এ মরসুমে প্রথম

ম্যালেরিয়ায় মৃত্যু শহরে

ডেঙ্গির পরে এ বার ম্যালেরিয়া। খাস কলকাতার কালীঘাট এলাকায় এ বার ম্যালেরিয়ায় আক্রান্ত হয়ে মৃত্যু হল এক কিশোরের। মঙ্গলবার রাজ্যের স্বাস্থ্য দফতর সূত্রে এই খবর মিলেছে।

Advertisement

অনুপ চট্টোপাধ্যায়

শেষ আপডেট: ১৯ অক্টোবর ২০১৬ ০০:৪৭
Share:

ডেঙ্গির পরে এ বার ম্যালেরিয়া।

Advertisement

খাস কলকাতার কালীঘাট এলাকায় এ বার ম্যালেরিয়ায় আক্রান্ত হয়ে মৃত্যু হল এক কিশোরের। মঙ্গলবার রাজ্যের স্বাস্থ্য দফতর সূত্রে এই খবর মিলেছে। জানা গিয়েছে, মৃত কিশোরের নাম সন্দীপ বারিক। তাঁর বাড়ি হরিদেবপুরে হলেও মৃত্যুর আগে ওই কিশোর কালীঘাটে কেওড়াতলা শ্মশানের কাছে চন্দ্রমোহন লেনে মামারবাড়িতে ছিল। সেখান থেকেই তাঁকে স্থানীয় এক নার্সিংহোমে ভর্তি করা হয়। সোমবার সেখানেই মারা যায় সন্দীপ।

ডেথ সার্টিফিকেট অনুসারে ওই কিশোর ম্যালেরিয়ায় আক্রান্ত হয়েই মারা গিয়েছে বলে জানিয়েছেন স্বাস্থ্য দফতরের একাধিক অফিসার। পুরসভাও ওই ঘটনাকে দুর্ভাগ্যজনক আখ্যা দিয়েছে। মেয়র পারিষদ (স্বাস্থ্য) অতীন ঘোষ বলেন, ‘‘ম্যালেরিয়ায় (ফ্যালসিফেরাম) আক্রান্ত হয়ে মৃত্যু সাধারণত হয় না। তবে ওই কিশোর এই রোগেই মারা গিয়েছে বলে খবর পেয়েছি। এই রোগ প্রতিরোধে ওষুধ রয়েছে। পুরসভার ক্লিনিক থেকে তা দেওয়াও হয়। ছেলেটিকে তা খাওয়ানো হয়েছিল কি না, তা দেখছেন পুরসভার স্বাস্থ্য আধিকারিকেরা।’’

Advertisement

তবে মৃত কিশোরের মামারবাড়ি থেকে জানানো হয়েছে, দিন কয়েক আগে হরিদেবপুরে নিজের বাড়িতেই জ্বরে আক্রান্ত হয় সন্দীপ। সেই অবস্থাতেই সে চন্দ্রমোহন লেনের বাড়িতে এসেছিল বলে দাবি মৃতের পরিজনেদের। অবস্থার অবনতি হতেই তাঁকে স্থানীয় নার্সিংহোমে ভর্তি করা হয়।

এ দিকে, দক্ষিণ কলকাতার একাধিক ওয়ার্ডে ম্যালেরিয়া ও ডেঙ্গি রোগের প্রকোপ নিয়ে চিন্তায় পুর-প্রতিনিধিরাও। বিশেষত সংযুক্ত কলকাতার বেশ কয়েকটি ওয়ার্ডে ডেঙ্গি-আক্রান্তের সংখ্যা ক্রমশই বাড়ছে বলে জানান তাঁরা। এক বরো চেয়ারম্যানের কথায়, ‘‘ভেবেছিলাম ঠান্ডা পড়ছে, এ বার মশাবাহিত রোগের প্রকোপ কমবে। কিন্তু হচ্ছে উল্টোটাই। প্রতিদিনই শুনছি, জ্বরে আক্রান্তের সংখ্যা বাড়ছে।’’ গড়িয়াহাট, বালিগঞ্জ-সহ বাইপাসের ধারে ১০৬, ১০৭, ১০৮, ১০৯, ১১৫, ১১৬ এবং বন্দর এলাকার বেশ কয়েকটি ওয়ার্ডে জ্বর হলেই ডেঙ্গি-ডেঙ্গি রব উঠছে। ওই সব এলাকার একাধিক বেসরকারি হাসপাতালে উপচে পড়ছে রোগী। আর রক্ত পরীক্ষায় ডেঙ্গির জীবাণু মিললেই আতঙ্ক ছড়াচ্ছে।

পুজোর পর থেকে বৃষ্টি কমেছে। একটু একটু করে শীতও পড়ছে বলে ইতিমধ্যেই জানিয়েছে আবহাওয়া দফতর। তাই ডেঙ্গি-ম্যালেরিয়ার উপদ্রব কমবে বলেই মনে করেছিল স্বাস্থ্য দফতর। কিন্তু শহর লাগোয়া পুরসভা-সহ কলকাতার একাধিক এলাকায় ডেঙ্গি-ম্যালেরিয়ায় আক্রান্তের সংখ্যা বাড়ছে দেখে কপালে ভাঁজ পড়েছে পুরকর্তাদেরও। দক্ষিণ কলকাতা ও সংযুক্ত কলকাতায় মশাবাহিত ওই দুই রোগের বাড়বাড়ন্ত নিয়ে অস্বস্তিতে জনা বারো কাউন্সিলর-সহ বরো চেয়ারম্যানেরা। এ বিষয়ে প্রশ্ন করা হলে অতীনবাবু জানান, মরসুম বদলের কারণে এ সময়ে অনেকেরই জ্বর হচ্ছে। কিছু ক্ষেত্রে ধরা পড়ছে ডেঙ্গি, ম্যালেরিয়াও। তাই আতঙ্ক রয়েই গিয়েছে। তবে মেয়র পারিষদের দাবি, পুরসভার টিম নিয়মিত মশানিধন যজ্ঞ চালিয়ে যাচ্ছে। তিনি জানান, ২০১২ সালের পর থেকে শহরে ম্যালেরিয়ায় কোনও মৃত্যু হয়নি। কারণ ওই রোগে আক্রান্তের সঠিক চিকিৎসা হলে ভয় থাকার কথা নয়।

সন্দীপের ক্ষেত্রে চিকিৎসা কতটা হয়েছিল, তা নিয়ে সন্দেহ রয়েছে স্থানীয় পুর-প্রতিনিধি তথা কলকাতা পুরসভার চেয়ারপার্সন মালা রায়েরও। শ্মশানেও হাজির ছিলেন তিনি। মঙ্গলবার মালাদেবী জানান, যথাযথ চিকিৎসা হয়েছিল কি না, তা নিয়ে সন্দেহ থেকেই যাচ্ছে।

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
আরও পড়ুন
Advertisement