়ের এক বেসরকারি হাসপাতালে মৃত্যু হয় অশোকবাবুর। মৃত্যুর জন্য বাইপাসের ওই হাসপাতালের বিরুদ্ধে ভুল চিকিৎসার অভিযোগ তুলে স্বাস্থ্য কমিশন, রাজ্য মেডিক্যাল কাউন্সিলে গিয়েছে পরিবার। অশ্বিনীর কথায়, ‘‘ক্যানসারের নামে হাসপাতাল ৩০ লক্ষ টাকা নিয়েছে। ভুল চিকিৎসা না হলে আজ বাবা বেঁচে থাকতেন।’’
অ্যাপোলো গ্লেনেগল্স হাসপাতালের তরফে বিবৃতিতে বলা হয়েছে, ‘‘চিকিৎসা পদ্ধতি মেনেই রোগীর চিকিৎসা হয়েছে। তিনি যে মস্তিষ্ক ক্যানসারে আক্রান্ত, তা পরীক্ষায় প্রমাণিত। বিষয়টি স্বাস্থ্য কমিশনের বিচারাধীন, তাই বেশি বলা যাবে না।’’