ভবানীপুরে লড়াই তিন আইনজীবীর। গ্রাফিক— শৌভিক দেবনাথ।
আদালতের চৌহদ্দিতে এক পক্ষের আইনজীবীর সঙ্গে তর্কে মাতবেন বিপক্ষের আইনজীবী, সেটাই স্বাভাবিক। কিন্তু ভোটের ময়দানে এমন দেখেছেন কি? এ বার ভবানীপুরের উপ-ভোটের ময়দানে এমনই ছবি উঠে আসতে চলেছে। কারণ, তৃণমূল, সিপিএম এবং বিজেপি, তিন দলের প্রার্থীই যে আইনজীবী!
শুক্রবার আলিপুর সার্ভে বিল্ডিংয়ে মনোনয়ন জমা দিয়েছেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। সেখানে দেখা যাচ্ছে, ১৯৮২ সালে কলকাতা বিশ্ববিদ্যালয়ের অন্তর্গত যোগেশচন্দ্র চৌধুরী কলেজ থেকে আইনের ডিগ্রি লাভ করেন মমতা। বিভিন্ন সময় এ কথা নিজেও জানিয়েছেন। সম্প্রতি নন্দীগ্রাম ভোট গণনা মামলা কোন এজলাসে যাবে, তা নিয়ে তৈরি হওয়া বিতর্কের সময় মমতা নিজে জানিয়েছিলেন তিনি হাই কোর্ট বার-এর স্থায়ী সদস্য। এক বার দলীয় কর্মীদের হয়ে কালো গাউন চাপিয়ে ব্যাঙ্কশাল কোর্টে সওয়াল করতেও দেখা গিয়েছিল তাঁকে। রাজনীতির আঙিনায় আসার পর যদিও নিয়মিত সওয়াল করা হয়ে ওঠেনি।
মমতার প্রতিদ্বন্দ্বী বিজেপি প্রার্থী প্রিয়ঙ্কা টিবরীওয়ালও পেশাদার আইনজীবী। তৃণমূলের বিরুদ্ধে হাই কোর্টে যে যে মামলা হয়েছে, তার বেশির ভাগ ক্ষেত্রেই সওয়াল করতে দেখা গিয়েছে প্রিয়ঙ্কাকে। বিজেপি যুব মোর্চা নেত্রী প্রিয়ঙ্কাকে ভোট পরবর্তী হিংসা মামলার অন্যতম আইনজীবী হিসেবে কলকাতা হাই কোর্টে দেখা গিয়েছে। বিজেপি-র আইনজীবী সেলেরও পদে রয়েছেন তিনি। গত বিধানসভা ভোটে এন্টালি কেন্দ্র থেকে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করেছিলেন প্রিয়ঙ্কা। কিন্তু তৃণমূলের কাছে হেরে যান।
এ দিকে ভবানীপুরে কংগ্রেস প্রার্থী দেবে না জানার পর সেখানে প্রার্থী ঘোষণা করে বাম শিবির। দেখা যাচ্ছে, ভবানীপুরের সিপিএম প্রার্থী শ্রীজীব বিশ্বাসও পেশায় একজন আইনজীবী।
এর ফলে ভবানীপুর কেন্দ্রের ত্রিমুখী লড়াইয়ে এ বার মুখোমুখি তিন আইনজীবী। এজলাসে আইনজীবীদের মধ্যে আইনি বিষয় নিয়ে তর্কাতর্কি কি ভোটের ময়দানেও উত্তাপ ছড়াবে? রাজনৈতিক পর্যবেক্ষকরা বলছেন, আইনজীবীরা যেমন সওয়ালের জোরে বিচারকের মন জয়ের চেষ্টা করেন, ভবানীপুরের তিন প্রতিদ্বন্দ্বীও রাজনৈতিক সওয়ালের মাধ্যমে জনগণেশের মন জয়ে ব্যস্ত। ভবানীপুরের বিচারক, নির্বাচকমণ্ডলীর রায় কোন কালো গাউনধারীর মুখে হাসি ফোটায়, সেটাই এখন দেখার।