দুর্ভোগ অনিবার্য বুঝে ক্ষমা চাইলেন মমতা

একে প্রায় বিরামহীন বৃষ্টি, জল জমে সড়ক ও ট্রেন চলাচলে কিছু সমস্যা, তার উপরে মিটিং-মিছিলের মতো রাজনৈতিক কর্মসূচি। সোমবার, কলকাতায় সপ্তাহের প্রথম দিনটাই প্রায় শুরু হল সাধারণের ভোগান্তি দিয়ে।

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা

শেষ আপডেট: ২১ জুলাই ২০১৫ ০৩:৩৪
Share:

চলছে মঞ্চ তৈরি। গাড়ির গতি শ্লথ। সোমবার সন্ধ্যায়। ছবি: সুদীপ্ত ভৌমিক।

প্রথম দিনটাই বোধহয় বলে দিচ্ছে, গোটা সপ্তাহটা কেমন যাবে!

Advertisement

সোমবারেই শুরু

Advertisement

একে প্রায় বিরামহীন বৃষ্টি, জল জমে সড়ক ও ট্রেন চলাচলে কিছু সমস্যা, তার উপরে মিটিং-মিছিলের মতো রাজনৈতিক কর্মসূচি। সোমবার, কলকাতায় সপ্তাহের প্রথম দিনটাই প্রায় শুরু হল সাধারণের ভোগান্তি দিয়ে।

দুপুর ২টোয় দুর্নীতির বিরুদ্ধে বামফ্রন্টের মিছিল। কলেজ স্কোয়্যার থেকে শুরু হয়ে তা গেল ধর্মতলার রানি রাসমণি অ্যাভিনিউয়ে। সপ্তাহের প্রথম দিনে এমনিই রাজপথে যানবাহনের চাপ থাকে তুলনায় বেশি। মিছিলের ফলে তা আরও ব্যাপক আকার নিল।

পুলিশ জানায়, শিয়ালদহ, হাওড়া থেকে আসা মিছিল ও গাড়ির চাপে এ দিন ২টো থেকে ঘণ্টা দুয়েক কার্যত অবরুদ্ধ হয়ে পড়ে ধর্মতলা থেকে এক্সাইড মোড়। বেলা বাড়তে যান চলাচল থমকে যায় চিত্তরঞ্জন অ্যাভিনিউ, জওহরলাল নেহরু রোড, এস এন ব্যানার্জি রোড-সহ উত্তর, দক্ষিণ, মধ্য কলকাতার বিভিন্ন রাস্তায়।


সবিস্তারে দেখতে ক্লিক করুন

লালবাজারের দাবি, বেলা ১২টা পর্যন্ত শহরে তেমন যানজট হয়নি। তার পরে শিয়ালদহ ও উত্তর কলকাতা থেকে মিছিল আসে কলেজ স্কোয়্যারগামী রাস্তায়। কয়েক ঘণ্টার জন্য কার্যত বিচ্ছিন্ন হয়ে পড়ে কলকাতার প্রাণকেন্দ্র।

তার উপরে মঙ্গলবার, ২১ জুলাই ভিক্টোরিয়া হাউসের সামনে রাস্তার বড় অংশ জুড়ে তৃণমূলের শহিদ দিবসের সভার মঞ্চ বাঁধা হয়েছে। তার জন্য সকাল থেকেই ধর্মতলা, চিত্তরঞ্জন অ্যাভিনিউ, বেন্টিঙ্ক স্ট্রিটে উত্তরমুখী যানবাহন গতি কিছুটা শ্লথ ছিল। জেলা থেকে সমাবেশে যোগ দিতে লোক আসা শুরু হওয়ায় ভিড় বেড়েছে পথে।

মানুষের ভোগান্তিতে সঙ্গত দিচ্ছে আবহাওয়াও। রবিবার রাতে টানা বৃষ্টিতে কলকাতার কিছু তল্লাটে, বিশেষত নিচু এলাকায় জল জমে গিয়েছে। সোমবার শিয়ালদহ দক্ষিণ শাখায় ব্যাহত হয় ট্রেন চলাচলও। অনেক জায়গাতেই প্যাচপেচে কাদা।

আজ বাড়বে ভোগান্তি

পুলিশের হিসেবে বলছে, আজ, মঙ্গলবার সকাল ৮টা থেকেই বিভিন্ন দিক থেকে মিছিল আসবে ধর্মতলার মঞ্চে। প্রায় ৮ হাজার ছোট-বড় গাড়ি ঢুকবে। ফলে বেলা বাড়লে চিত্তরঞ্জন অ্যাভিনিউ, বিধান সরণি, কলেজ স্ট্রিট, বেন্টিঙ্ক স্ট্রিট, জওহরলাল নেহরু রোড, এস এন ব্যানার্জি রোড, লেনিন সরণি, ফ্রি স্কুল স্ট্রিট-সহ দক্ষিণ, মধ্য এবং উত্তর কলকাতার বিভিন্ন রাস্তায় যানজটের আশঙ্কা। অটো-বাস ইউনিয়নেও দাপট বেশি শাসক দলের। তাই কত বাস বা অটো চলবে, তা নিয়েও সন্দেহে পুলিশ। লালবাজারের খবর, ১৫ হাজার পুলিশকর্মী রাস্তায় নামবেন। নজরদারিতে থাকবে ড্রোনও।

ভরসা মেট্রো

মঙ্গলবার যানজটে ফাঁসতে না চাইলে অগত্যা পাতালপথেই আস্থা রাখা যায়। কিন্তু গত এক সপ্তাহে বারবার যান্ত্রিক ত্রুটিতে বিগড়ে গিয়েছে মেট্রো চলাচল। উপরের রাস্তার ভিড় নীচে নেমে এলে তা সামাল দিতে কর্তৃপক্ষ বিশেষ কোনও ব্যবস্থা নিচ্ছেন না বলেই মেট্রো সূত্রের খবর।

ক্ষমাপ্রার্থী মমতা

আজ, ২১ জুলাই তাঁর সভার জন্য ভিড়ের চাপে কলকাতার পথের অবস্থা যে খারাপ হবে, তা আঁচ করে আগাম ক্ষমা চেয়ে নিলেন তৃণমূল নেত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। সোমবার ধর্মতলায় সভার শেষ মুহূর্তের প্রস্তুতি দেখতে এসে মমতা বলেন, ‘‘অনেক মানুষ রাস্তায় থাকবেন। অনেক মানুষ আসবেন। তাই যানজট হবে। মানুষের অসুবিধা হবে। তার জন্য আগেই আমি হাতজোড় করে ক্ষমা চেয়ে নিচ্ছি।’’ মানুষকে অসুবিধায় ফেলার ইচ্ছা না থাকলেও সভায় আসা মানুষকে শান্তিপূর্ণ থাকার আবেদন জানিয়েছেন তিনি। পুলিশ-প্রশাসনও জনস্রোত সামাল দিতে যথাসাধ্য চেষ্টা করবে বলে মমতা জানান। রাতে পুলিশ কমিশনার সুরজিৎ কর পুরকায়স্থকে মুখ্যমন্ত্রীর নির্দেশ, নিরাপত্তা রক্ষা করতে গিয়ে পুলিশ যেন বেশি দৌড়ঝাঁপ, ধাক্কাধাক্কি না করে। পিছনে আসা মিছিলগুলি যাতে সামনের দিকে ঠেলাঠেলি করে না আসে, সে ব্যাপারেও পুলিশকে সতর্ক থাকতে বলেছেন মমতা। তাঁর নির্দেশ, মঞ্চের সামনে এবং দু’পাশে যাতে ভিড়ের চাপ না বাড়ে, তা নিশ্চিত করতে হবে। মঞ্চের কাছাকাছি যথেষ্ট সংখ্যক নজরদার ক্যামেরাও রাখতে বলেছেন তিনি।

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
আরও পড়ুন
Advertisement